গজেন্দ্র, চাষার লাশের সঙ্গে সেলফি
এতো দিন আমরা দেখছিলাম চাষা গলায় দড়ি দিচ্ছে । আমাদের অন্নদাতারা দানা বিষ খেয়ে মরছে । সারদায় টাকা রাখা দুর্ভাগা ট্রেন লাইনে ঝাঁপ দিচ্ছে । বন্ধ কারখানার মজুর আত্মহত্যা করছে । আমরা দেখছিলাম । দেখছিলাম নন্দিগ্রামে কৃষক গুলি বিদ্ধ তবু ছেদ পরতো না আমাদের উল্লাসে আমাদের মল- ডিস্কো যাপনে । দেখছিলাম সুজেট মারা গেল, তবু ফুল গুজে দিতাম প্রেমিকার খোঁপায় । দেখছিলাম রোদে বৃষ্টি তে এসএসসি চাকরী প্রার্থীরা পুড়ছেন, তবু বেহালা বাজানো আমাদের থামছিল না ।
এই সময় সেলফি এলো, শিশুদিবসে ডাই করা বাসুন ধোয়া বাচ্চাকে পাশে নিয়ে ছবি তুললাম । ফুটপাথে বসা ভিখারিকে জড়িয়ে ধরে চুমু খাচ্ছি, এমন ছবি জ্বলজ্বল করতো আমার মুখবই দেওয়ালে । মরা বাপের পাশে কাঁদতে কাঁদতে, হাগতে হাগতে, চুমু খেতে খেতে, মৈথুনে সর্বদা আমার সাথে ছিল সেলফি ।
ব্যাপক আম হয়েছিলো এবার, শিলাবৃষ্টি তে নষ্ট হয়ে যাওয়ার পর, জলপাইগুড়ি তে আলুচাষী দের লক্ষ টাকার ক্ষতি হবার পর, ফেবুতে স্টেটাস দিয়েছিলাম আয় বৃষ্টি ঝেঁপে, নেপালে ভূমিকম্পে ৬০০০ মানুষ মারা গেলেও আমাদের যায় আসতো না, কারন জীবনের প্রথম ভূমিকম্প দুলে দুলে এনজয় করেছি । অয়া আমি দুলছি, আমার খাট দুলছে, অয়া...
কিন্তু গজেন্দ্র সেলফি হয়ে চলে গেল । একটা মানুষ একটা জনসভার সামনে নিজের গলায় ফাঁস লাগাল । জনতা হাততালি দিলো, সিটি বাজালো, একটা মানুষ কে মরে যেতে দেখে,খ্যাচা খ্যাচ ছবি তুলল । গজেন্দ্র মরিয়া প্রমান করিল, সেলফির মহিমা । এরপর দুপুর রাস্তায় একটা মেয়েকে নগ্ন করা হবে, জনতা উল্লাস করবে, সেই অবস্থায় সেলফি তুলবে তার সাথে । তার দুখানা স্তন কেটে নেওয়া হবে, সেলফি, তার যোনীতে পেরেক আর রড ঢুকিয়ে ঘুঁটে দেওয়া হবে, সক্কলে ভিডিও করবে, তারপর ইউটিউবে ছেড়ে দেওয়া হবে ।
এতোদিন দেখছিলাম, এখন উপভোগ করবো, মানুষের মৃত্যু, এতো দিন চুপ ছিলাম, এবার দেব হাতে তালি ।