গৌরিক দাম্পত্যের নৈরাজ্যে মগের মুল্লুক এই বঙ্গে মৃত্যুউত্সবের সুনামি,বাজির আড়ালে বোমা! পিংলায় বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ, মৃত ১২
Bengal Bleeds as Political Honeymoon ends in complete anarchy!
লক্ষ্মীর পাঁচালি ঘরে ঘরে
হিন্দুত্বের উত্সবে বলিপ্রদত্ত বাঙালি ঘরে ঘরে
রাজকার্য রাজসূয় আয়োজনে বহিছে রক্তধারা
নৈরাজ্যের অন্ধ নিশায় নিমজ্জিত বঙ্গে
দেবি যাবে কবে বিসর্জনে?
কবে হবে পরিবর্তন আবার?
TMC activist's 'bomb unit' blast kills 12 in Pingla
পলাশ বিশ্বাস
প্রথম পাতা
লক্ষ্মীর পাঁচালি ঘরে ঘরে
হিন্দুত্বের উত্সবে বলিপ্রদত্ত বাঙালি ঘরে ঘরে
রাজকার্য রাজসূয় আয়োজনে বহিছে রক্তধারা
নৈরাজ্যের অন্ধ নিশায় নিমজ্জিত বঙ্গে
দেবি যাবে কবে বিসর্জনে?
কবে হবে পরিবর্তন আবার?
গৌরিক দাম্পত্যের নৈরাজ্যে মগের মুল্লুক এই বঙ্গে মৃত্যুউত্সবের সুনামি,বাজির আড়ালে বোমা! শিল্পের খরা কাটাতে আরও উদার হল রাজ্য সরকার। ছোট থেকে বড় ব্যবসা, সব ক্ষেত্রেই বিনিয়োগকারীদের উত্সাহ দিতে সরলীকরণ করা হল অনুমোদন পদ্ধতির। বৃহস্পতিবার শিল্প সংক্রান্ত সাব কমিটির বৈঠকে এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কল্কি অবতার ধর্মোন্মাদি জাতিয়তাবাদে বাঙালি ইতিহাস ভূগোলকে ধ্বংস করার পর এই রাজ্যের শল্পাযনে অতিশয আগ্রহী।জেহাদ পর্বের অবসানে সহঅবশ্থন ও রাজনৈতিক দম্পাত্যের আবহে আকাশ বাতাস মুখরিত। আহা কি আনন্দ।
বোমার আডালে বাজি কি বাজির আড়ালে বোমা,চ্যানেলে চ্যানেলে ,জোর বাহেস।
একই টিম সারা বঙ্গ ঘুরিয়া একটি মাত্র খবর ব্রেকিং নিউজে ঢালতে পারলেই রাত দিন সারা দিন।
খবর নাই।
বিজ্ঞাপন আছে।
সেলিব্রিটি বুদ্ধিজীবী কম পড়ে নাই।
খবর নাই। চ্যানেল ব্যবসা রমরম জাপানি তেলে, রকেটক্যাপসুলে আর প্যানেল।
অতএব,Bengal Bleeds as Political Honeymoon ends in complete anarchy!
শুন শুন জনগণ করি নিবেদন
কল্কি অবতারে পুজিয়া
পুঁজির দাসত্বে রাজনৈতিক দাম্পত্যে
মরিছে বাঙালি যত
মরিবে আরো শত শত
গৌরিক সাম্রাজ্রের
জয়পতাকা উড়িছে ঘরে ঘরে
করহ জযধ্বনি
করহ উল্লাস
আহা কি আনন্দ
আকাশে বাতাসে
কল্কি রাজা আসিয়াছে
রাজনৈতিক দাম্পত্যে
পাতহ লক্ষ্মীর আসন
ভক্তিভরে করহ
লক্ষ্মী পিপিপি আবাহন
লক্ষ্মীর পাঁচালি ঘরে ঘরে
হিন্দুত্বের উত্সবে বলিপ্রদত্ত বাঙালি ঘরে ঘরে
রাজকার্য রাজসূয় আয়োজনে বহিছে রক্তধারা
নৈরাজ্যের অন্ধ নিশায় নিমজ্জিত বঙ্গে
দেবি যাবে কবে বিসর্জনে?
কবে হবে পরিবর্তন আবার?
পিংলায় বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ, মৃত ১২
বুদ্ধদেব দাস, পিংলা, ৭ মে– বর্ধমানের খাগড়াগড়ের বিস্ফোরণের স্মৃতি ফিরে এল পিংলায়৷ বেআইনি বাজি কারখানায় ভয়ানক বিস্ফোরণে মৃত্যু হল ১২ জনের৷ পুলিস ১২ জন বললেও, গ্রামবাসীদের দাবি, অন্তত ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে৷ বাজির আড়ালে এই কারখানায় বোমা তৈরি হত বলেই জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা৷ পুলিসের প্রাথমিক ধারণাও তাই৷ গতকাল রাতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে পিংলার ব্রাহ্মণবাড় গ্রাম৷ মুহূর্তেই শুরু হয় বহু মানুষের আর্তনাদ৷ বহু মানুষ আহত হয়েছেন৷ উড়ে গেছে বাড়ির চাল৷ দুমড়ে গেছে বাজি কারখানার কাঁচামাল সরবরাহকারী গাড়ি৷ অভিযোগ এতেই আসত বোমার মালমশলা৷ অনেকেরই হাত-পা উড়ে গেছে বিস্ফোরণে৷ বিস্ফোরণের ব্যাপকতা ছড়িয়েছে আশপাশের ১০০ মিটার এলাকা পর্যন্ত৷ গতকাল রাত থেকেই এখানে-সেখানে চোখে পড়ছে রক্তাক্ত দেহ৷ আগুন নেভাচ্ছে দমকল৷ পড়ে রয়েছে শরীরের অংশ৷ কোথাও গাছ আটকে থাকতে দেখা গিয়েছে দেহাংশ৷ গোটা গ্রাম ক্ষোভে ফুঁসছে৷ ঘটনার এন আই এ তদন্ত দাবি করেছে বিরোধীরা৷ রাজ্য বি জে পি-র সভাপতি রাহুল সিনহা বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির কাছে আবেদন করি, তিনি আর দেরি না করে এই ঘটনার এন আই এ তদন্তের নির্দেশ দিন৷ সবংয়ের বিধায়ক কংগ্রেস নেতা মানস ভুঁইয়া৷ তবে এই ঘটনাতেও জড়িয়ে গেছে শাসক তৃণমূলের নাম৷ স্হানীয় তৃণমূল নেতা রঞ্জন মাইতির বাড়িতেই চলত এই বাজি কারখানা৷ রাম মাইতি নামে এক ব্যক্তি এই কারখানা চালাত৷ তারও মৃত্যু হয়েছে৷ গ্রামবাসীদের অভিযোগ, তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে পুলিসকে বলে আসছেন এই কারখানায় বোমা তৈরি হয়৷ কিন্তু পুলিস সব জেনেও চুপ করে বসেছিল৷ প্রসঙ্গত, বছর আড়াই আগে এই রঞ্জন মাইতি বাসে বিস্ফোরক নিয়ে ধরা পড়েছিল৷ এদিনের ঘটনায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ পুলিস ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে৷ বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞরা ঘটনাস্হলে আসছেন৷ তাঁরা বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করবেন৷ বেসরকারিভাবে জানালেও, পুলিস সরকারিভাবে বোমা তৈরির বিষয়টি অস্বীকার করেছে৷ কিন্তু স্হানীয়রা বলছেন, কারখানার অবশিষ্ট অংশ ঘুরলেই বোমার মশলা পাওয়া যাবে৷ গভীর রাতে সেই মশলা কিছুটা সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলেও তাঁরা অভিযোগ করেছেন৷ বহু মানুষ রাতেই আতঙ্কে এলাকা ছেড়েছেন৷ তাঁদের কেউ কেউ আজ সকালে বিস্ফোরণস্হলের কাছে ঘোরাফেরা করছেন৷ প্রত্যেকের চোখে-মুখেই আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট৷ প্রসঙ্গত, গত বছর খাগড়াগড়ের বিস্ফোরণে গোটা রাজ্য জুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল৷ ব্যাপকতা পৌঁছেছিল প্রতিবেশী বাংলাদেশেও৷
আজকালের প্রতিবেদন
TMC activist's 'bomb unit' blast kills 12 in Pingla
Times of India-12 hours ago
BRAHMONBAR (Pingla): A powerful explosion in a house packed with explosives killed at least 12 people — several of them in their teens ...
The Hindu-06-May-2015
Oneindia-21 hours ago
Zee News-22 hours ago
Hindu Business Line-06-May-2015
Explore in depth (112 more articles)
মোদিকে ৫ পাতার চিঠিতে দাবি, অভিযোগ মমতার
রাজীব চক্রবর্তী: রাত পোহালেই রাজভবনে মুখোমুখি বৈঠক হতে চলেছে মোদি-মমতার৷ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে রাজ্যের স্বার্থে একাধিক দাবি তুলে ধরবেন মুখ্যমন্ত্রী৷ বেশ কিছু অভিযোগও জানাবেন৷ যার আভাস রয়ে গেছে প্রধানমন্ত্রীকে লেখা তাঁর চিঠিতে৷ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পে রাজ্যকে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ২৪ এপ্রিল চিঠি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি৷ ৫ পাতার চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ২০১৫-১৬ বাজেটে অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি পশ্চিমবঙ্গ ও অন্ধ্রপ্রদেশের জন্য নতুন প্যাকেজের ঘোষণা করেছিলেন৷ এখনও সে সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি৷ রাজ্য সরকার জানতে চায় তার কী হল৷ এর পর একের পর এক কেন্দ্রীয় প্রকল্প হয় বন্ধ করা নয়ত বরাদ্দ বকেয়া থাকার কথা উল্লেখ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ বলেছেন, এগুলি সহযোগিতামূলক যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপম্হী৷ কেন্দ্রীয় সরকারের বি আর জি এফ, নগরোন্নয়নের জন্য জে এন এন ইউ আর এম, পুলিসের আধুনিকীকরণের মতো প্রকল্পে বরাদ্দ কমিয়ে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন মমতা৷ আরও লিখেছেন, আগের রাজ্য সরকার ২ লক্ষ কোটি টাকার বিপুল ঋণের বোঝা এই সরকারের জন্য রেখে গেছে৷ অতি সামান্য আয় নিয়েও উন্নয়নের দায়িত্ব মাথায় নিয়ে রেখেছে রাজ্য সরকার৷ পুরো বিষয়টি মাথায় রেখে ২০১১-১২ সালে কেন্দ্র সরকার বি আর জি এফের একটি বিশেষ প্রকল্পে মোট ৮,৭৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল৷ রাজ্য সরকার অনগ্রসর এলাকার শিক্ষা, স্বাস্হ্য, সড়ক, গ্রামীণ বিদ্যুদয়ন ইত্যাদি কাজ শুরু করেছিল৷ কিন্তু কেন্দ্র মোট বরাদ্দের মধ্যে ৩১ মার্চ পর্যন্ত ৫,৫৮২.৫৭ কোটি টাকা দিয়েছে৷ বকেয়া টাকা অবিলম্বে দেওয়া হোক৷
আজকালের প্রতিবেদন
মধ্যমগ্রামে দুষ্কৃতীদের এলোপাতাড়ি বোমা-গুলিতে গাড়ির ভেতরেই হত ২
উদয় বসু: মধ্যমগ্রামের ব্রিজ পার হতেই দুষ্কৃতীদের বোমা ও গুলি গর্জে উঠল একটি প্রাইভেট গাড়ির ওপর৷ ঘটনাস্হলেই প্রাণ হারালেন ২ জন৷ এঁদের নাম বাবু সেন (৪০) ও নুঙ্কাই (৪৫)৷ আহত হয়েছেন অভিজিৎ গুহ৷ তাঁকে আর জি কর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে৷ গাড়ির চালক জগদীশের চোট লাগলেও তিনি ভাল আছেন বলে জানা গেছে৷ ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার সন্ধে ৭টা নাগাদ মধ্যমগ্রাম ব্রিজের কাছে জনবহুল এলাকায়৷ নিহতরা প্রোমোটিং ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে৷ সিন্ডিকেট নিয়ে বচসার জেরে এই খুন কিনা পুলিস খতিয়ে দেখছে৷ পুলিস সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সন্ধেয় বাবু সেন, নুঙ্কাই ও অভিজিৎ একটি গাড়িতে চেপে মধ্যমগ্রাম চৌমাথার দিক থেকে সোদপুরে আসছিলেন৷ মধ্যমগ্রাম ব্রিজের কাছে আগে থেকেই জড়ো হয়েছিল ১৫-২০ জনের এক দুষ্কৃতী দল বোমা ও রিভলভার নিয়ে৷ মধ্যমগ্রাম ব্রিজ পার হতেই দুষ্কৃতীরা গাড়ি লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছুঁড়তে থাকে৷ হকচকিয়ে যান এলাকার মানুষ৷ পথচলতি মানুষ ভয়ে-আতঙ্কে ছোটাছুটি শুরু করে দেন৷ আশপাশের দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়৷ দুষ্কৃতীরা মাত্র কয়েক মিনিট তাণ্ডব চালিয়ে চম্পট দেয়৷ খবর পেয়ে ছুটে আসে মধ্যমগ্রাম থানার পুলিস৷ স্হানীয় মানুষের সহযোগিতায় গাড়ি থেকে ৪ জনকে বের করে পানিহাটি স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তাররা বাবু সেন ও নুঙ্কাইকে মৃত বলে ঘোষণা করেন৷ পুলিস প্রাথমিক তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে, গত ১৫ আগস্ট সোদপুর এলাকায় জোড়া খুন হয়, তাতে অভিযুক্ত ছিলেন বাবু সেন৷ বাবু সেন ও অন্যরা জমি, মাটির ব্যবসা করতেন৷ এঁদের বাড়ি বেলঘরিয়া এবং বিশরপাড়া এলাকায়৷ ইদানীং প্রোমোটিংয়ের কাজের সঙ্গেও যুক্ত হয়েছিলেন তাঁরা৷ জমি, মাটি, প্রোমোটিং নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে এঁদের সঙ্গে শত্রুতা চলছিল আর এক গোষ্ঠীর৷ সন্দেহ এদিনের এই ঘটনা তাদেরই কাজ৷ পুলিস দুষ্কৃতীদের খুঁজছে৷ এদিকে বাবু সেন ও নুঙ্কাইয়ের মৃত্যুতে বেলঘরিয়া এলাকায় ক্ষোভের পাশাপাশি শোকের ছায়াও নেমে এসেছে৷
আজকালের প্রতিবেদন
মুরগির খামারের আড়ালে কারখানা
সব্যসাচী সরকার: দু'বছর আগে ছিল মুরগির খামার৷ দু'বছর ধরে বাঁশবন ঘেরা প্রায়ান্ধকার একজায়গায় চলছিল বাজি তৈরির কারখানা৷ বাজি বানানোর মালিককে, তাঁর নিজের গ্রাম শুকছড়া থেকে একজোট হয়ে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন গ্রামের লোকেরা৷ কারণ, সেখানেও ছোটখাটো বিস্ফোরণ হয়েছিল৷ কোথা থেকে আসত বাজির মশলা, বারুদ, তুবড়ির খোল, প্লাস্টিকের বল– কেউই জানেন না৷ গ্রামের লোকেদের কাছে ওই বাজি বানানোর জায়গা, এক নিষিদ্ধ এলাকা৷ তার কারণ ভয়৷ অভিযোগ, রঞ্জন মাইতির দলবল ভয় দেখিয়ে গ্রামের লোককে চুপ করিয়ে রাখত৷ কারা কাজ করত বাজি কারখানায়? মৃতদের পরিচয় এখনও জানা যায়নি৷ গ্রামের লোকেরা বলছেন, মাঝে মাঝেই ব্রাহ্মণবাড় গ্রামে বহু কমবয়সী ছেলেরা আসত, নানা জায়গা থেকে৷ গড় বয়স ১৪৷ বিশেষ বিশেষ সময় অনেক কমবয়সী মেয়েও আসত বাজি কারখানায় কাজ করতে৷ ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণ ঘটে বুধবার রাত ৯টা ৪৫ নাগাদ৷ ১০ কিমি দূরে ডিঙন গ্রামের মানুষের কানেও বিস্ফোরণের তীব্র শব্দ পৌঁছে যায়৷ অভিযোগ উঠেছে তিন ধরনের৷ আই পি এল খেলা চলছিল৷ উঠোনেই টিভি চালিয়ে খেলা দেখার সময় কেউ বিড়ির টুকরো ছুঁড়ে দেয়, তাতেই বিস্ফোরণ৷ অন্য অভিযোগ, রান্নার সময় এক মহিলার কাপড়ে আগুন ধরে যায়৷ তা থেকেই বিস্ফোরণ৷ বিস্ফোরণস্হলে পৌঁছে দেখা যায়, তৈরি বাজি নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি গাড়ি পুড়ে ছাই৷ সেই গাড়ির কাগজপত্র খুঁজছে পুলিস৷ বিস্ফোরণের তীব্রতায় (ডব্লু বি ৩৩১৩ ৪৬৫০) গাড়ির বনেট হাঁ হয়ে গেছে৷ বারুদে ঝলসে গেছে৷ প্রশ্ন উঠেছে, গোটা কারখানায় কত টন বারুদ মজুত ছিল? রঞ্জন মাইতির মাইক, ডেকরেটরের ব্যবসা ছিল প্রকাশ্যে৷ কিন্তু মুরগির খামার ভাড়া দিয়ে এই ব্যবসা তাঁরই, জানেন তাবৎ গ্রামবাসী৷ যে অঞ্চলে ঘটনা, সেখানে ২৫০ ঘর মানুষের বাস৷ ৭০-৭৫ ঘর আদিবাসী৷ আই জি (পশ্চিমাঞ্চল) সিদ্ধিনাথ গুপ্তা ঘটনাস্হলে জানান, গোটা বিষয়টার তদন্ত হচ্ছে৷ বিকেলের পর পৌঁছন ডি আই জি (সি আই ডি) অপারেশনস দিলীপ আদক৷ রাতের অন্ধকারে রামপদ মাইতির বাজি তৈরির কারখানায় বাইকে করে অনেক ছেলে আসত, তাদের কখনই দিনে দেখা যেত না৷ রঞ্জন মাইতিরা ৭ ভাই– গ্রামের মানুষের তাঁর বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ৷ রামপদ মাইতি ও তার স্ত্রী বীণা মাইতি সেভাবে গ্রামের মানুষদের সঙ্গে মেলামেশা করতেন না৷ এড়িয়েই চলতেন৷ উৎসবে যে সমস্ত বাজি পোড়ানো হয়, সে বাদেও অভিযোগ, বোমা তৈরি করে পাচার করা হত৷ প্লাস্টিকের তৈরি ফাঁপা কিছু বল পাওয়া গেছে৷ সেগুলিতে বারুদ ঠাসা হত, যাতে বারুদ তাজা থাকে৷ গ্রামে ঢুকতেই দেখা গেল নানা জায়গায় জটলা৷ পিংলা থানার বিরুদ্ধেও মানুষের ক্ষোভ৷ পুলিসকে ঘিরে দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে৷
রাতভর ফাটল বোমা
একবার বিস্ফোরণ হয়েই শেষ হয়নি৷ প্রাণভয়ে গ্রামের মানুষ গভীর রাতে দূরে দাঁড়িয়ে দেখেছেন, শুনেছেন বিকট শব্দে রাতভর বোমার শব্দ৷ বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই ছিল, দেহাংশ ছিটকে বাঁশ গাছে ঝুলছিল৷ পুলিস গিয়ে সে সমস্ত উদ্ধার করেছে৷ গাছের গায়ে লেপ্টে রয়েছে ছেঁড়া শার্টের টুকরো, বাজির প্যাকেট মুড়ে রাখার রঙিন কাগজ৷ গোটা এলাকায় আগুনের তাপে ঝলসে গেছে গাছ৷ যাঁরা মারা গেছেন, তাঁদের দেহের নানা টুকরো জড়ো করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে৷ পুলিস সূত্রে জানা গেছে, খড়ের গাদায় উড়ে গিয়েছে পা, কোথাও বা ঝুলছিল হাতের টুকরো৷ চামড়া পোড়া গন্ধ এলাকায়৷ তুবড়ির অজস্র খোল ছাড়াও ভকসেল (লোহার পাইপে বারুদ ঠেসে ছোট কামান) তৈরির পাইপ উদ্ধার করেছে পুলিস৷ রামপদ মাইতির বাড়িতে সে সময় আরও কারা ছিল, তা জানার চেষ্টা করছে পুলিস৷ রঞ্জন মাইতির বাড়ির লোকেরা সে সময় খেতে বসেছিলেন৷ বাড়ি গিয়ে দেখা গেল, থালা, বাটি মেঝেতে পড়ে রয়েছে৷ কোনও থালায় ভাত বাড়া৷ রঞ্জন মাইতির পরিবার বিস্ফোরণের পরেই পালিয়ে গিয়েছে৷ ঘরে-বাইরে মানুষের ভিড়৷ ঘটনাস্হল থেকে ৪০-৫০ মিটার দূরে স্হানীয় বাসিন্দা শুভেন্দু ভক্তার বাড়ি৷ আই পি এল দেখতে তিনিও নাকি ওই কারখানায় গিয়েছিলেন৷ তার পর থেকে কোনও খোঁজ নেই৷ তাঁর স্ত্রী তাপসী ভক্তা অঝোরে কেঁদে চলেছেন৷ বলছেন, যদি দেহ একবারও দেখা যায়৷
অ্যামোনিয়ার ড্রাম?
তৈরি না হওয়া বারুদের সঙ্গে অ্যামোনিয়ার বিপুল মজুত কি ছিল? বা অন্য কোনও তীব্র বিস্ফোরক? ফরেনসিকের অফিসারেরা ঘটনাস্হলে পৌঁছে ঘটনাস্হল থেকে বিভিন্ন দূরত্বে পড়ে থাকা, উড়ে আসা বস্তু সংগ্রহ করছেন? কী ধরনের ছিল? এলাকার মানুষেরা বলছেন, ১২-১৩ জন লোককে যেন উড়িয়ে নিয়ে গিয়ে কোথাও ছুঁড়ে ফেলা হয়েছে৷ বিকট শব্দ ও বারুদের আগুনের তীব্রতায় ঝলসে শুধু যায়নি, দেহ টুকরো হয়েছে৷ যাঁরা ছিলেন সেদিন ঘটনাস্হলে, তাঁরা নিশ্চয়ই বারুদের বস্তার চারপাশে বসে বা শুয়ে ছিলেন না৷ একজায়গায় আগুন লাগতে বা গরমের ফলে গোটা বাড়িটাই জতুগৃহ হয়ে ছিল৷ দমকল দিনের আলোয় পৌঁছে বহু বস্তা বারুদ নিভিয়েছে৷ কতজন লোক ছিল সেদিন? এই হিসেব কারও কাছেই নেই৷ যেমন মৃতদের মুখ দেখে চেনার উপায় নেই৷ দেহ কী পাচার হয়েছে কোথাও? স্হানীয় মানুষেরা এমন অভিযোগও তুলছেন৷ তাঁদের ক্ষোভ, এমন একটা ঘটনার আশঙ্কা তাঁরা বহুদিন ধরেই করছিলেন৷ পুলিস ঘটনাস্হলে গিয়ে পুড়ে যাওয়া বহু যন্ত্রাংশ উদ্ধার করেছে৷ সেগুলি কী কাজে লাগত, তা দেখা হচ্ছে৷ মুণ্ডমারি পেরিয়ে লাল মোরামের রাস্তা দিয়ে আঁকাবাঁকা এগোতে এগোতে অকুস্হল৷ এমন জায়গা বাছা হয়েছিল, যার সঙ্গে পিংলা অঞ্চলের বহু মানুষের জানা নেই৷ ঘটনার পর সবাই খবর শুনে জানছেন, বিস্ফোরণ ঘটেছে তাঁদের গ্রামেই৷ ব্রাহ্মণবাড় অঞ্চলে এমন ঘটনা প্রথম৷ ভয়ে থরথর করে কাঁপছে গোটা গ্রাম৷
আজকালের প্রতিবেদন
শিল্পে বিনিয়োগ টানতে অনুমোদন পদ্ধতি সরলীকরণ করল রাজ্য
মধ্যমগ্রামে গাড়ি ঘিরে এলোপাথারি গুলি, মৃত দুই আরোহী, আহত ১
পিংলার বিস্ফোরণ কেড়ে নিল মুর্শিদাবাদের ১০ কিশোরের প্রাণ
পিংলায় পুলিসি নিষ্কৃয়তার পিছনেও কি শাসক দল? উঠছে প্রশ্ন
মৃত্যুভূমি পিংলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১২, আহত ৪, নিখোঁজ অনেকেই
পিংলা বিস্ফোরণ কাণ্ডে মিলল চেন্নাই যোগ, সিআইডি তদন্তের নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর
কবে হবে বাকি ৭টি পুরসভার ভোট? দিন নির্ধারণে শাসক-বিরোধী চাপানউতোর
৭ মাসে রাজ্যে বন্ধ ১২টি জুট মিল, মোদী-মমতা বৈঠক ঘিরে উত্তেজনায় মালিকরা
পিংলা বিস্ফোরণ কাণ্ডে চেন্নাই যোগ, সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী, মৃতের সংখ্যা ১২
পশ্চিম মেদিনীপুরে পিংলায় বাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ, মৃত ১১ গুরুতর জখম ৩
ফেলে দিতে হবে ৭০ হাজার লিটার দুধ, সঙ্কটে ভাগীরথী মিল্ক ইউনিয়ন
দুষ্কৃতীদের অতর্কিত অ্যাসিড হানায় নষ্ট হয়েছে চোখ, তবুও স্বপ্ন দেখেন শোভনা
ত্রিশঙ্কু ১১টি পুরসভার মধ্যে দুটির দখলে নিল তৃণমূল
গাড়ির ধাক্কায় আহত দুই স্কুল পড়ুয়া
এবার রাজ্যের পঞ্চায়েতের উন্নয়ন যজ্ঞে অর্থ সাহায্য করছে বিশ্বব্যাঙ্ক
http://zeenews.india.com/bengali/zila.html
শ্রীশ্রীলক্ষ্মীদেবীর বৃহস্পতিবারবিহিত ব্রতকথা-পাঁচালি ও বারমাস্যা
05সেপ্টে
শ্রীশ্রীলক্ষ্মীদেবীর ব্রতকথা-পাঁচালি
দোলপূর্ণিমা নিশীথে নির্মল আকাশ।
মন্দ মন্দ বহিতেছে মলয় বাতাস।।
লক্ষ্মীদেবী বামে করি বসি নারায়ণ।
কহিতেছে নানা কথা সুখে আলাপন।।
হেনকালে বীণাযন্ত্রে হরি গুণগান।
উপনীত হইলেন নারদ ধীমান।।
ধীরে ধীরে উভপদে করিয়া প্রণতি।
অতঃপর কহিলেন লক্ষ্মীদেবী প্রতি।।
শুন গো, মা নারায়ণি, চলো মর্ত্যপুরে।
তব আচরণে দুখ পাইনু অন্তরে।।
তব কৃপা বঞ্চিত হইয়া নরনারী।
ভুঞ্জিছে দুর্গতি কত বর্ণিবারে নারি।।
সতত কুকর্মে রত রহিয়া তাহারা।
দুর্ভিক্ষ অকালমৃত্যু রোগে শোকে সারা।।
অন্নাভাবে শীর্ণকায় রোগে মৃতপ্রায়।
আত্মহত্যা কেহ বা করিছে ঠেকে দায়।।
কেহ কেহ প্রাণাধিক পুত্রকন্যা সবে।
বেচে খায় হায় হায় অন্নের অভাবে।।
অন্নপূর্ণা অন্নরূপা ত্রিলোকজননী।
বল দেবি, তবু কেন হাহাকার শুনি।।
কেন লোকে লক্ষ্মীহীন সম্পদ অভাবে।
কেন লোকে লক্ষ্মীছাড়া কুকর্ম প্রভাবে।।
শুনিয়া নারদবাক্য লক্ষ্মী ঠাকুরানি।
সঘনে নিঃশ্বাস ত্যজি কহে মৃদুবাণী।।
সত্য বাছা, ইহা বড় দুঃখের বিষয়।
কারণ ইহার যাহা শোনো সমুদয়।।
আমি লক্ষ্মী কারো তরে নাহি করি রোষ।
মর্ত্যবাসী কষ্ট পায় ভুঞ্জি কর্মদোষ।।
মজাইলে অনাচারে সমস্ত সংসার।
কেমনে থাকিব আমি বল নির্বিকার।।
কামক্রোধ লোভ মোহ মদ অহংকার।
আলস্য কলহ মিথ্যা ঘিরিছে সংসার।।
তাহাতে হইয়া আমি ঘোর জ্বালাতন।
হয়েছি চঞ্চলা তাই ওহে বাছাধন।।
পরিপূর্ণ হিংসা দ্বেষ তাদের হৃদয়।
পরশ্রী হেরিয়া চিত্ত কলুষিত ময়।।
রসনার তৃপ্তি হেতু অখাদ্য ভক্ষণ।
ফল তার হের ঋষি অকাল মরণ।।
ঘরে ঘরে চলিয়াছে এই অবিচার।
অচলা হইয়া রব কোন সে প্রকার।।
এসব ছাড়িয়া যেবা করে সদাচার।
তার গৃহে চিরদিন বসতি আমার।।
এত শুনি ঋষিবর বলে, নারায়ণি।
অনাথের মাতা তুমি বিঘ্নবিনাশিনী।।
কিবা ভাবে পাবে সবে তোমা পদছায়া।
তুমি না রাখিলে ভক্তে কে করিবে দয়া।।
বিষ্ণুপ্রিয়া পদ্মাসনা ত্রিতাপহারিণী।
চঞ্চলা অচলা হও পাপনিবারণী।।
তোমার পদেতে মা মোর এ মিনতি।
দুখ নাশিবার তব আছে গো শকতি।।
কহ দেবি দয়া করে ইহার বিধান।
দুর্গতি হেরিয়া সব কাঁদে মোর প্রাণ।।
দেবর্ষির বাক্য শুনি কমলা উতলা।
তাহারে আশ্বাস দানে বিদায় করিলা।।
জীবের দুঃখ হেরি কাঁদে মাতৃপ্রাণ।
আমি আশু করিব গো ইহার বিধান।।
নারদ চলিয়া গেলে দেবী ভাবে মনে।
এত দুঃখ এত তাপ ঘুচাব কেমনে।।
তুমি মোরে উপদেশ দাও নারায়ণ।
যাহাতে নরের হয় দুঃখ বিমোচন।।
লক্ষ্মীবাণী শুনি প্রভু কহেন উত্তর।
ব্যথিত কি হেতু প্রিয়া বিকল অন্তর।।
যাহা বলি, শুন সতি, বচন আমার।
মর্ত্যলোকে লক্ষ্মীব্রত করহ প্রচার।।
গুরুবারে সন্ধ্যাকালে যত নারীগণ।
পূজা করি ব্রতকথা করিবে শ্রবণ।।
ধন ধান্য যশ মান বাড়িবে সবার।
অশান্তি ঘুচিয়া হবে সুখের সংসার।।
নারায়ণ বাক্যে লক্ষ্মী হরষ মনেতে।
ব্রত প্রচারণে যান ত্বরিত মর্তেতে।।
উপনীত হন দেবী অবন্তী নগরে।
তথায় হেরেন যাহা স্তম্ভিত অন্তরে।।
ধনেশ্বর রায় হয় নগর প্রধান।
অতুল ঐশ্বর্য তার কুবের সমান।।
হিংসা দ্বেষ বিজারিত সোনার সংসার।
নির্বিচারে পালিয়াছে পুত্র পরিবার।
একান্নতে সপ্তপুত্র রাখি ধনেশ্বর।
অবসান নরজন্ম যান লোকান্তর।।
পত্নীর কুচক্রে পড়ি সপ্ত সহোদর।
পৃথগন্ন হল সবে অল্প দিন পর।।
হিংসা দ্বেষ লক্ষ্মী ত্যাজে যত কিছু হয়।
একে একে আসি সবে গৃহে প্রবেশয়।।
এসব দেখিয়া লক্ষ্মী অতি ক্রুদ্ধা হল।
অবিলম্বে সেই গৃহ ত্যজিয়া চলিল।।
বৃদ্ধ রানি মরে হায় নিজ কর্মদোষে।
পুরীতে তিষ্ঠিতে নারে বধূদের রোষে।।
পরান ত্যজিতে যান নিবিড় কাননে।
চলিতে অশক্ত বৃদ্ধা অশ্রু দুনয়নে।।
ছদ্মবেশে লক্ষ্মীদেবী আসি হেন কালে।
উপনীত হইলেন সে ঘোর জঙ্গলে।।
সদয় কমলা তবে জিজ্ঞাসে বৃদ্ধারে।
কিবা হেতু উপনীত এ ঘোর কান্তারে।।
লক্ষ্মীবাক্যে বৃদ্ধা কহে শোন ওগো মাতা।
মন্দভাগ্য পতিহীনা করেছে বিধাতা।।
ধনবান ছিল পিতা মোর পতি আর।
লক্ষ্মী বাঁধা অঙ্গনেতে সতত আমার।।
সোনার সংসার মোর ছিল চারিভিতে।
পুত্র পুত্রবধূ ছিল আমারে সেবিতে।।
পতি হল স্বর্গবাসী সুখৈশ্বর্য যত।
একে একে যাহা কিছু হল তিরোহিত।।
ভিন্ন ভিন্ন হাঁড়ি সব হয়েছে এখন।
অবিরত বধূ যত করে জ্বালাতন।।
অসহ্য হয়েছে এবে তাদের যন্ত্রণা।
এ জীবন বিসর্জিতে করেছি বাসনা।।
বৃদ্ধা বাক্যে নারায়ণী কহেন তখন।
আত্মহত্যা মহাপাপ শাস্ত্রের বচন।।
ফিরে যাও ঘরে তুমি কর লক্ষ্মীব্রত।
সর্ব দুঃখ বিমোচিত পাবে সুখ যত।।
গুরুবারে সন্ধ্যাকালে বধূগণ সাথে।
লক্ষ্মীব্রত কর সবে হরষ মনেতে।।
পূর্ণ ঘটে দিবে শুধু সিঁদুরের ফোঁটা।
আম্রশাখা দিবে তাহে লয়ে এক গোটা।।
গুয়াপান দিবে তাতে আসন সাজায়ে।
সিন্দূর গুলিয়া দিবে ভক্তিযুক্ত হয়ে।।
ধূপ দীপ জ্বালাইয়া সেইখানে দেবে।
দূর্বা লয়ে হাতে সবে কথা যে শুনিবে।।
লক্ষ্মীমূর্তি মানসেতে করিবেক ধ্যান।
ব্রতকথা শ্রবণান্তে শান্ত করে প্রাণ।।
কথা অন্তে ভক্তিভরে প্রণাম করিবে।
অতঃপর এয়োগণ সিঁদুর পরাবে।।
প্রতি গুরুবারে পূজা যে রমণী করে।
নিষ্পাপ হইবে সে কমলার বরে।।
বার মাস পূজা হয় যে গৃহেতে।
অচলা থাকেন লক্ষ্মী সেই সে স্থানেতে।।
পূর্ণিমা উদয় হয় যদি গুরুবারে।
যেই নারী এই ব্রত করে অনাহারে।।
কমলা বাসনা তার পুরান অচিরে।
মহাসুখে থাকে সেই সেই পুত্রপরিবারে।।
লক্ষ্মীর হাঁড়ি এক স্থাপিয়া গৃহেতে।
তণ্ডুল রাখিবে দিন মুঠা প্রমাণেতে।।
এই রূপে নিত্য যেবা সঞ্চয় করিবে।
অসময়ে উপকার তাহার হইবে।।
সেথায় প্রসন্না দেবী কহিলাম সার।
যাও গৃহে ফিরে কর লক্ষ্মীর প্রচার।।
কথা শেষ করে দেবী নিজ মূর্তি ধরে।
বৃদ্ধারে দিলেন দেখা অতি কৃপা ভরে।।
লক্ষ্মী হেরি বৃদ্ধা আনন্দে বিভোর।
ভূমিষ্ট প্রণাম করে আকুল অন্তর।।
ব্রত প্রচারিয়া দেবি অদৃশ্য হইল।
আনন্দ হিল্লোলে ভেসে বৃদ্ধা ঘরে গেল।।
বধূগণে আসি বৃদ্ধা বর্ণনা করিল।
যে রূপেতে বনমাঝে দেবীরে হেরিল।।
ব্রতের পদ্ধতি যাহা কহিল সবারে।
নিয়ম যা কিছু লক্ষ্মী বলেছে তাহারে।।
বধূগণ এক হয়ে করে লক্ষ্মীব্রত।
স্বার্থ দ্বেষ হিংসা যত হইল দূরিত।।
ব্রতফলে এক হল সপ্ত সহোদর।
দুঃখ কষ্ট ঘুচে যায় অভাব সত্বর।।
কমলা আসিয়া পুনঃ আসন পাতিল।
লক্ষ্মীহীন সেই গৃহে লক্ষ্মী অধিষ্ঠিল।।
দৈবযোগে একদিন বৃদ্ধার গৃহেতে।
আসিল যে এক নারী ব্রত সময়েতে।।
লক্ষ্মীকথা শুনি মন ভক্তিতে পুরিল।
লক্ষ্মীব্রত করিবে সে মানত করিল।।
কুষ্ঠরোগগ্রস্থ পতি ভিক্ষা করি খায়।
তাহার আরোগ্য আশে পূজে কমলায়।।
ভক্তিভরে এয়ো লয়ে যায় পূজিবারে।
কমলার বরে সব দুঃখ গেল দূরে।।
পতির আরোগ্য হল জন্মিল তনয়।
ঐশ্বর্যে পুরিল তার শান্তির আলয়।।
লক্ষ্মীব্রত এই রূপে প্রতি ঘরে ঘরে।
প্রচারিত হইল যে অবন্তী নগরে।।
অতঃপর শুন এক অপূর্ব ঘটন।
ব্রতের মাহাত্ম্য কিসে হয় প্রচলন।।
একদিন গুরুবারে অবন্তীনগরে।
মিলি সবে এয়োগন লক্ষ্মীব্রত করে।।
শ্রীনগরবাসী এক বণিক নন্দন।
দৈবযোগে সেই দেশে উপনীত হন।।
লক্ষ্মীপূজা হেরি কহে বণিক তনয়।
কহে, এ কি পূজা কর, কিবা ফল হয়।।
বণিকের কথা শুনি বলে নারীগণ।
লক্ষ্মীব্রত ইহা ইথে মানসপূরণ।।
ভক্তিভরে যেই নর লক্ষ্মীব্রত করে।
মনের আশা তার পুরিবে অচিরে।।
সদাগর এই শুনি বলে অহংকারে।।
অভাগী জনেতে হায় পূজে হে উহারে।।
ধনজনসুখ যত সব আছে মোর।
ভোগেতে সদাই আমি রহি নিরন্তর।।
ভাগ্যে না থাকিলে লক্ষ্মী দিবে কিবা ধন।
একথা বিশ্বাস কভু করি না এমন।।
হেন বাক্য নারায়ণী সহিতে না পারে।
অহংকার দোষে দেবী ত্যজিলা তাহারে।।
বৈভবেতে পূর্ণ তরী বাণিজ্যেতে গেলে।
ডুবিল বাণিজ্যতরী সাগরের জলে।
প্রাসাদ সম্পদ যত ছিল তার।
বজ্র সঙ্গে হয়ে গেল সব ছারখার।।
ভিক্ষাঝুলি স্কন্ধে করি ফিরে দ্বারে দ্বারে।
ক্ষুধার জ্বালায় ঘোরে দেশ দেশান্তরে।।
বণিকের দশা যেই মা লক্ষ্মী দেখিল।
কমলা করুণাময়ী সকলি ভুলিল।।
কৌশল করিয়া দেবী দুঃখ ঘুচাবারে।
ভিক্ষায় পাঠান তারে অবন্তী নগরে।।
হেরি সেথা লক্ষ্মীব্রত রতা নারীগণে।
বিপদ কারণ তার আসিল স্মরণে।।
ভক্তিভরে করজোড়ে হয়ে একমন।
লক্ষ্মীর বন্দনা করে বণিক নন্দন।।
ক্ষমা কর মোরে মাগো সর্ব অপরাধ।
তোমারে হেলা করি যত পরমাদ।।
অধম সন্তানে মাগো কর তুমি দয়া।
সন্তান কাঁদিয়া মরে দাও পদছায়া।।
জগৎ জননী তুমি পরমা প্রকৃতি।
জগৎ ঈশ্বরী তবে পূজি নারায়ণী।।
মহালক্ষ্মী মাতা তুমি ত্রিলোক মণ্ডলে।
গৃহলক্ষ্মী তুমি মাগো হও গো ভূতলে।।
রাস অধিষ্ঠাত্রী তুমি দেবী রাসেশ্বরী।
তব অংশভূতা যত পৃথিবীর নারী।।
তুমিই তুলসী গঙ্গা কলুষনাশিনী।
সারদা বিজ্ঞানদাত্রী ত্রিতাপহারিণী।।
স্তব করে এইরূপে ভক্তিযুক্ত মনে।
ভূমেতে পড়িয়া সাধু প্রণমে সে স্থানে।।
ব্রতের মানত করি নিজ গৃহে গেল।
গৃহিণীরে গৃহে গিয়া আদ্যান্ত কহিল।।
সাধু কথা শুনি তবে যত নারীগণ।
ভক্তিভরে করে তারা লক্ষ্মীর পূজন।।
সদয় হলেন লক্ষ্মী তাহার উপরে।
পুনরায় কৃপাদৃষ্টি দেন সদাগরে।।
সপ্ততরী জল হতে ভাসিয়া উঠিল।
আনন্দেতে সকলের অন্তর পূরিল।।
দারিদ্র অভাব দূর হইল তখন।
আবার সংসার হল শান্তি নিকেতন।।
এইরূপে ব্রতকথা মর্ত্যেতে প্রচার।
সদা মনে রেখো সবে লক্ষ্মীব্রত সার।।
এই ব্রত যেই জনে করে এক মনে।
লক্ষ্মীর কৃপায় সেই বাড়ে ধনে জনে।।
করজোড় করি সবে ভক্তিযুক্ত মনে।
লক্ষ্মীরে প্রণাম কর যে থাক যেখানে।।
ব্রতকথা যেবা পড়ে যেবা রাখে ঘরে।
লক্ষ্মীর কৃপায় তার মনোবাঞ্ছা পুরে।।
লক্ষ্মীর ব্রতের কথা বড়ো মধুময়।
প্রণাম করিয়া যাও যে যার আলয়।।
লক্ষ্মীব্রতকথা হেথা হৈল সমাপন।
আনন্দ অন্তরে বল লক্ষ্মী-নারায়ণ।।
শ্রীশ্রীলক্ষ্মীদেবীর বারমাস্যা
বছরের প্রথম মাস বৈশাখ যে হয়।
পূজা নিতে এস ওমা আমার আলয়।।
জ্যৈষ্ঠ মাসে ষষ্ঠী পূজা হয় ঘরে ঘরে।
এসো বসো তুমি ওমা পূজার বাসরে।।
আষাঢ়ে আসিতে মাগো নাহি করো দেরি।
পূজা হেতু রাখি মোরা ধান্য দুর্বা ধরি।।
শ্রাবণের ধারা দেখ চারি ধারে পড়ে।
পূজিবারে ও চরণ ভেবেছি অন্তরে।।
ভাদ্র মাসে ভরা নদী কুল বেয়ে যায়।
কৃপা করি এসো মাগো যত শীঘ্র হয়।।
আশ্বিনে অম্বিকা সাথে পূজা আয়োজন।
কোজাগরী রাতে পুনঃ করিব পূজন।।
কার্তিকে কেতকী ফুল চারিধারে ফোটে।
এসো মাগো এসো বসো মোর পাতা ঘটে।।
অঘ্রাণে আমন ধান্যে মাঠ গেছে ভরে।
লক্ষ্মীপূজা করি মোরা অতি যত্ন করে।।
পৌষপার্বনে মাগো মনের সাধেতে।
প্রতি গৃহে লক্ষ্মী পূজি নবান্ন ধানেতে।।
মাঘ মাসে মহালক্ষ্মী মহলেতে রবে।
নব ধান্য দিয়া মোরা পূজা করি সবে।।
ফাল্গুনে ফাগের খেলা চারিধারে হয়।
এসো মাগো বিষ্ণুজায়া পূজিগো তোমায়।।
চৈত্রেতে চাতক সম চাহি তব পানে।
আসিয়া বস ওমা দুঃখিনীর ভবনে।।
লক্ষ্মীদেবী বারমাস্যা হৈল সমাপন।
ভক্তজন মাতা তুমি করহ কল্যাণ।।