বাজিকরের হাতে দেশ ভেলকি বাজের হাতে মিডিয়া
17 Nov, 2014
মিনার রশীদ
মারা যাওয়ার আগে বিচারপতি হাবিবুর রহমান বলে গেছেন দেশটি বাজিকরের হাতে পড়ে গেছে। এই বাজিকররা সর্বশেষ ঘুষকে বৈধ বলে প্রকাশ্য ঘোষণা দিয়েছেন, ছাত্রলীগ ছাড়া এদেশে আর কারো চাকুরী হবে না এটা সরাসরি জানিয়ে দিয়েছেন। ৫ই জানুয়ারীতে যে বাজি বা পদ্ধতির মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছেন সেই গোমরটিও ফাঁক করে দিয়েছেন।
কর্ণেল অলি এটাকে অভিহিত করেছেন আল্লাহর অভিশাপ অর্থাৎ ঐশ্বরিক হস্তক্ষেপ হিসাবে। এদের জিহ্বা থেকে মগজের নিয়ন্ত্রণ তুলে নেয়াতে নিজেদের পাপের ফিরিস্তি নিজেরাই দেওয়া শুরু করেছে।
এই সব কথা বলে এবং এই ধরনের গণ বিরোধী কাজ করে একটি সরকার কীভাবে টিকে থাকে সেটাই আজ মিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
উত্তর বোধহয় একটাই। এই বাজিকরদের ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখছে দেশের গণমাধ্যম তথা মিডিয়া যা পড়ে গেছে কিছু ভেলকি বাজের হাতে। তারা ভেলকির মাধ্যমে কোনও জিনিসকে বিলকুল উধাও করে দেয়। আবার ইচ্ছেমত শূণ্য থেকে কিছু বের করে আনে । তারাই ঠিক করে দেয় জনগণ এই বাজিকরদের বাজি কতটুকু দেখবে আর কতটুকু দেখবে না। কাজেই এই ভেলকিবাজদের হাত থেকে মিডিয়ার নিয়ন্ত্রণটি সরাতে না পারলে গণ মানুষের মুক্তি কখনই আসবে না।
এই ভেলকির দুয়েকটি উদাহরন টানা যেতে পারে। মিডিয়া ভেলকির সবচেয়ে বড় উদাহরন শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ। ফখরুল ইসলাম আলমগীর পরে এটাকে সরকারের ভেলকি হিসাবে অভিহিত করলেও এটা ছিল মূলত আলো-স্টার-চ্যানেল আইদের সৃষ্ট ভেলকি।
রানা প্লাজার দুর্ঘটনার সময়ে ভেলকিবাজ মিডিয়া এদেশের মানুষকে ব্যস্ত করে ফেলে ম খা আলমগীরের বিল্ডিং ঝাকানি তত্ত্ব দিয়ে। কিন্তু তখন প্রধানমন্ত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে যে দুটি মারাত্মক অসত্য কথা বললেন এবং সাথে সাথেই রাম ধরা খেলেন তা এই মখা আলমগীর বিল্ডিং নাড়াচড়া তত্ত্ব দিয়ে আড়াল করে ফেলা হয়।
দুর্ঘটনার পরপরই প্রধানমন্ত্রী মহান সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, সোহেল রানা যুবলীগের কেউ না এবং রানা প্লাজা থেকে সকল লোকদের আগে ভাগেই বের করে ফেলা হয়েছে ! শুধু কয়েকজন লোক তাদের ব্যক্তিগত জিনিসপত্র আনতে গিয়ে আটকা পড়েছে মাত্র !!
তারপরেই মানুষ দেখলো রানার কপালে মুরাদ জংয়ের সেই ঐতিহাসিক চুম্বনের ছবি ও তার পেছনের গল্প। মূল ধারার মিডিয়া ঢাকতে চাইলেও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম এসব কুকীর্তি জনগণের দৃষ্টিতে নিয়ে আসে । প্রধানমন্ত্রী যেখানে বললেন গুটি কয় মানুষ তাদের ব্যক্তিগত মাল সামানা অানতে গিয়ে আটকা পড়েছে সেখানে দেখা গেলো কয়েক হাজার লোক স্মরণকালের ভয়াবহ শিল্প দুর্ঘটনায় প্রাণ দিয়েছে,অারো কয়েক হাজার আহত হয়েছে। অনেক লাশ লুকিয়ে রেখে এবং রেশমা নাটক সৃষ্টি করেও সরকারের শেষ রক্ষা হলো না।
প্রধানমন্ত্রীর এই জলজ্যান্ত মিথ্যা নিয়ে কোন মিডিয়া তাঁকে আর ঘাটালো না। বরং মখার বিল্ডিং নড়াচড়া তত্ত্বের আড়ালে প্রধানমন্ত্রীকে বাঁচিয়ে দিলো । বেচারা মখা অনেক মন্দ কথা শোনলেন কিন্তু তার চেয়েও ভয়ংকর কথা বললেও শেখ হাসিনার কিছুই হলো না।
মিডিয়ার একই কারসাজি শুরু হয়েছে এইচ টি ইমামের বক্তব্য নিয়ে। আওয়ামী দাস মিডিয়া হাসিনাকে জড়িয়ে এইচ টি ইমামের মুল কথাটাই চেপে যাচ্ছে । তার কথার চৌম্বক অংশটি ছিল "নেত্রী কাউকে চাকরী দেয়ার আগে আমাকে জিজ্ঞেস করেন প্রার্থী ছাত্রলীগ করেছে কি না। কোন পর্যায়ে ছিল, কি কাজ করেছে।'
ইমামের কথার যে অংশে সবচেয়ে মনোযোগ দেয়ার কথা, ভেলকিবাজ মিডিয়া সেই অংশটুকুই চাপা দিয়ে ফেলছে। এইচ টি ইমামকে সত্য বলার জন্যে কিছু শাস্তি দিয়ে বা তিরস্কার করে মানুষের ক্ষোভটি কমানো হবে। সমস্যার মূল জায়গায় কখনই জনগণকে হাতটি দিতে দিবে না।
https://www.youtube.com/watch?
http://www.bdmonitor.net/