Quantcast
Channel: My story Troubled Galaxy Destroyed dreams
Viewing all articles
Browse latest Browse all 6050

মর্মান্তিক শীতে দুঃশাসন ও দুর্নীতির শিকার লক্ষ লক্ষ লোক কিন্তু সরকারি সাহায্য নছিবে জুটবে কি?

$
0
0
মর্মান্তিক শীতে দুঃশাসন ও দুর্নীতির শিকার লক্ষ লক্ষ লোক কিন্তু সরকারি সাহায্য নছিবে জুটবে কি?
Monsur Haider <haidermonsur@gmail.com>
গত জুমুআ'বার পত্রিকাগুলোতে প্রধান লীড হয়েছে- "তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রিতে, শৈত্য প্রবাহের শঙ্কা ॥ শীতবস্ত্রের অভাবে কাঁপছে নিম্নআয়ের মানুষ"
কুড়িগ্রামে তীব্র শীতে গত কয়েকদিনে ৬ শিশুসহ ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে হাসপাতালে ৪ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আর শীতজনিত কারণে গত জুমুয়া'বার চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক শিশুসহ দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। এ রকম মৃত্যুর খবর হচ্ছে আরো অনেক জেলায়। মিডিয়ায় আসছে খুব কম সংখ্যক খবর।
বলাবাহুল্য, প্রতিবছরই শীতে এরূপ অনেক মানুষ মারা যাচ্ছে। কষ্ট পাচ্ছে লাখ লাখ লোক। কিন্তু কোনো সরকারেই এর কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না। এমনকি দিন বদলের দাবিদার সরকারেও কোনো বদল হলো না যা গভীর আক্ষেপজনক।
অথচ সরকারি হিসেবে প্রতি বছরই বাড়ে জিডিপি। উদ্বৃত্ত হয় বাজেট। কিন্তু জনগণের অবস্থার উন্নতি হয় না বিন্দু পরিমাণও। বরং প্রতি বছরই দারিদ্র্যের সংখ্যা বাড়ে। প্রতি বছরই শীতার্তের সংখ্যা বাড়ে। কর্মহীনের সংখ্যা বাড়ে। শীতে মৃতদের মিছিল দীর্ঘায়িত হয়। শৈত্যপ্রবাহ প্রতি বছরই হানা দেয়। তারপরেও সরকারের টনক নড়ে না। সরকারের চৈতন্যোদয় হয় না। সরকার জনগণকে কিছু মনে করে না। জনগণের কষ্টে কষ্ট পায় না। জনগণের অভাব অভিযোগ সরকারের দৃষ্টি কাড়ে না। বিশেষ করে দরিদ্র জনসাধারণের কষ্ট লাঘবে সরকারের আগ্রহ দেখা যায় না।
প্রসঙ্গত, শীতে জবুথবু গোটা দেশ ও জনগণ। ঘন কুয়াশার চাদরে সারাদিন ঢাকা থাকছে আকাশ। কনকনে ঠান্ডার সঙ্গে বইছে হিমেল বাতাস। কাহিল থেকে কাহিলতর হয়ে পড়ছে লোকজন।
বরাবরের মতো এবারো উত্তরাঞ্চলের ছিন্নমূল মানুষ শীতে বিপর্যস্ত হচ্ছে। আগুন পোহানোর মতো জ্বালানিও নেই তাদের। এদিকে দিনের বেলায় প্রায়ই রোদের মুখ দেখা যাচ্ছে না। উপরন্তু এরই মধ্যে দেখা দিয়েছে শীতজনিত রোগব্যাধির প্রকোপ।
অভিজ্ঞতা থেকে বলতে হয়, দেশের হতদরিদ্র-ছিন্নমূল মানুষের জীবনমরণ সমস্যাকে কখনো জাতীয় সমস্যা হিসেবে গণ্য করা হয় না। দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে ঘিরে থাকে শীত তো বটেই, সব ঋতুতেই এদের ভোগান্তি নানা মাত্রা ধারণ করে। বর্ষায় এরা ভিজে, শীতে এরা জবুথবু, গ্রীষ্মে এরা বিপর্যস্ত।
দেখা যাচ্ছে শুধু বন্যা আর খরাই নয় অথবা জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড় আর সিডরই নয়, মাত্রাতিরিক্ত শীতও নিঃসন্দেহে একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ। কিন্তু এই দুর্যোগটি এমন নয় যে, এর বিপরীতে কোনো ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব নয়। শীত মওসুমে কয়েকটি শৈত্যপ্রবাহ দেশের উপর দিয়ে বয়ে যেতে পারে এটা জানা কথা। সে অনুযায়ী সরকারের প্রয়োজনীয় আগাম ব্যবস্থা নেয়াও দুঃসাধ্য কিছু নয়। কিন্তু এ ব্যাপারে সব সরকারের আমলেই আমাদের খুবই হতাশাজনক চিত্র দেখতে হয়।
সরকার ২/১ দিন কোনো কোনো স্থানে নামমাত্র পুরনো কাপড় বা কম্বল ত্রাণসামগ্রী হিসেবে বিতরণ করে। স্থানীয় প্রশাসন ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের কাছে প্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রী পাঠানোর জন্য আবেদন পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু সেগুলো কখনোই সময়মতো পৌঁছে না। এবং যা পৌঁছায় তাও বেহাত হয়। শীতার্তরা শুধুই কষ্ট পায়।
শীতবস্ত্রের অভাবে প্রাণহানি ঘটা খুবই মর্মান্তিক। এটা সরকার মেনে নিচ্ছে কী করে? চুপ থাকছে কীভাবে? সরকার যদি যথাযথভাবে তৎপর হয় পাশাপাশি দেশের অবস্থাসম্পন্নরা যদি একটু মানবিক হন, তাহলে শীতের কারণে কোনো মানুষের মৃত্যু ঘটতে পারে না। শীতার্ত মানুষের কষ্ট লাঘবে অবিলম্বে সরকারকে তৎপর হতে হবে। পাশাপাশি এনজিও বা বেসরকারি সংস্থা, সামাজিক ও সমাজের বিত্তবান গোষ্ঠীসহ সকলের মানবিক ভূমিকাও এ ক্ষেত্রে বলার অপেক্ষা রাখে না। বলাবাহুল্য, সরকারসহ সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা থাকলে শীতজনিত কারণে কোনো দুর্ভোগ পোহাতে হবে না কাউকে।
মূলত, এটা তখনই সম্ভব, যখন জনগণের মাঝে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার চেতনার প্রসার ঘটবে। এছাড়া কেউ শীতবস্ত্র প্রদান করলে তা হয় শুধু লোকদেখানো বা ছবি তোলা ভিত্তিক কার্যক্রম। উল্লেখ্য, পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বস্ত্রহীন (শীত বস্ত্র হীনও এক্ষেত্রে অন্তর্ভুক্ত) বস্ত্র দানের অনেক ফযীলত বর্ণনা করা হয়েছে। এক্ষেত্রে আমাদের নামধারী আলিমদের কোনো ভূমিকা নেই বললেই চলে। অথচ পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের মধ্যে এর আবেদন অনেক।
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস আলাইহিস সালাম তিনি বর্ণনা মুবারক করেন। আমি মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলতে শুনেছি, "যে মুসলমান অপর কোনো মুসলমানকে একটি কাপড় পরাবে, সে মহান আল্লাহ পাক উনার হিফাযতে থাকবে, যে পর্যন্ত কাপড়ের এটি টুকরাও তার গায়ে থাকবে।" (পবিত্র আহমদ শরীফ ও পবিত্র তিরমিযী শরীফ)
হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, "যে মুসলমান অপর কোনো মুসলমানকে তার বস্ত্রহীনতায় কাপড় পরাবে, মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে বেহেশতী সবুজ পোশাক পরিধান করাবেন।" (পবিত্র আবু দাউদ শরীফ ও পবিত্র তিরমিযী শরীফ)
বলাবাহুল্য, পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের মধ্যে বস্ত্রহীন তথা শীতার্তকে শীতবস্ত্র দানের এরূপ ফযীলতের কথা বহু প্রসঙ্গে বহুবার বলা হয়েছে; যার চেতনা শতকরা ৯৭ ভাগ মুসলমানের এদেশে সব আহাজারিই দূর করতে পারে।
আজকে সরকার এখনো মাত্রাতিরিক্ত শীতকে দুর্যোগ বলে ঘোষণা দেয়নি- এটা সত্যিই নির্মম। তবে এক্ষেত্রে সরকারকে তার সীমিত পরিসরে কিছু করলেই চলবে না, বরং বৃহৎ পরিসরে করার অভিপ্রায় দেশের সাতানব্বই ভাগ অধিবাসী মুসলমানের মাঝে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার চেতনা প্রসারের দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে।

সরকারের নিস্ক্রিয়তা, দুঃশাসন ও দুর্নীতির কারণে শীতে মারা যায় শত শত লোক। চরম ভোগান্তিতে পড়ে লক্ষ লক্ষ লোক।
এবারের মর্মান্তিক শীতে সরকারি সাহায্যের হাত এখনো না বাড়ানো মর্মান্তিক।
মূলত, এসব অনুভূতি ও দায়িত্ববোধ আসে পবিত্র ঈমান ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাদের অনুভূতি ও প্রজ্ঞা থেকে। 

Viewing all articles
Browse latest Browse all 6050

Trending Articles