কেউ রায় মেনে নিয়েছেন, কেউ মানেননি! তবে যারা ভবিষ্যতের দিকে তাকান তারা নিশ্চয়ই ধারণা করে নিয়েছেন এই রায়ের মধ্য দিয়ে জামাত আপাতত প্রতিরোধ তৈরী করতে সক্ষম হয়েছে। তারা সামনে চক্রান্ত অব্যাহত রাখবে এই যুদ্ধাপরাধীকে বের করে নিতে এবং এই সাঈদি যদি কোনমতে প্রাপ্য সাজা থেকে পার পেয়ে যায় - বাংলার কপালে এই লোকটা দুর্দশা নিয়ে আসবে। এর একটাই কারণ ইতিহাসে লেখা থাকবে- সাঈদিকে তার যথাযোগ্য শাস্তি দেয়া হয় হয়নি! সেরকম পরিস্থিতি আসলে নিজের বিবেকের আয়নায় কি জবাব দেবেন?
আসুন চেষ্টা করি, রিভিউ পিটিশনের দাবী তুলি। অন্তত বলতে তো পারবো আমাদের চেষ্টাটা আমরা করেছিলাম। রাজথের সংগ্রাম চলছে, চলবে। নিজের দায়িত্ববোধ থেকে সবাই প্রতিটি অবস্থান থেকে এগিয়ে আসবেন বলে আমাদের বিশ্বাস।
এই দেশের জল, মাটিতে আমরা বড় হয়েছি।
এর প্রতি আমাদের অসীম দায়। আসুন যার যার অবস্থান থেকে অনলাইন, রাজপথ সব জায়গায় এ নিয়ে কথা বলি। নিজের বিবেকের কাছে নিজে পরিষ্কার থাকি। সবার প্রতি করজোড়ে এই অনুরোধ রইলো!
অনেকেই জিগাশ করছে এই ইভেন্ট কেন খোলা হলো, এই ইভেন্টের কাজটা কি?
এইবার আমি উত্তর দিয় সব কিছুর। এইটা একটি অনলাইন ইভেন্ট, ইভেন্টটি খোলা হয়েছে সাঈদির রায়ের রিভিউ পিটিশনের দাবি নিয়ে। আমরা চাইছি অনলাইনে এই দাবির পক্ষের মানুষদের একত্রিত করে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষন করতে, আমরা বুঝিয়ে দিতে চাই আমরা সংখ্যায় অনেক যারা একজন যুদ্ধপরাধির আমৃত্যু যাবজ্জীবন কারাদন্ডের রায় মন থেকে মেনে নিতে পারছিনা।
এখন অনেকে প্রশ্ন করবে অনলাইন ইভেন্ট করে আদৌ কি কিছু করা সম্ভব? তাদের উদ্ধেশ্যে আমার উত্তর ২০১৩ র সেই গনজাগরন কিন্তু এরকম একটা ইভেন্টের মাধ্যমেই হয়েছিল।
ইভেন্ট এখন আপাতত অনলাইনেই সীমাবদ্ধ রাখতে চাই, আমরা প্রথমে এই অনলাইনের মাধ্যমে ঐকবদ্ধ হয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষন করার চেষ্টা করি, তারপরো কিছু না হলে, পরেরটা পরে দেখা যাবে, ইতিমধ্যে শাহবাগে অনেকেই আছেই, দরকার হলে আমরা সবাই আবার তাদের সাথে সেই ২০১৩ র উত্থাল ফেব্রুয়ারির মত ঐক্যবদ্ধ হবো।
আপাতত সবাই ফোকাস করুন অনলাইনে, যে যেইভাবে পারুন সবাইকে ইনভাইট করুন, এবং আমাদের সাথে একাগ্রতা প্রকাশ করতে বলুন। আজ থেকে ২০-২৫ বছর পর আপনার বাচ্ছাকে যখন দেশের ইতিহাস বলতে যাবেন, তখন কি বলবেন???
আমাদের দেশে একটি রাজাকার ছিল, যাকে আমৃত্যু পর্যন্ত আমাদেরই জনগনের টাকায় তার ভরনপোষন করা হয়েছিল, কিন্তু আমরা কিছুই করতে পারিনি..…।
'' আমরা কিছুই করতে পারিনি '' এইরকম বলার মানুষদের মধ্যে আমি নেই, যতটুক পারি আমরা ততটুক করেছিলাম, পরবর্তী প্রজন্মকে এই কথাটা হলেও যাতে বলতে পারি তাই এই ইভেন্ট, তাই এই ঐক্যবদ্ধ হওয়া। দেশের জন্য না হোক, পরবর্তি প্রজন্মকে এই কথাটা বলতে পারার জন্য হলেইও থাকুন আমাদের সাথে।
দেখা যাক না এর শেষ কোথায় হয়?
জয় বাংলা, দেখা হবে বিজয়ে।
{ এইবার কিভাবে একত্রে আপনার ফ্রেন্ডলিস্টের সবাইকে ইনভাইট পাঠাতে পারবেন তা বলিঃ
১। মজিলা ফায়ারফক্স থেকে এড অনসে ক্লিক করুন।
২। সার্চ বারে "Facebook select all" লিখে সার্চ দিন।
৩। সার্চের রেজাল্টে " facebook select all o.rev18.1" এর ডানপাশে দেখুন ইনস্টল লেখা আছে। সেখানে ক্লিক করে এড অনসটি ব্রাউজারে এড করে নিন।
৪। ফেসবুকে লগ ইন করে ইভেন্টে আসুন। ইনভাইট অপশনে ক্লিক করুন। এরপরে "Choose friends" অপশনে ক্লিক করুন। এবার বন্ধু তালিকাটি ডিসপ্লেতে আসলে কার্সর টেনে নীচে যেতে থাকুন যতক্ষন না সব বন্ধু একত্রে তালিকায় দৃশ্যমান হয়।
৫/ ব্রাউজারের উপরে সর্বডানে দেখুন সবুজ একটি টিকচিহ্ন দেখা যাচ্ছে। সেখানে ক্লিক করুন। এবার সামান্য কিছুক্ষন অপেক্ষা করুন। এরপরে "Send" বাটনে ক্লিক করুন।
দেখবেন আপনার লিস্টের সবাই ইভেন্টে ইনভাইট হয়ে গিয়েছে।। }}}
সাঈদীর আপিল মামলার রিভিউ নিয়ে কিছু কথা
১. রাষ্ট্রপক্ষ সুপ্রিম কোর্ট অব বাংলাদেশ (আপীল বিভাগ) রুলস ১৯৮৮ এর অর্ডার ২৬ অনুযায়ী রিভিউ করতে পারে। সংবিধানের ১০৫ অনুচ্ছেদ রাষ্ট্রপক্ষকে সেই অধিকার নিশ্চিত করেছে। যুদ্ধাপরাধীদের জন্য সংবিধানের ৪৭ক(২) প্রযোজ্য হলেও রাষ্ট্রপক্ষের জন্য তা প্রযোজ্য হবে না। সুতরাং সাঈদীর আপিল মামলার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের রিভিউ করতে কোনো বাধা নেই।
২. সুপ্রিম কোর্ট অব বাংলাদেশ (আপীল বিভাগ) রুলস ১৯৮৮ অনুযায়ী রিভিউ করতে হবে রায় ঘোষণার ৩০ দিনের মধ্যে। এটি কি সংক্ষিপ্ত রায় ঘোষণা নাকি পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ বুঝাবে তা নির্ধারণে অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসকে সক্রিয় হতে হবে। তবে রীতি হচ্ছে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর রিভিউর জন্য আবেদন করা যায়।
৩. সুপ্রিম কোর্ট অব বাংলাদেশ (আপীল বিভাগ) রুলস ১৯৮৮ এর অর্ডার ২৬, রুল ৩ অনুযায়ী নতুন প্রমাণ উদঘাটনের প্রেক্ষিতে রিভিউ করার সুযোগ রয়েছে। (... when the application proceeds on the ground of a discovery of fresh evidence....)
একাত্তর টিভিতে এক টকশোতে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল তদন্তে তথ্যপ্রাপ্তির ঘাটতির কথা বলেছেন। এই বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া উচিত।
ট্রাইব্যুনালে প্রমাণিত ইব্রাহিম কুট্টি হত্যার অভিযোগে রায় মৃত্যুদণ্ড থেকে আপিল বিভাগে গিয়ে কেনো প্রমাণিত হওয়ার পরেও মাত্র ১২ বছরের কারাদণ্ড হলো তা বড় প্রশ্ন।
বিসাবালিকে নারিকেলগাছের সঙ্গে বেঁধে গুলি করে হত্যা এবং পিরোজপুরের উমেদপুর গ্রামের হিন্দুপাড়ার ২৫টি ঘরে আগুন দেওয়ার অপরাধ প্রমাণিত হওয়ার পর ট্রাইব্যুনাল থেকে সেখানে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে তা আপিল বিভাগে এসে প্রমাণিত হওয়ার পরেও কেনো তা আমৃত্যু কারাদণ্ডে পরিবর্তিত হলো তাও বড় প্রশ্ন। তবে কি আইনের সেই প্রিন্সিপাল কেবলই ঠুনকো কথা – 'শাস্তি হবে অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী (gravity of crime)?
প্রয়োজনে পিরোজপুরে যাওয়া হোক। সেখানে বিসাবালি হত্যাসংক্রান্ত কোনো নতুন তথ্যপ্রমাণ পেলে উঠিয়ে আনা হোক। তা সংযুক্ত করেই করা হোক রিভিউ আবেদন।
রাষ্ট্রপক্ষ এইটুকু করতে আন্তরিক তো? নাকি সর্বোচ্চ আদালত থেকে একটা রায় পেয়েই খুশি?