সিবিআই সিবিআই
কান টানলে মাথা আসে
সত্যি,তাই
মাথা এলে,
যাবে কার কাছে
ভাবি শুধু তাই
সারদা তদন্ত- মদন মিত্রের প্রাক্তন আপ্তসহায়কের বাড়িতে সিবিআই তল্লাসি। পল্টু দাস, আসিফ খানের বাড়িতে হানা
পলাশ বিশ্বাস
প্রসঙ্গ সারদা তদন্ত
সারদা গ্রুপের বেআইনি আমানত সংগ্রহের ঘটনার তদন্তে কয়েকজন রাজনৈতিক নেতার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে সিবিআই। গতকাল বৃহস্পতিবার আসাম, পশ্চিমবঙ্গ ও মুম্বাইয়ের ২৩ জায়গায় তল্লাশি চালায় সিবিআই। এর মধ্যে রয়েছেন আসামের কংগ্রেস নেতা হেমন্ত বিশ্ব শর্মা, তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা মদন মিত্রের এক ঘনিষ্ঠজন, তৃণমূল কংগ্রেসের সাবেক নেতা আসিফ খান।
সিবিআই সিবিআই
কান টানলে মাথা আসে
সত্যি,তাই
মাথা এলে,যাবে কার কাছে
ভাবি শুধু তাই
বাপি করিম
পরিবহণ মন্ত্রী মদন মিত্রের প্রাক্তন আপ্তসহায়ক বাপি করিমকে সারদা-কাণ্ডে শুক্রবার জেরা করল সিবিআই। গতকাল তাঁর মোমিনপুরের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছিলেন গোয়েন্দারা। এক দফা জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। কিন্তু কথাবার্তায় বিস্তর অসঙ্গতি থাকায় ফের এ দিন তলব করা হয়। তিন ঘণ্টা ধরে তাঁকে জেরা করা হয়েছে।
তদন্তে সিবিআই জানতে পেরেছে, প্রায়ই সল্ট লেকের মিডল্যান্ড পার্কে সারদা গোষ্ঠীর অফিসে যেতেন বাপি করিম। সেটা ২০১১-১২ সাল। গভীর রাতে তিনি ঢুকতেন। বেরিয়ে যেতেন হাতে মোটা প্যাকেট নিয়ে। সন্দেহ, ওই প্যাকেটে করে টাকা থাকত। প্রাথমিক তদন্তে সিবিআই দেখেছে, মন্ত্রীর সামান্য আপ্তসহায়ক ছিলেন কয়েক মাস। কিন্তু ওই অল্প সময়েই বেনামে অনেক সম্পত্তি করে নিয়েছেন। সোজা কথায় আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের সামসঞ্জস্য নেই। তাই সিবিআইয়ের নজরে পড়েছেন তিনি। সব টাকা বাপি করিম একাই হজম করেছেন বাপি ওরফে রেজাউল করিম নাকি তা ভাগ দিয়েছে কাউকে, সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় সারদা গোষ্ঠীর ব্যবসা বৃদ্ধির পিছনে মদন মিত্রের কী ভূমিকা ছিল, তাও জানতে চাওয়া হয় তাঁর কাছে।
কে এই বাপি করিম? মোমিনপুরের একটি নিম্নবিত্ত পরিবারের ছেলে। তাঁর ভাই বাবলু করিম ৬৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেস নেতা। বাবলু করিম পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। সেই সুবাদে বাপিও তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। ভবানীপুরে চন্দ্রনাথ চ্যাটার্জি স্ট্রিটে একটি নার্সারি স্কুলে কাজ পান। সেখানে কাজ করতে করতেই পার্টির হয়ে খিদমত খাটতেন। ঘটনাচক্রে মদন মিত্রের চোখে পড়ে যান। মন্ত্রী হওয়ার পর মদনবাবু তাঁকে নিজের আপ্তসহায়ক পদে নিয়োগ করেন। সল্ট লেকের একটি সরকারি অতিথিশালায় থাকার ব্যবস্থা করে দেন। অভিযোগ, সেখানে অসংযমী জীবনযাপন শুরু করেন। ২০১১-১২ সালে তিনি আপ্তসহায়কের দায়িত্ব সামলান। বাপি করিমের বিরুদ্ধে নানা অসামাজিক কাজকর্মের অভিযোগ ওঠায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একদিন মদন মিত্রকে ডেকে ভর্ৎসনা করেন। তার পরই তাঁকে আপ্তসহায়কের পদ থেকে সরিয়ে দেন মদনবাবু।
২০১২ সালের শেষ দিকে এক মহিলা গড়ফা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়ে জানান, বাপি করিম তাঁকে ধর্ষণ ও খুনের চেষ্টা করেছেন। এই মামলায় তিনি আগাম জামিন নিলেও মামলাটি চলছে আদালতে। এমনকী, রাজারহাটের ফ্ল্যাটে তৃণমূল নেত্রী পিয়ালি মুখোপাধ্যায়ের রহস্যজনক মৃত্যুতেও নাম জড়িয়েছিল বাপি করিমের।
সারদা-কাণ্ডে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আবার দফায় দফায় তল্লাশি শুরু করল সিবিআই। কলকাতা ও হাওড়ার ২৫টি জায়গায় তল্লাশি চালালেন গোয়েন্দারা। ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের প্রয়াত কর্তা পল্টু দাসের বাড়িতেও হানা দেওয়া হয়েছে।
এ দিন সকালেই সিবিআইয়ের একটি দল ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের প্রাক্তন প্রয়াত কর্তা পল্টু দাসের আমহার্স্ট স্ট্রিটের বাড়িতে তল্লাশি চালায়। তাঁর স্ত্রীকে দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এই পল্টু দাসের হাত ধরেই উত্থান হয়েছিল দেবব্রত সরকার ওরফে নীতুর। এখন দেবব্রতবাবু সিবিআই হেফাজতে। সারদা গোষ্ঠীর কর্ণধার সুদীপ্ত সেন অভিযোগ করেছিলেন, ভয় দেখিয়ে নীতু তাঁর কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা নিয়েছেন। সেই অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে সিবিআই গ্রেফতার করেছে দেবব্রতবাবুকে।
তৃণমূল কংগ্রেসের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী আসিফ খানের বাড়িতেও তল্লাশি চালানো হয়েছে। আটক করা হয়েছে কিছু কাগজপত্র। এ ছাড়া হাওড়ার ব্যবসায়ী রাকেশ শরাফের বাড়িতে যান সিবিআই গোয়েন্দারা। ইনিও সারদা কেলেঙ্কারিতে লাভবান হয়েছেন বলে অভিযোগ। দুই ব্যবসায়ী সজ্জন আগরওয়াল ও সন্ধির আগরওয়ালের বাড়িতেও দল বেঁধে হানা দেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। এ ছাড়া পরিবহণ মন্ত্রী মদন মিত্রের প্রাক্তন আপ্ত সহায়ক বাপি করিমের বাড়িতে তল্লাশি চালায় সিবিআই। বিধায়ক অঞ্জন দত্তের বাড়িতেও হানা দেন গোয়েন্দারা।
কলকাতা, ২৩ অগস্ট: ইস্টবেঙ্গল কর্তা দেবব্রত সরকারের পরে এবার প্রাক্তন পুলিশ কর্তা রজত মজুমদারকেও সুদীপ্ত সেনের সামনে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করল সিবিআই। রজত মজুমদারের পাশাপাশি দেবব্রত সরকারের অ্যাকাউন্টেন্ট এবং দেবযানীর অ্যাসিসেন্ট আমিনারাকেও আজ জেরা করলেন সিবিআই-এ তদন্তকারী অফিসাররা।
সারদা কেলেঙ্কারির জেরে যাঁরা সুবিধা পেয়েছিলেন, সেই তালিকায় রয়েছে রজত মজুমদারের নাম। ১৪ অগস্ট ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের কর্তা দেবব্রত সরকার ও রাজ্য পুলিশের প্রাক্তন অফিসার রজত মজুমদারের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছিল সিবিআই। এরপরই দেবব্রত সরকারকে গ্রেফতার করে সিবিআই। তার পরেই ফের জেরার জন্য ডেকে পাঠানো হয় রজত মজুমদারকে। এদিন প্রথমে ৪৫ মিনিট মতো সুদীপ্ত সেনের মুখোমুখি বসিয়ে রজতবাবুকে জেরা করে তদন্তকারী অফিসাররা। তারপর ফের একটি ঘরে আলাদাভাবে রজত মজুমদারকে জেরা করেন সিবিআই তদন্তকারী অফিসাররা।
সূত্রের খবর অনুযায়ী, সিবিআই জানতে পেরেছে আমেরিকায় বঙ্গ সম্মেলনের নাম সুদীপ্ত সেনের থেকে ৪ কোটি টাকা নিয়েছিলেন রজত মজুমদার। পাশাপাশি কোনও চুক্তি ছাড়াই প্রতি মাসে সুদীপ্ত সেনের থেরে ১০ লক্ষ টাকা নিতেন তিনি। সুদীপ্ত সেন কেন এই টাকা রজতবাবুকে দিতেন এবিষয়ে জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারী অফিসাররা। দেবব্রত সরকারের পর কী এবার রজত মজুমদারকেও গ্রেফতার করবে সিবিআই তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
এদিন রজত মজুমদারের পাশাপাশি দেবব্রত সরকারের হিসাবরক্ষককেও ডেকে পাঠায় সিবিআই। প্রায় ২ ঘন্টা ধরে জেরা করা হয় তাঁকে। এছাড়াও আমিনারা বলে সারদা গোষ্ঠীর গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা এক কর্মচারীকেও এদিন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। আমিনারা মিডল্যান্ড পার্কের অফিসে দেবযানীর অ্য়াসিস্টেন্ট হিসাবে কাজ করতেন। যাবতীয় আর্থিক লেনদেনের হিসাব তিনিই রাখতেন। এমনকী সিবিআই জানতে পেরেছে, একটি লাল ডায়েরি যাতে সারদার সঙ্গে কোনও না কোনওভাবে যুক্ত প্রভাবশালী নেতাদের নাম রয়েছে তা মিডল্যান্ড পার্কের অফিস থেকে সরিয়ে ফেলার জন্য ফোনে আমিনারাকে নির্দেশ দিয়েছিলেন সুদীপ্ত সেন।
এদিকে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছিল ওই ডায়েরিটি বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে। যদিও ওই লাল ডায়রির হদিশ জানেন না বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশ আধিকারিকরা। তবে কী আমিনারাই ওই গুরুত্বপূর্ণ লাল ডায়েরিটি সরিয়ে ফেলেছিলেন। মূলত লাল ডায়েরিটি কোথায় এবং কোনও প্রভাবশালী ব্যক্তির সঙ্গে কত টাকার লেন দেন হতো এই বিষয়গুলি নিয়ে আমিনারাকে এদিন জেরা করে সিবিআই। উল্লেখযোগ্য বিষয়ে ৪ ঘন্টারও বেশি সময় ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় আমিনারাকে।
কলকাতা, ২১ অগস্ট:জেল হেফাজতে কি আদৌ নিরাপদ সারদা গোষ্ঠীর কর্ণধার সুদীপ্ত সেন? নতুন করে এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে ওয়াকিবহাল মহলে। বিশেষত, বুধবার সন্ধেবেলা হঠাৎ করে তাঁর অসুস্থ হয়ে পড়ার পর সন্দেহ আরও দানা বেঁধেছে।
২০১৩ সালের এপ্রিল মাসে গ্রেফতার হয়েছিলেন সুদীপ্ত সেন। তার পর থেকে তাঁর ঠিকানা হয়েছে কখনও পুলিশ হেফাজত, কখনও আবার জেল হেফাজত। চলতি বছরের ৯ মে সিবিআই তদন্তভার পাওয়ার পর তাঁকে কিছুদিন হেফাজতে নিয়েছিল। সেই মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর এখন জেল হেফাজতেই আছেন তিনি।
আরও পড়ুন: সারদা-কাণ্ডে শাসক দলের রাজ্যসভার সাংসদের বাড়িতে হানা দেবে সিবিআই
হঠাৎ কেন সুদীপ্ত সেনের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে? ওয়াকিবহাল মহলের মতে, সুদীপ্ত সেনকে খুব অল্প সময়ের জন্য হেফাজতে নিয়েছিল সিবিআই। তখন কিছু বিস্ফোরক তথ্য তিনি দিয়েছিলেন। সেই সূত্র ধরে প্রাক্তন আইপিএস অফিসার রজত মজুমদার, ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের কর্তা দেবব্রত সরকার প্রমুখকে নিয়ে টানা-হ্যাঁচড়া শুরু হয়েছে। এমনকী, গতকাল সিবিআই গ্রেফতার করেছে দেবব্রত সরকার ওরফে নীতুকে। তৃণমূল কংগ্রেসের এক রাজ্যসভার সাংসদের বাড়িতে ও অফিসে তল্লাশি চালানোর প্রস্তুতিও নিচ্ছে সিবিআই।
এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা আবার সুদীপ্ত সেনকে হেফাজতে নিতে চায় বলে খবর। ফের তিনি সিবিআই হেফাজতে এলে আর কী কী বলবেন, কোন কোন রাঘববোয়ালদের নাম ফাঁস করবেন, সেই ভয়ে কাঁটা অনেকে। বিশেষ করে তিনি যতদিন বলছিলেন, রাজ্য পুলিশের তদন্তে আস্থা আছে, ততদিন সুদীপ্ত সেনকে নিয়ে ভয় ছিল না। কিন্তু এখন যখন সংবাদমাধ্যমের সামনে বলছেন, "আমি সিবিআই হেফাজতে যেতে চাই, আরও অনেক কিছু বলার আছে", তখন চিন্তার বিষয় বৈকি! মঙ্গলবার সিউড়ি আদালতের বাইরে মিডিয়াকে এমন কথা বলার পর বুধবার সন্ধেবেলা তাঁর অসুস্থ হয়ে পড়াটা কতটা স্বাভাবিক, উঠছে প্রশ্ন।
কী হয়েছে সুদীপ্ত সেনের? জেল কর্তৃপক্ষ বলেছে, সুদীপ্তবাবুর রক্তচাপ অনেকটাই কম। মাথা ঘোরার সমস্যা রয়েছে। ডাক্তাররা পর্যবেক্ষণে রেখেছন তাঁকে।
সুদীপ্ত সেনকে জেল হেফাজতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে না, এই অভিযোগ তুলে এ দিন দুপুরে আলিপুর আদালতের সামনে বিক্ষোভ দেখায় কংগ্রেস। তাদের হাতে ছিল পোস্টার। কংগ্রেস কর্মীদের অভিযোগ, জেলে নানাভাবে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে সুদীপ্ত সেনের ওপর।
বিজেপি কি ললিপপ চুষছিল, সারদা ইস্যুতে সুর চড়ালেন মমতা
কলকাতা, ২৯ অগস্ট:সারদা কেলেঙ্কারির ভূত তাড়া করে বেড়াচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসকে। দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাই আবারও মেজাজ হারালেন। অভিযোগ করলেন, সারদা ইস্যুতে সিবিআইকে ব্যবহার করে বিজেপি রাজনীতিক প্রতিহিংসা চালাচ্ছে!
গতকাল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে ময়দানে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে ভাষণ দিচ্ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, "যখন চিটফান্ডটা চলছিল, সিপিএম কী করছিল? বিজেপি কি বসে বসে ললিপপ চুষছিল? নরেন্দ্র মোদীর ১০ হাজার কোটি টাকার নির্বাচনী খরচ কারা দিল? আমরা তো বসে থাকিনি। প্রথমে কিছু জানতাম না। যখন জানলাম, তাড়াতাড়ি কাশ্মীর থেকে সুদীপ্ত সেনদের গ্রেফতার করে আনলাম। ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা ফেরত দিয়েছি। ৫০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়েছি। তৃণমূল কংগ্রেস চিটফান্ডের টাকায় চলে না। আপনারা আসল অপরাধীদের আড়াল করছেন। সিবিআইকে ব্যবহার করে রাজনীতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করছেন। আমরা কিন্তু মরে যাইনি, সেটা মনে রাখবেন।"
বিজেপি কোনও শক্তিই নয়, দাবি করে তিনি বলেন, "সদ্যসমাপ্ত নানা রাজ্যের বিধানসভা ভোটে তোমাদের বেলুন চুপসে গিয়েছে। এর পর তোমরা রসগোল্লা পাবে।"
সম্প্রতি অপর্ণা সেনকে ইডি ডেকে পাঠানোয় তিনি বলেছেন, "উনি তো একটা কাগজে চাকরি করতেন। ওঁর মতো অনেকেই সারদার বিভিন্ন কাগজে চাকরি করতেন। তাঁদের ধরছে না কেন ইডি, সিবিআই? আসল অপরাধীদের আড়াল করার চেষ্টা হচ্ছে।"
জ্ঞাতব্যঃসুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি টি এস ঠাকুর ও বিচারপতি সি নাগাপ্পানের সমন্বয়ে গঠিত ডিভিশন বেঞ্চ সারদাকাণ্ড সিবিআইয়ের দ্বারা তদন্তের নির্দেশ দেন৷ নির্দেশে বলা হয়, সারদা-সংক্রান্ত অন্যান্য মামলাও তদন্ত করবে সিবিআই৷
পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই মামলা সিবিআইয়ের পরিবর্তে রাজ্য সরকারের পুলিশ দিয়ে তদন্ত করানোর জন্য বারবার দাবি করে আসছিল। এই লক্ষ্যে রাজ্য সরকার বিশেষ তদন্ত দল গঠন করে তদন্তও শুরু করে৷
জনস্বার্থ মামলার প্রেক্ষিতে সারদা কেলেঙ্কারির তদন্ত সিবিআইকে দেওয়ার নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট।সর্বোচ্চ আদালতের মতে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুলিসের তরফে এই আন্তঃরাজ্য বেআইনি অর্থ তছরূপের তদন্তে তেমন একটা অগ্রগতি হয়নি। তাছাড়া টাকা কোথায় গেল তা খুঁজে বাড় করাও যায়নি।কেলেঙ্কারির সঙ্গে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা জড়িত বলেও সিবিআইকে দিয়ে তদন্ত করার পক্ষে মত দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
অসম, ত্রিপুরা ও ওডিশার পক্ষে থেকে আদালতকে জানান হয় সারদা নিয়ে সিবিআই তদন্তে তাদের কোন আপত্তি নেই। তবে রাজ্য সরকারের তরফে মামলার শুরু থেকেই সিবিআই তদন্তেের আপত্তি জানান হয়। ওয়াকিবহাল মহলের ধারনা সিবিআই তদন্তের ফলে শাসক দলের অনেক নেতা-মন্ত্রীর নাম উঠে আসতে পারে বলেই রাজ্যের পক্ষে সারদা কেলেঙ্কারির তদন্তে সিবিআইকে দেওয়ার আপত্তি করা হয়েছিল। সারদা কেলেঙ্কারির তদন্ত যে সিবিআইকেই দিয়ে করাতেই চাইছে সুপ্রিম কোর্ট তা শুনানি শেষ হওয়ার সময় করা আদালতের পর্যবেক্ষণেই বোঝা যাছ্ছিল। কিন্তু ২৩ এপ্রিল রায় হওয়ার কথা থাকলেও সেই দিন রায় স্থগিত রাখে সুপ্রিম কোর্ট। ঠিক শেষ দফার ভোটের আগে সুপ্রিম কোর্টের এই রায় কি নিতান্তই কাকতালীয়!
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কোনও যুক্তিই ধোপে টিকল না। সারদা কেলেঙ্কারিতে শেষ পর্যন্ত সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। শুক্রবার বিচারপতি টি এস ঠাকুর এবং বিচারপতি সি নাগাপ্পন এই আদেশ দিয়েছেন। তদন্ত চলবে শীর্ষ আদালতের নজরদারিতে।
২০১৩ সালের এপ্রিল মাসে যখন সারদা কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে আসে, তখন থেকেই বিভিন্ন মহল থেকে সিবিআই তদন্তের দাবি উঠেছিল। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম থেকে সিবিআই তদন্তের বিরোধিতা করে আসছিলেন। তাই রাজ্য সরকার তড়িঘড়ি বিধাননগর পুলিশকে তদন্তের ভার দেয়। তদন্ত প্রক্রিয়ার পুরোভাগে ছিলেন বিধাননগর পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান অর্ণব ঘোষ। গঠিত হয়েছিল স্পেশ্যাল ইনভেস্টিগেশন টিম বা সিট। কিন্তু অভিযোগ ওঠে তারা ঠিকঠাক তদন্ত করছে না। তৃণমূল কংগ্রেসের কিছু প্রভাবশালী নেতা জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠায় রাজ্য পুলিশ সিঁটিয়ে ছিল। ইদানীং এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি বলেছে, রাজ্য পুলিশ নানাভাবে তদন্তে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছে। রাজ্য সরকার যে দোষীদের আড়াল করতে চাইছে, কিছুদিন আগে এই অভিযোগ তুলেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসেরই জেলবন্দি সাংসদ কুণাল ঘোষ। কুণালবাবু বিধাননগরে আদালতে বলেছিলেন, স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দোষীদের আড়াল করছেন।
এদিকে, সারদা কেলেঙ্কারিতে সিবিআই তদন্তের দাবি করে সুপ্রিম কোর্টে গত কয়েক মাস ধরে চলছিল জনস্বার্থ মামলা। পশ্চিমবঙ্গ সরকার আদালতকে বোঝানোর চেষ্টা করে, রাজ্য পুলিশ ৯০ শতাংশ তদন্তই সম্পূর্ণ করে ফেলেছে। এই তদন্ত নিয়ম মেনে হয়েছে। সিবিআই অতীতে কোন কোন মামলায় ব্যর্থ হয়েছে, তার ফিরিস্তিও দেওয়া হয়।
সারা দিন সারদা- তল্লাশির ঝড় | ||||
সব্যসাচী সরকার | ||||
বি জে পি-র বেলুনের হাওয়া বেরিয়ে গেছে: মমতা | ||||
দীপঙ্কর নন্দী | ||||
মন্ত্রী, সচিবের ছবি দিয়ে ভুয়ো ওয়েবসাইট, বিরাট প্রতারণা! | ||||
|
সি বি আই জেলে ভরবে রাঘববোয়ালদের: বৃন্দা | ||||
|
"মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সততায় কালি লেগে গেল", বললেন অধীর চৌধুরী
জনস্বার্থ মামলাকারীদের তরফে যুক্তি দেওয়া হয়, প্রথমত, রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের প্রত্যক্ষ মদতে এত বড় কেলেঙ্কারি হয়েছে। তাই রাজ্য পুলিশ এর তদন্ত করলে শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীরা বহাল তবিয়তে থাকবেন। দ্বিতীয়ত, এই কেলেঙ্কারির জাল ভিন রাজ্য, এমনকী বিদেশেও ছড়িয়ে রয়েছে। ফলে সিবিআই-ই ভরসা। কারণ পশ্চিমবঙ্গের বাইরে গিয়ে রাজ্য পুলিশের পক্ষে তদন্ত চালানো সম্ভব নয়। তাদের সেই এক্তিয়ার বা পরিকাঠামো, কোনওটাই নেই। তৃতীয়ত, অসম, ত্রিপুরা বা ওড়িশাতেও বহু মানুষ সারদা কেলেঙ্কারির জেরে সর্বস্বান্ত হয়েছেন। তারা যখন সিবিআই তদন্ত মেনে নিচ্ছে, তখন পশ্চিমবঙ্গ সরকারেরও আপত্তি থাকার কথা নয়। চতুর্থত, পশ্চিমবঙ্গেরও বাইরেও এমন অনেক প্রভাবশালী লোক রয়েছে, যারা সারদা গোষ্ঠীর সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিল। একমাত্র সিবিআই পারে এদের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে। পঞ্চমত, সারদা গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রথম দিকে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, সেবি, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট, কর্পোরেট-বিষয়ক মন্ত্রক কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। কেন নেয়নি, এদের কোন কোন অফিসার কেলেঙ্কারিতে যুক্ত ছিল, সেটা জানতে হলে একমাত্র সিবিআইকে তদন্তভার দেওয়া উচিত।
এই যুক্তিগুলির সঙ্গে একমত হয় সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি, বিচারপতি এটাও জানান, সারদা কেলেঙ্কারি হল 'বৃহত্তর ষড়যন্ত্র', যা লক্ষ লক্ষ মানুষকে নিঃস্ব করে দিয়েছে। সিবিআই-ই পারবে গোটা ব্যাপারে নিরপেক্ষ তদন্ত করতে। ডিভিশন বেঞ্চের পক্ষে এই রায় পড়েন শোনান বিচারপতি টি এস ঠাকুর।
লোকসভা ভোট যখন চলছে, তখন সারদা কেলেঙ্কারিতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ হওয়ায় তৃণমূল কংগ্রেস যথেষ্ট বিপাকে পড়ল সন্দেহ নেই। কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী বলেছেন, "এবার সব বেরোবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সততায় কালি লেগে গেল। আমাদের রাজ্য সরকারের সম্মান ধুলোয় মিশে গেল।" আর এক কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, "রাজ্য সরকার কিছু লোককে আড়াল করতে চাইছিল। এবার আসল সত্যিটা জানা যাবে।" সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে স্বাগত জানিয়েছেন সিপিএম নেতা সূর্যকান্ত মিশ্রও।
তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "সিবিআই এর আগে অনেক মামলায় চার্জশিটই দিতে পারেনি। আমরা সারদা কেলেঙ্কারিতে ৩৬৪টি মামলায় চার্জশিট দিয়েছি। সিপিএমের গৌতম দেব, সুজন চক্রবর্তী প্রমুখ নেতাও জড়িত। সিবিআই তদন্ত হলে সিপিএমেরও মুখোশ খুলে যাবে।"
সারদা তদন্ত- মদন মিত্রের প্রাক্তন আপ্তসহায়কের বাড়িতে সিবিআই তল্লাসি। পল্টু দাস, আসিফ খানের বাড়িতে হানা
ওয়েব ডেস্ক: সারদা তদন্তে এবার পরিবহণ মন্ত্রী মদন মিত্রের প্রাক্তন আপ্তসহায়কের বাড়িতে সিবিআই তল্লাসি। বাপি করিমের বাড়িতে হানা গোয়েন্দাদের। তল্লাসি প্রাক্তন পুলিস কর্তা দেবেন বিশ্বাসের বাড়িতেও।
সারদা কাণ্ডে শহরজুড়ে তল্লাসি চালাচ্ছে সিবিআই। প্রয়াত ইস্টবেঙ্গল কর্তা পল্টু দাসের আমহার্স্ট স্ট্রিটের বাড়িতে আজ সকালে হানা দেয় সিবিআই দল। দলে রয়েছেন একজন মহিলা অফিসারও। সকাল নটা নাগাদ এজেসি বোস রোডে সন্ধির আগরওয়াল এবং সজ্জন আগরওয়ালের অফিসে যান সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা। সেখানে এখনও তল্লাসি চলছে। আজকের কলম পত্রিকার সম্পাদক আসিফ খানের পার্ক সার্কাসের বাড়িতে আজ সকালে হানা দেয় সিবিআই। আসিফ খান সে সময় বাড়িতে ছিলেন না। সিবিআই সূত্রের খবর, প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে তল্লাসি চালিয়েও কিছুই পাওয়া যায়নি।
ব্যবসায়ী রাজেশ শরাফের শিবপুরের বাড়িতে আজ সকালে হানা দেন সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা। কিন্তু বাড়িতে সে সময় ছিলেন না রাজেশ শরাফ। এরপর তাঁরা রাজেশ শরাফের অফিসে যান। প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে ব্যবসায়ীর অফিসে তল্লাসি চলে। তবে তল্লাসিতে কিছুই পাওয়া যায়নি।
সারাদা কাণ্ডের তদন্তে ফের জেনাইটিস কর্তা শান্তনু ঘোষকে জেরা করা হচ্ছে। আজ বেলা বারোটা নাগাদ সল্টলেকে সিবিআই দফতরে যান শান্তনু ঘোষ। গতকালই দুদফায় জেরা করা হয় জেনাইটিস কর্তাকে। দুহাজার দশ সালে শান্তনু ঘোষের থেকে চ্যানেল টেন কিনেছিলেন সুদীপ্ত সেন। জেনাইটিসের গ্লোবাল অটোমোবাইলসের বাইক কারখানাও শান্তনু ঘোষের থেকে কিনে নেন তিনি। সাতটি ব্যাঙ্কে একশো উননব্বই কোটি টাকার ঋণ ছিল গ্লোবাল অটোমোবাইলসের।
তদন্তকারীদের কাছে সুদীপ্ত সেনের দাবি, সেই টাকার একাংশ শোধ করেছিলেন তিনি। চ্যানেল টেন ও গ্লোবাল অটো মোবাইলসকে সামনে রেখে যে টাকা খাটানো হয়েছিল, ইডির তদন্তে আগেই তা উঠে এসেছে। আমানতকারীদের টাকা তছরুপে দুটি ব্র্যান্ডকে কাজে লাগানো হয়েছিল বলে জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা। সিবিআইয়ের সন্দেহ, পুরো টাকা কীভাবে বিভিন্ন জায়গায় সরানো হয়েছে, শান্তনু ঘোষ সেবিষয়ে জেনে থাকতে পারেন।
সারদা কেলেংকারি তদন্তে কলকাতা, মুম্বাই, আসামে সিবিআই হানা
অমিতাভ ভট্টশালী
বিবিসি বাংলা, কলকাতা
সর্বশেষ আপডেট বৃহষ্পতিবার, 28 অগাষ্ট, 2014 12:57 GMT 18:57 বাংলাদেশ সময়
সিবিআই। মি. খান তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন নেতা ছিলেন।
এছাড়াও কলকাতার ব্যবসায়ী সজ্জন আগরওয়ালের অফিসেও বৃহস্পতিবার আবারও তল্লাশি চলেছে। মি. আগরওয়ালের ছেলে সন্ধির আগরওয়ালকে ইতিমধ্যেই সিবিআই গ্রেপ্তার করেছে।
মি. আগরওয়ালরা ভারতের এক অতি গুরুত্বপূর্ণ প্রাক্তন মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত, যদিও ওই প্রাক্তন মন্ত্রী এখন আর সক্রিয় রাজনীতিতে নেই।
সিবিআই কলকাতার ফুটবল ক্লাব ইস্টবেঙ্গলের এক প্রয়াত কর্মকর্তা পল্টু দাসের বাড়িতে এবং মুম্বইতে তাঁর মেয়ের বাড়িতেও তল্লাশি চালিয়েছে।
এই প্রয়াত কর্মকর্তার ঘনিষ্ট ইস্টবেঙ্গল কর্তা দেবব্রত সরকার গত সপ্তাহে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন।
সিবিআইয়ের সন্দেহ এই সব ব্যক্তিদের বিভিন্ন ব্যবসায়ে বেনামে টাকা যুগিয়েছিলেন সারদা গোষ্ঠীর মালিক সুদীপ্ত সেন।
এঁদের মধ্যে কেউ কেউ আবার শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেবি আর রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কর্মকর্তাদের 'ম্যানেজ' করে বেআইনি ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার জন্যও কয়েক কোটি টাকা নিয়েছিলেন মি. সেনের কাছ থেকে, এমনটাই সন্দেহ করছে সিবিআই।
তদন্তকারীদের কয়েকটি সূত্র বলছে, বেআইনিভাবে প্রায় ১৫ লক্ষ মানুষের কাছ থেকে যে আমানত সংগ্রহ করেছিল, সেই টাকা কিভাবে কোথায় সরিয়ে ফেলা হয়েছিল, এই বিষয়টিতেই এখন জোর দেওয়া হচ্ছে।
একই সঙ্গে কোন কোন রাজনৈতিক নেতা বা প্রশাসনিক কর্তা সারদা গোষ্ঠী থেকে টাকা পেয়েছেন আর বিনিময়ে কী কী সুবিধা পাইয়ে দিয়েছেন, সেটাও জানার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে কর্মকর্তারা বলছেন।
সারদার তথ্য-তালাশে আবার সেই থানায় হাজির সিবিআই
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা, ৯ অগস্ট, ২০১৪, ০৩:৪৭:০৪
বৃহস্পতিবারের পরে শুক্রবার। সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক কেলেঙ্কারির তদন্তে নেমে সিবিআই অফিসারেরা পরপর দু'দিন তথ্য-তালাশ চালালেন সল্টলেকের পাঁচ নম্বর সেক্টরে ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানায়। সিবিআই সূত্রের খবর, সারদা থেকে নানা সময়ে বিভিন্ন লোককে টাকা দেওয়ার যে-তালিকা এবং সংশ্লিষ্ট নথি পুলিশের কাছে রয়েছে, এ দিন মূলত সেগুলোই খতিয়ে দেখা হয়েছে। বহু প্রভাবশালী ব্যক্তিও সারদার টাকা নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। তবে তাঁদের নাম ওই তালিকায় নেই।
সারদার তছরুপ নিয়ে রাজ্য পুলিশের স্পেশ্যাল ইনভেস্টিগেশন টিম (সিট) বা বিশেষ তদন্তকারী দল তদন্ত শুরু করার পরে ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানাতেই যাবতীয় নথি রাখা হয়েছিল। ওখানকার অফিসারেরাই তদন্তের কাজ চালিয়েছেন। বস্তুত সিটের তদন্ত পরিচালিত হচ্ছিল ওই থানা থেকেই। তাই পরপর দু'দিন ওই থানায় গিয়ে পুলিশের বাজেয়াপ্ত করা নথি খতিয়ে দেখেন সিবিআই অফিসারেরা। বৃহস্পতিবার থানায় প্রথম হাজির হওয়ার পরে ঠিক ছিল, কয়েক দিন পরে সিবিআই আবার সেখানে যেতে পারে। কিন্তু ঠিক পরের দিনই তাদের ফের থানায় হাজির হওয়াটা তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। তদন্ত চলাকালীন পুলিশের তরফে সারদার কর্মী, আমানতকারী এবং অন্যান্য সাক্ষীর যে-সব বয়ান নথিভুক্ত করা হয়েছিল, সেগুলোও এ দিন খতিয়ে দেখা হয় বলে সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে। সিবিআইয়ের লোকজন কথা বলেছেন তদন্তকারী পুলিশ অফিসারদের সঙ্গেও। থানায় সারদা মামলার যে-সব নথি আছে, তার সঙ্গে নিজেদের সংগৃহীত তথ্য মিলিয়ে দেখছে সিবিআই।
সারদা-নথি হস্তান্তর নিয়ে রাজ্য পুলিশ এবং সিবিআইয়ের মধ্যে বেশ কিছু দিন ধরেই অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ এবং চাপান-উতোর চলছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তদন্তে নামার পরে সিবিআই বারবার অভিযোগ করেছে, রাজ্য পুলিশ ওই বেসরকারি অর্থ লগ্নি সংস্থার কাগজপত্র তাদের দিচ্ছে না। আর পুলিশের একাংশের বক্তব্য, সারদা-সম্পত্তির অধিকাংশ নথি তাদের কাছে আছে। ওই সম্পত্তির মূল্য কমপক্ষে ৭০০ কোটি টাকা। কিন্তু সিবিআই সেই সম্পত্তি সংক্রান্ত নথি নিয়ে যাচ্ছে না। এই অবস্থায় সিবিআই অফিসারেরা বৃহস্পতিবারেই প্রথম ওই থানায় গিয়ে নথিপত্র দেখেন। নথি যাচাইয়ের কাজ চলে শুক্রবারেও।
সিবিআই সল্টলেকের যে-বাড়িতে বসে সারদা-তদন্ত চালাচ্ছে, সেই একই বাড়িতে তদন্তের কাজ করছে অন্য কেন্দ্রীয় সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। সারদার যে-কর্মী ওই লগ্নি সংস্থার জমিজমা এবং অন্যান্য সম্পত্তির হিসেব রাখতেন, সেই অশোক বিশ্বাসকে ডেকে দু'দিন ধরে জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছেন ইডি অফিসারেরা। তদন্ত সংস্থা সূত্রের খবর, কোথায় কোথায় সারদার জমি রয়েছে এবং কোথায় তাদের ঠিক কতটা অন্যান্য সম্পত্তি আছে, তার সবিস্তার তথ্য রয়েছে অশোকবাবুর কাছে। এর আগেও অশোকবাবু বেশ কয়েক বার সল্টলেকের ইডি অফিসে গিয়ে এই ব্যাপারে বয়ান দিয়েছেন।
এ দিনই ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর প্রকাশ উপাধ্যায় দলবল নিয়ে সল্টলেকে ইডি-র দফতরে যান। তাঁর দাবি, সেই দলে সারদার বেশ কিছু আমানতকারীও ছিলেন। যাঁরা সারদায় টাকা রেখে আর ফেরত পাননি। সারদার সম্পত্তি বিক্রি করে যাতে এই সব আমানতকারীর টাকা ফেরতের ব্যবস্থা করা হয়, এ দিন ইডি অফিসে গিয়ে লিখিত ভাবে সেই আবেদনই জানিয়েছেন তিনি। ডায়মন্ড হারবার রোডে একটি ঠিকানায় সারদা গোষ্ঠীর বহু সংস্থাকে বিধি ভেঙে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে বলে এর আগে পুরসভার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিলেন ওই কাউন্সিলর।
সারদা কেলেঙ্কারি – ক্রমশ জড়াচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস
আশ্চর্য যে এক বছর ধরে তদন্ত করেও পশ্চিমবঙ্গের সারদা চিট ফান্ড কেলেঙ্কারির মূল প্রশ্নটিরই উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেনি পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য পুলিশ! ঠিক যে পথে হেঁটে কার্যত হইচই ফেলে দিচ্ছে সিবিআই৷
ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের বৃহত্তম আর্থিক কেলেঙ্কারিরতদন্তে মাত্র তিনটি মূল প্রশ্নের উত্তর খোঁজা ছাড়া পুলিশের কিছু করার ছিল না৷ এক, বাজার থেকে ঠিক কত টাকা তুলেছিল সারদা চিট ফান্ড, দুই, সেই টাকা কোথায় গেল এবং তিন, কে বা কারা এর দৌলতে লাভবান হয়েছিল৷ অথচ টানা এক বছর ধরে তদন্ত করেও এই তিনটি বিষয়ে প্রায় কিছুই জানতে পারেনি রাজ্য পুলিশের ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট বা সিআইডি৷ ফলে কলকাতা হাইকোর্টে রাজ্য সরকারের পক্ষে যতই জোরালো সওয়াল করা হোক না কেন যে সারদা কেলেঙ্কারির তদন্ত ঠিক পথেই এগোচ্ছে, তা খারিজ করে ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই-কে তদন্তের ভার দেওয়ার পক্ষে রায় দেয় আদালত৷
সিবিআই তদন্ত শুরু করার পর বার বার অভিযোগ ওঠে রাজ্য পুলিশের তরফ থেকে চরম অসহযোগিতার৷ এই মামলার প্রধান আসামী সারদা-কর্তা সুদীপ্ত সেন এবং অন্য এক অভিযুক্ত, তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ,পরবর্তীতে দল থেকে সাসপেন্ড হওয়া সাংবাদিক কুনাল ঘোষ – দুই বিচারাধীন বন্দিই বার বার অভিযোগ করেন যে রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দারা তদন্তের নামে কার্যত সারদা দুর্নীতির তথ্য-প্রমাণ লোপাট করতে ব্যস্ত৷ তা সত্ত্বেও রাজ্য সরকার এই তদন্ত সম্পর্কে আদতে কতদূর দায়িত্বজ্ঞানহীন, তা সম্প্রতি ফের বোঝা গেল সারদা-নথি বোঝাই গোটা একটি আলমারি হারিয়ে যাওয়ার ঘটনায়৷ প্রশাসন তখনও নির্বিকার প্রতিক্রিয়া দিয়েছিল যে, রাইটার্স বিল্ডিং থেকে নবান্ন ভবনে সচিবালয় সরানোর সময় সম্ভবত আলমারিটি অন্য কোথাও রাখা হয়েছে!
তবু এই মামলার তদন্তে পশ্চিমবঙ্গে সিবিআই-এর প্রথম গ্রেপ্তারিটি অনেকেরই ঘুম কেড়ে নিয়েছে৷ কলকাতার দুই প্রধান ফুটবল ক্লাবের অন্যতম ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের কর্তা দেবব্রত সরকারকে কয়েক দফায় জেরার পর গ্রেপ্তার করেছে সিবিআই৷ বিতর্কিত এই ক্লাবকর্তা সারদার চিট ফান্ড ব্যবসা অবাধে চলার জন্য ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক এবং দেশের আর্থিক লেনদেন নিয়ামক সংস্থা সেবি-র কিছু দুর্নীতিগ্রস্ত কর্তার সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতেন বলে অভিযোগ৷ এবং সারদা-মালিক ফেরার হওয়ার আগে সিবিআই-কে যে চিঠি লিখে গিয়েছিলেন, তাতে তিনি জানিয়েছিলেন যে ওই রক্ষাকর্তার ভূমিকা পালন করার জন্য দেবব্রত সরকারকে তিনি কোটি কোটি টাকা দিয়েছেন প্রায় তিন বছর ধরে৷
এছাড়াও সুদীপ্ত সেনের অভিযোগ ছিল, চিট ফান্ড ব্যবসার মাধ্যমে যে বিপুল অঙ্কের টাকা বাজার থেকে সারদা তুলেছিল, তা বেশিটাই খরচ হয়েছে রাজনৈতিক নেতাদের দিতে, বা চাপে পড়ে অলাভজনক সংস্থা বাজারদরের থেকে অনেক বেশি দামে কিনতে গিয়ে৷ এ ছাড়া মিডিয়া ব্যবসায় লগ্নি করাটাও ভুল ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছিলেন সারদা-কর্তা৷ কেন্দ্রীয় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট এই প্রতিটি অভিযোগ খুঁটিয়ে দেখছে এবং এর মধ্যেই তদন্তে ধরা পড়েছে, রাজ্যের বস্ত্রমন্ত্রী, তৃণমূল বিধায়ক শ্যামাপদ মুখার্জি প্রাপ্যের থেকে অনেক বেশি দামে নিজের একটি লোকসানে চলা সিমেন্ট কারখানা সারদা গোষ্ঠীর কাছে বিক্রি করেছিলেন৷ কেন, সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে ইডি৷
যেমন একইভাবে একটি খবরের কাগজ সুদীপ্ত সেনকে কিনতে বাধ্য করেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের আর এক রাজ্যসভার সাংসদ আহমেদ হাসান ইমরান৷ তিনি আবার সুদীপ্ত সেনের থেকে টাকা নিয়েছিলেন, কিন্তু কাগজের মালিকানা হস্তান্তর করেননি! তাঁকেও সমন পাঠিয়েছিল সিবিআই, কিন্তু তিনি হাজির না হওয়ায় এখন আদালতে গিয়ে তাঁর নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার কথা ভাবা হচ্ছে৷ তাঁর বাড়িতেও তল্লাসির জন্য হানা দিতে পারেন সিবিআই গোয়েন্দারা৷ এদিকে সুদীপ্ত সেন স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে আদালতে আর্জি জানিয়েছিলেন যে তাঁকে সিবিআই হেফাজতে পাঠানো হোক, কারণ তাঁর অনেক কিছু বলার আছে৷ আদালত সেই আর্জি মঞ্জুর করেছে৷
অন্যদিকে ইস্টবেঙ্গল কর্তা দেবব্রত সরকার সিবিআই-এর জেরার জবাবে অনেক তথ্যই ফাঁস করছেন৷ যেমন জানা গিয়েছে যে সুদীপ্ত সেনকে চাপে রেখে নিয়মিত আদায় করা কোটি কোটি টাকার এক বড় অংশ আরও দুই ক্লাবকর্তা নিজেদের ব্যবসায় খাটাতেন৷ সেই দুই কর্তারও এবার ডাক পড়বে বলে অনুমান৷ এবং রাজ্যের রাজনৈতিক মহলের ধারণা, একে একে অনেক মাথাই এবার কাটা পড়বে৷ সিবিআই-এর খাঁড়া তাঁদের মাথার উপর ঝুলছে এবং ক্রমশ জাল গুটিয়ে আনছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা৷
রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেস সরকার কেন সিবিআই-কে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার ঘোরতর বিরোধী ছিল, সেটাও ক্রমশ স্পষ্টতর হচ্ছে!
''সিবিআই-এর বাবা তদন্ত করলেও আপত্তি নেই!''
ভারতে বহু চেষ্টা করেও সারদা আর্থিক কেলেঙ্কারির সিবিআই তদন্ত ঠেকানো গেল না! যদিও ভাঙবেন, তবু মচকাবেন না পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়!
''সারদা নিয়ে রাজ্য সরকারের আর কোনও দায় রইল না৷ এবার সিবিআই সবার টাকা ফেরত দেবে,'' বললেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী৷ সারদা চিট ফান্ডের হাতে লক্ষ লক্ষ সাধারণ মানুষের প্রতারিত হওয়ার ঘটনার তদন্ত করবে ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই– শুক্রবার ভারতের সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের পর এটাই ছিল মমতার প্রতিক্রিয়া৷ এক নির্বাচনি জনসভায় দাঁড়িয়ে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ''সিবিআই কেন, সিবিআইয়ের বাবা তদন্ত করলেও আপত্তি নেই৷ আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে শুরু করেছিল রাজ্য সরকার৷ এবার সিবিআই টাকা ফেরত দেবে৷''
উল্লেখ্য, রাজ্য সরকার শুরু থেকেই চেষ্টা করে গিয়েছে যাতে সারদা আর্থিক কেলেঙ্কারির তদন্ত সিবিআই-এর হাতে না চলে যায়৷ সেই সওয়ালের পক্ষে যুক্তি হিসেবে রাজ্য সরকার বরাবর এটাই বলেছে যে, কমিশন তৈরি করে প্রতারিতদের টাকা ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে৷ অন্যদিকে রাজ্য পুলিশের যে বিশেষ তদন্তকারী দলের হাতে সারদা প্রতারণার তদন্তের ভার দেওয়া আছে, তাদেরও অগ্রগতি এবং সাফল্যের দাবি করেছিল রাজ্য সরকার৷ কিন্তু সম্প্রতি কেন্দ্রীয় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের তদন্তে রাজ্য পুলিশের কাজের অনেক ভ্রান্তি এবং গাফিলতি প্রকাশ পেয়েছে৷ শেষ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টও আর রাজ্যের তদন্তে আস্থা রাখতে পারল না৷
ভারতের নির্বাচন ২০১৪
জনগণের সরকার
ভারতের সংসদের মেয়াদ পাঁচ বছর৷ পার্লামেন্টে দুটি কক্ষ রয়েছে৷ উচ্চকক্ষকে বলা হয় রাজ্যসভা আর নিম্নকক্ষ লোকসভা হিসেবে পরিচিত৷ নিম্নকক্ষে যে দল বা জোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় তারাই দেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করে৷
সর্বোচ্চ আদালত রায় ঘোষণার সময় জানিয়েছে, সারদা সংস্থার প্রতারণার জাল কেবল পশ্চিমবঙ্গেই নয়, প্রতিবেশী রাজ্য ওড়িশা এবং আসামেও ছড়িয়ে আছে৷ চিট ফান্ড প্রকল্পের মাধ্যমে আত্মসাৎ করা কয়েক হাজার কোটি টাকা সম্ভবত বিদেশে পাচার হয়েছে বিভিন্ন সময়ে৷ কাজেই সিবিআইয়ের মতো কোনও উচ্চ পর্যায়ের সংস্থাই এই মামলার তদন্তের জন্য উপযুক্ত৷ এখন থেকে সিবিআই স্বাধীনভাবে তদন্ত করবে, তাদের সাহায্য করবে রাজ্য পুলিশ৷ চিট ফান্ড সংক্রান্ত অন্যান্য মামলাও হাতে নিতে পারবে সিবিআই৷ শুধু সারদা নয়, রাজ্যের আরও ১৭টি চিট ফান্ড সিবিআই তদন্তের আওতায় আসবে৷
রাজ্য সরকারের তরফে অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র অবশ্য সাংবাদিক সম্মেলন করে জানালেন, তাঁরাও এই রায়কে স্বাগত জানাচ্ছেন৷ তবে অর্থমন্ত্রী একই সঙ্গে দোষ চাপালেন কেন্দ্রীয় সরকারের ঘাড়ে যে, রাজ্যে চিট ফান্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার উপযুক্ত আইন ছিল না৷ রাজ্য সরকার দু-দুবার নতুন আইনের খসড়া পাঠিয়েছে, কেন্দ্র তবু কোনও উদ্যোগ নেয়নি আইন আনার৷ এবং সেই পুরনো কথাই বললেন অমিত মিত্র যে, পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকারের আমলে চিট ফান্ডের কারবার শুরু হয়েছিল৷ এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট যদিও বলছে, সারদার ব্যবসা ফুলেফেঁপে উঠেছিল ২০১১ সাল থেকে, অর্থাৎ গত তিন বছরে, তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর থেকে৷
বামফ্রন্টের তরফে বিমান বসু এদিন সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের কয়েকটি বিশেষ মন্তব্যের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন৷ সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, সারদা চিট ফান্ডের কর্তাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল, এমন লোকজনকে রাজ্যসভায় মনোনয়ন দিয়ে সাংসদ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস৷ বিমান বসুর বক্তব্য, সবাই ভাবছেন সর্বোচ্চ আদালত কেবল তৃণমূল সাংসদ, বর্তমানে জেলবন্দি সাংবাদিক কুনাল ঘোষের কথাই বলছে৷ কিন্তু একা কুনাল নন, কে ডি সিং-ও তৃণমূলের সাংসদ, যিনি নিজে অ্যালকেমিস্ট নামে একটি চিট ফান্ডের মালিক৷
প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গের যে কোনও চিট ফান্ডকে সিবিআইতার তদন্তের আওতায় নিয়ে আসতে পারে বলে সুপ্রিম কোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছে, তাও একবার মনে করিয়ে দেন রাজ্য বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান৷ সেইসঙ্গে দাবি তোলেন, সারদা সংস্থার সঙ্গে যাঁরা সরাসরি যুক্ত ছিল, নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে তাদের সবাইকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে৷ মন্তব্য করেন, যারা সারদার অনুষ্ঠানমঞ্চে থাকত, প্রদীপ জ্বালিয়ে উদ্বোধন করত, সুদীপ্ত সেনকে দরাজ সার্টিফিকেট দিত, তাদের এবার ধরুক পুলিশ৷ বিমান বসুর ইঙ্গিত অবশ্যই ছিল রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্রের দিকে৷ বাংলা নিউজ চ্যানেলগুলি রায় ঘোষণার পর থেকেই সেইসব অনুষ্ঠানের পুরনো টিভি ফুটেজ দেখাতে শুরু করেছে৷
সারদা আর্থিক কেলেঙ্কারির সিবিআই তদন্তের আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন রাজ্যের কংগ্রেস নেতা আবদুল মান্নান৷ তিনি এদিন সর্বোচ্চ আদালতের রায় ঘোষণার পর সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে বলেছেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জায়গা থেকে নয়, তিনি এই কেলেঙ্কারির সর্বোচ্চ পর্যায়ের নিরপেক্ষ তদন্ত চেয়েছিলেন কেবল ক্ষতিগ্রস্ত গরিব মানুষরা যাতে ন্যায়বিচারের সুযোগ পান, সেই কথা ভেবে৷ কারণ, রাজ্য সরকার লক্ষ লক্ষ খেটে খাওয়া মানুষের অসহায়তা, হতাশার কথা বুঝতে চাইছিলেন না৷
সারদা কেলেঙ্কারি প্রশ্নের মুখে সিবিআই তদন্ত প্রক্রিয়া
সকালের খবর ডেস্ক
সারদা কেলেঙ্কারিতে প্রশ্নের মুখে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআইয়ের তদন্ত প্রক্রিয়া। আদালতে বাজেয়াপ্ত নথির তালিকা পেশে ব্যর্থ হয়েছে সংস্থাটি। সিবিআই আইন ভঙ্গ করেছে বলে অভিযোগ, অভিযুক্ত পক্ষের। এদিকে সুদীপ্ত, দেবযানীসহ ছয় অভিযুক্তের ১২ আগস্ট পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। জি নিউজ।
আলিপুর আদালতে শুক্রবার জামিনের আবেদন জানান সুদীপ্ত, কুণালসহ ছয় অভিযুক্তই। এ সময় তাদের জামিনের বিরোধিতা করে সিবিআই। সিবিআইয়ের বিরোধিতার প্রধান হাতিয়ার ছিল সাম্প্রতিক নথি উদ্ধার। তদন্তকারীরা বৃহস্পতিবার সারদা গোষ্ঠীর অফিসসহ কলকাতার দশটি জায়গায় তল্লাশি চালান। শুক্রবার আদালতকে তারা জানান, বহু গুরুত্বপূর্ণ নথি মিলেছে এই তল্লাশিতে। ধৃতরা জামিন পেলে সেই তথ্যপ্রমাণ নষ্ট করার চেষ্টা করতে পারেন। তদন্ত প্রভাবিত করার চেষ্টাও করতে পারেন বলে অভিযোগ করে গোয়েন্দা সংস্থাটি। তদন্ত প্রক্রিয়া যাতে ব্যাহত না হয়, সেজন্য তাদের জামিন না দেওয়াই উচিত। এই বক্তব্যের চূড়ান্ত বিরোধিতা করেন অভিযুক্তের আইনজীবীরা।
- See more at: http://www.shokalerkhabor.com/2014/08/05/143625.html#sthash.YobV8zQS.dpuf
নিজস্ব প্রতিবেদন
২৯ অগস্ট, ২০১৪
মরে যাইনি, পাল্টা হুঁশিয়ারি মমতার
সারদা-কাণ্ডে সিবিআইয়ের তদন্তে সহযোগিতা করতে রাজ্য সরকার প্রস্তুত। দাবি করলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আবার একই সঙ্গে তৃণমূল নেত্রী মমতার হুঁশিয়ারি, "রাজনৈতিক প্রতিহিংসা দেখিয়ে লাভ নেই! চিট ফান্ডের টাকায় আমাদের করে খেতে হয় না। আসল অপরাধীদের আড়াল করবেন না।
নিজস্ব সংবাদদাতা
২৯ অগস্ট, ২০১৪
কুড়ি হাজারের বেশি আমানত ফেরত না এখনই
সারদায় কুড়ি হাজার টাকা বা তার বেশি পরিমাণ অর্থ গচ্ছিত রেখেছিলেন যাঁরা, তাঁদের আমানত এখনই ফেরত দেওয়ার কথা রাজ্য সরকার ভাবছে না। কারণ সরকার মনে করছে না যে, ওঁরা 'গরিব'লোক। সারদা কমিশন অবশ্য ইতিমধ্যে ২০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত আমানতকারীদের তালিকা বানিয়ে ফেলেছে।
অনুপ চট্টোপাধ্যায়
২৯ অগস্ট, ২০১৪
ADVERTISEMENT
নৈরাজ্য রুখতে বার্তা নেই মমতার, উজ্জীবিত শঙ্কুরা
মঞ্চ প্রস্তুত ছিল। ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। মাত্র ২৪ ঘণ্টা আগেই যিনি শিক্ষক-উপাচার্যদের কাছে হাত জোড় করে অনুরোধ করেছেন, চাপের কাছে মাথানত করবেন না। সরকার তাঁদের সঙ্গে আছে। ছিলেন শঙ্কুদেব পণ্ডা। শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের যে দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতার দাপটে শিক্ষক-উপাচার্যেরা নিরন্তর 'চাপে'থাকেন! ছিলেন কলেজে কলেজে শাসক দলের সংগঠন করা হাজার হাজার শিক্ষার্থী। অথচ মঞ্চের প্রধান চরিত্রই চিত্রনাট্য গুলিয়ে ফেললেন!
নিজস্ব সংবাদদাতা
২৯ অগস্ট, ২০১৪
বার্তাই সার, নকল করা ঘিরে উত্তেজনা কলেজে
শিক্ষাঙ্গনে অশান্তি রুখতে প্রায় প্রতিদিনই কোনও না কোনও বার্তা দিচ্ছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী। অথচ সেই বার্তার পরেও রাজ্যের বিভিন্ন কলেজে অশান্তি অব্যাহত। নদিয়ার চাপড়া বাঙালঝি কলেজের রেশ মিটতে না মিটতেই বৃহস্পতিবার ফের নকল করতে দেওয়ার দাবিতে উত্তেজনা ছড়াল ওই জেলারই কৃষ্ণনগর বিপ্রদাস পাল চৌধুরী আইটিআই কলেজে।
নিজস্ব প্রতিবেদন
২৯ অগস্ট, ২০১৪
জন-ধনের রেকর্ড গড়ল প্রধানমন্ত্রীর প্রকল্প
ঘোর কাটতে বেশ কিছুটা সময় লাগল জাহানারা বিবির। ১২ বছর হয়ে গেল দক্ষিণ দিনাজপুরের বালিহারা গ্রাম থেকে চলে এসেছেন গুড়গাঁওয়ে। স্বামী মজিদুর রহমান রাজমিস্ত্রি। সংসার চালাতে কয়েক বাড়ি রান্না করতে হয় জাহানারাকে। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলার কথা জন্মেও ভাবেননি। দিন কয়েক আগে একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের ক্যাম্প দেখে অন্যদের সঙ্গে তিনিও ব্যাঙ্কের খাতা খুলতে চলে গিয়েছিলেন। সেই ব্যাঙ্কের পাস বই, ডেবিট কার্ড, অন্যান্য কাগজপত্র যে খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁদের হাতে তুলে দেবেন, তা স্বপ্নেও ভাবেননি।
নিজস্ব সংবাদদাতা
২৯ অগস্ট, ২০১৪
কলাভবনে ছাত্রী নির্যাতন, অভিযুক্ত ৩ সহপাঠী
শারীরিক নির্যাতনের পর মোবাইলে প্রথম বর্ষের এক ছাত্রীর ছবি তোলে তারই বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র তিন ছাত্র। ছবি প্রকাশ করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে টাকাও আদায় করে তারা। মানসিক চাপে অসুস্থ ছাত্রীটি পুরো বিষয়টি জানিয়ে বিভাগীয় প্রধান তথা অধ্যক্ষকে লিখিত অভিযোগও করে। তার ৪৮ ঘণ্টা পরেও বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে পুলিশকে তো বিষয়টি জানানো হয়ইনি, উল্টেং ওই তিন ছাত্রকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের বাইরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এমনই বিস্ময়কর অভিযোগ উঠল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।
মহেন্দ্র জেনা ও আবীর মুখোপাধ্যায়
২৯ অগস্ট, ২০১৪
মুকুলের সঙ্গেই মিছিলে অভিযুক্ত নেতা
দলের পঞ্চায়েত সদস্যাকে গণধর্ষণের চেষ্টায় অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা স্বপন দাস খেজুরিতে মিছিল করেছিলেন বুধবার। বৃহস্পতিবার মেদিনীপুর সদরে তৃণমূলের মিছিলে হাঁটতে দেখা গেল খুন-ধর্ষণের হুমকি দেওয়ায় অভিযুক্ত উপ-পুরপ্রধান জিতেন্দ্রনাথ দাসকে। মিছিলে নেতৃত্ব দেওয়া দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ের সঙ্গে বেশ কয়েক কদম একই সঙ্গে হাঁটতে দেখা যায় তাঁকে।
নিজস্ব সংবাদদাতা
২৯ অগস্ট, ২০১৪
চিন্তা বিজেপিই, বোঝালেন মমতা
নরেন্দ্র মোদীর বিজেপি-ই যে এখন তাঁর মূল প্রতিপক্ষ, রাজ্যে দুই বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনের আগে এ বার স্পষ্ট করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ রাজ্যে বিজেপি-র শক্তিকে প্রকাশ্যে নানা ভাবে কটাক্ষ করে থাকেন মুকুল রায়ের মতো নেতারা। কিন্তু সেই বিজেপি-র মিছিলের জবাব দিতেই বৃহস্পতিবার মেদিনীপুরে পাল্টা মিছিল করেছে তৃণমূল। সেখানে মুকুলবাবুকেই পাঠিয়েছেন মমতা। ময়দানে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সমাবেশ-মঞ্চ থেকে দলনেত্রীর নির্দেশ পেয়ে তড়িঘড়ি মেদিনীপুর ছুটেছেন মুকুলবাবু।
নিজস্ব সংবাদদাতা
২৯ অগস্ট, ২০১৪
মুদগল আরও দু'মাস চাইবেন কি না, জল্পনা
বিচারপতি মুকুল মুদগল শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টে বাড়তি সময় চাইছেন, না চাইছেন না? বিচারপতি মুকুল মুদগল শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টে যে অন্তর্বর্তিকালীন রিপোর্ট পেশ করবেন বলে ঘোষণা করেছেন, তাতে কত দূর কী থাকছে? চব্বিশ ঘণ্টা আগেও কোনও সঠিক উত্তর নেই।
নিজস্ব প্রতিবেদন
২৯ অগস্ট, ২০১৪
নিজেকে সব সময় বলি, আমিই সেরা
'বিরাট আর শিখরের সময় আসছে এ বার'
বিনুনিতে র্যাকেট জড়িয়েও সহজ জয় ফ্লাশিং মেডোয়
র্যান্টি চাপে নেই, তেতে আছেন ফাতাই
লগ্নি সংস্থার টাকা কি টলিউডে, ফের প্রশ্ন
সারদায় সিবিআই হানা নিয়ে তোলপাড়ের মুহূর্তেই টলিউডে ফের মাথা চাড়া দিল বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার ভ্রূকুটি। গ্রিনটাচ এন্টারটেনমেন্ট টালিগঞ্জে একটি পরিচিত নাম। তাদের প্রযোজিত একটি ছবি মুক্তি পেতে চলেছে আজ, শুক্রবার। আরও বেশ কয়েকটি ছবির কাজও চলছে এই প্রযোজকের ব্যানারেই। নতুন ছবির পোস্টারে, আমন্ত্রণপত্রে ছবির নিবেদক হিসেবে নাম রয়েছে শ্যামসুন্দর দে-র। এই শ্যামসুন্দর দে গ্রিনটাচ প্রোজেক্টস লিমিটেড নামে সংস্থারও কর্ণধার। যার আর্থিক লেনদেনের উপরে সম্প্রতি নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সেবি।
ইন্দ্রনীল রায়
২৯ অগস্ট, ২০১৪
তিন দিন আলু বিক্রি বন্ধ, সিদ্ধান্ত ব্যবসায়ীদের
আলু নিয়ে এ বার সরকারের সঙ্গে সংঘাতের পথেই যাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। রাজ্য সরকার প্রতিদিন ১২ টাকা কেজি দরে ৩০০ টন আলু কেনার যে প্রস্তাব দিয়েছে, ক্ষতির আশঙ্কায় তাতে আপত্তি তুলেছেন ব্যবসায়ীরা। তাই সেপ্টেম্বরের প্রথম তিন দিন রাজ্য জুড়ে আলু কেনা-বেচায় কর্মবিরতি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আলু ব্যবসায়ীদের অন্যতম সংগঠন 'প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতি'। পাশাপাশি, মিলনমেলা প্রাঙ্গণে আলু পচিয়ে ফেলায় সরকারের কাছে দু'কোটি টাকা ক্ষতিপূরণও দাবি করেছেন তারা।
নিজস্ব প্রতিবেদন
২৯ অগস্ট, ২০১৪
চারটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের ভার এনএইচপিসি-কে
হাতে অর্থ কম। অভাব রয়েছে অভিজ্ঞতারও। তাই উত্তরবঙ্গে চারটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্থা ন্যাশনাল হাইডেল পাওয়ার কর্পোরেশন (এনএইচপিসি)-এর হাতে তুলে দিতে চলেছে রাজ্য সরকার। রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে সম্প্রতি এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। এনএইচপিসি নিজেরাই টাকা তুলে এই চারটি প্রকল্প নির্মাণ করবে। সেগুলিতে উৎপন্ন বিদ্যুত কিনে নেবে রাজ্য সরকার।
পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়
২৯ অগস্ট, ২০১৪
যান্ত্রিক ত্রুটিতে ফরাক্কায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে ঘাটতি
এনটিপিসি-র ফরাক্কা-মালদহ ট্রান্সমিশন লাইনে হঠাৎই যান্ত্রিক গোলযোগ হওয়ায় বৃহস্পতিবার ফরাক্কা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। এ দিন বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ ওই ঘটনার জেরে এক ধাক্কায় এনটিপিসি-র পাঁচটি ইউনিট বসে যাওয়ায় জাতীয় গ্রিডে ১৬০০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ ঘাটতি দেখা দেয়। ঘণ্টা পাঁচেকের চেষ্টায় ট্রান্সমিশন লাইন সারানো গেলে বিকেলের দিকে ফের ধাপে ধাপে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়। রাত পর্যন্ত দু'টি ইউনিট চালু হয়েছে।
নিজস্ব সংবাদদাতা
২৯ অগস্ট, ২০১৪
সিদ্ধির খোঁজে এ বার ছুটছে আম-বাঙালিও
বারো মাসে বাঙালির এখন চোদ্দো পার্বণ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কাল, শুক্রবার সন্ধেবেলা টেলিভিশন অভিনেত্রী রণিতা ওরফে বাহার বাড়িতে প্রতি বছরের মতোই যাবেন। সিদ্ধিদাতার আশীর্বাদ নিতে। এখনও পর্যন্ত তেমনই খবর। আজ বিকেলে ব্যস্ত প্রাক্তন ফুটবলার চুনী গোস্বামীও।
ইন্দ্রনীল রায়
২৯ অগস্ট, ২০১৪
রূপকথার বিয়ে আড়ালেই সারলেন ব্র্যাঞ্জেলিনা
রূপকথার বিয়ে তা হলে আর দেখা হল না! সে সুযোগই যে দিলেন না তাঁরা। ফ্ল্যাশের ঝলকানি আর কৌতূহলী নজর এড়িয়ে ফ্রান্সের প্রাসাদে গত শনিবারই বিয়ে সেরেছেন ব্র্যাড পিট ও অ্যাঞ্জেলিনা জোলি। কিন্তু নিমন্ত্রিত ছিল হাতেগোনা। বাকি দুনিয়াকে বিয়ের অনুষ্ঠানে ব্রাত্যই রেখেছিলেন ব্র্যাঞ্জেলিনা। বৃহস্পতিবার শুধু বিয়ের খবরটুকু সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন জোলির মুখপাত্র। কিন্তু তাতে কি আশ মেটে? ন'বছর ধরে যাঁদের প্রতি মুহূর্তের খবর জানতে মুখিয়ে থেকেছে গোটা বিশ্ব, তাঁদের বিয়েতেই এত আড়াল?
সংবাদ সংস্থা
২৯ অগস্ট, ২০১৪
ব্যাঙ্কে জাল চেকে টাকা তুলে প্রতারণা
জাল নোটের পরে এ বার জাল চেক! চেক জাল করে স্টেট ব্যাঙ্কের খড়দহ শাখার জনৈক গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলতে গিয়ে ধরা পড়েছেন এক মহিলা। ব্যাঙ্কের চেক নম্বর, আইএফসি কোড, ব্যাঙ্কের শাখার নাম ইত্যাদি বদলে এবং অন্যের সই নকল করে দু'বার টাকা তুলেওছেন তিনি।
প্রজ্ঞানন্দ চৌধুরী
২৯ অগস্ট, ২০১৪
বিদেশ
ইবোলা আক্রান্ত
দেশে বন্ধ উড়ান
ইবোলা ভাইরাসের হানায় পশ্চিম আফ্রিকার চার দেশে মৃত্যুমিছিল অব্যাহত। এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১৫৫২ জনের। যদিও প্রতিদিনই লাফিয়ে বাড়ছে সেই সংখ্যা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র আশ্বাস, আগামী তিন মাসের মধ্যে অবস্থা নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালাচ্ছে তারা। তবে একই সঙ্গে তাদের এটাও আশঙ্কা যে, তত দিনে হয়তো ইবোলা ভাইরাস ডিজিজে আক্রান্তের সংখ্যাটা ছুঁয়ে ফেলবে ২০ হাজারের কোঠা। পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে বিভিন্ন উড়ান সংস্থা ইবোলা আক্রান্ত দেশগুলোর সঙ্গে বিমান যোগাযোগ সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়ায়। সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে পড়শি দেশগুলোও।
২৯ অগস্ট, ২০১৪
দেশ
ছেলেকে নিয়ে এ বার
বিপাকে গৌড়াও
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পর এবার রেলমন্ত্রী। ছেলের কারণে রাজনাথ সিংহের মতোই অস্বস্তিতে পড়লেন সদানন্দ গৌড়াও। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের ছেলে পঙ্কজের বিরুদ্ধে বাবার পদকে কাজে লাগিয়ে আমলাদের পছন্দসই বদলির অভিযোগ উঠেছিল। আর সদানন্দের ছেলে কার্তিকের বিরুদ্ধে বিয়ের নাম করে প্রতারণার অভিযোগ তুললেন কর্নাটকের এক মডেল তথা উঠতি অভিনেত্রী।
২৯ অগস্ট, ২০১৪
পুরুলিয়া-বীরভূম-বাঁকুড়া
কাগজেকলমে প্রকল্প,
তরজায় জড়ালেন মন্ত্রী
একে বৃষ্টি কম হওয়ায় মার খেয়েছে চাষ। তার মধ্যেই জেলায় কোথাও কোথাও কালোবাজারে সার কিনতে হচ্ছে কৃষকদের। আর কৃষি দফতরের কর্মী-আধিকারিকেরা কোনও কাজ করছেন না। বৃহস্পতিবার রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসুর উপস্থিতিতেই এই অভিযোগে সরব হলেন পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি সৃষ্টিধর মাহাতো। আর সেই মঞ্চেই পাল্টা জবাব দিলেন মন্ত্রী। এ দিন পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া, দুই জেলার কৃষি দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে কাশীপুর ব্লকের সোনাথলিতে বৈঠকে বসেছিলেন পূর্ণেন্দুবাবু।
২৯ অগস্ট, ২০১৪
রাজ্য
দলত্যাগের হতাশা কাটাতে
ছাত্রদের চাঙ্গা করার বার্তা
দলে লাগাতার ভাঙনের ঘটনা কংগ্রেস নেতৃত্বের কপালে যে ভাঁজ ফেলেছে তার ইঙ্গিত পাওয়া গেল দলের ছাত্র সমাবেশে। দলত্যাগীদের দেখে ছাত্র-যুবরা যাতে উদ্বিগ্ন না হয়ে পড়েন, সেই বার্তাই বৃহস্পতিবার কংগ্রেস নেতৃত্ব দিয়েছেন ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসে। এ দিন মহাজাতি সদনের সামনে প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের অনেকের বক্তব্যেই দলত্যাগের বিষয়টি প্রাধান্য পায়। দলে লাগাতার ভাঙনের ঘটনা কংগ্রেস নেতৃত্বের কপালে যে ভাঁজ ফেলেছে তার ইঙ্গিত পাওয়া গেল দলের ছাত্র সমাবেশে।
২৯ অগস্ট, ২০১৪
উত্তরবঙ্গ
কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়া
বাতিল বিশ্ববিদ্যালয়ে
স্কুলে মিড-ডে মিল রাঁধুনি বধূকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নিরাপত্তা রক্ষীর বিরুদ্ধে। ঘটনাস্থল, মেদিনীপুর সদর। মঙ্গলবার রাতে কোতোয়ালি থানায় তাপস রাউত নামে ওই যুবকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেন বধূটি। বুধবার মেদিনীপুর মেডিক্যালে ওই মহিলার ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়। পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ বলেন, "মহিলার অভিযোগ খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।"বুধবার রাত পর্যন্ত অবশ্য অভিযুক্ত ধরা পড়েনি।
২৯ অগস্ট, ২০১৪
ব্যবসা
বাজার বাড়াতে কোমর
বাঁধছে দুই গাড়ি সংস্থা
ভবিষ্যতে বাজার বাড়ানোর কথা মাথায় রেখে এগোচ্ছে দেশের দুই প্রথম সারির গাড়ি সংস্থা মারুতি-সুজুকি এবং মহীন্দ্রা। এক দিকে মহীন্দ্রা মহারাষ্ট্রের চাকনে কারখানা সম্প্রসারণে ৪,০০০ কোটি টাকা লগ্নির কথা ঘোষণা করল বৃহস্পতিবার। সাত বছরে এই টাকা লগ্নি করে সেখানকার উৎপাদন ক্ষমতা দ্বিগুণ করার কথা তারা জানিয়েছে। অন্য দিকে, মারুতি-সুজুকি-র চেয়ারম্যান আর সি ভার্গব সংবাদ সংস্থাকে নিয়েছেন, কয়েক বছরেই অন্তত দুটি নতুন গাড়ি (যে ধরনের গাড়ি এখন তাদের নেই) বাজারে আনবেন তাঁরা।
২৯ অগস্ট, ২০১৪
বিদেশ
'ব্ল্যাক ফ্রাইডে'তে
ফাঁসি দেখে সিরিয়ার শিশুরাও
যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার ক্যালেন্ডারে পাল্টে গিয়েছে একটা দিনের নাম। পরিবর্তে এসেছে আতঙ্ক আর মৃত্যুর অনুষঙ্গ। প্রতি শুক্রবার সেখানে বিচারসভা বসায় জঙ্গিরা। আর তাতেই প্রার্থনার দিনেই এখন অশনি সঙ্কেত দেখে সিরিয়া। সপ্তাহান্তের প্রতিটি শুক্রবার অন্ধকার ডেকে আনে। তাই প্রতি সপ্তাহান্তই সেখানে 'ব্ল্যাক ফ্রাইডে'। রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রকাশ করা একটি রিপোর্টে জানা গিয়েছে, নিয়ম করে প্রতি শুক্রবার তৎপর হয় জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসআইএস।
২৯ অগস্ট, ২০১৪
বর্ধমান
কর্মীরা প্রহৃত, সুরক্ষা
চাইছে স্পঞ্জ কারখানা
শ্রমিক ছাঁটাইয়ের পরে বিক্ষোভ চলছে কারখানায়। এই পরিস্থিতিতে তিন কর্মীকে মারধর করা হয়েছে অভিযোগে পুলিশকে চিঠি পাঠিয়ে নিরাপত্তার দাবি করলেন বর্ধমানের জামুড়িয়ার একটি স্পঞ্জ আয়রন কারখানা কর্তৃপক্ষ। উপযুক্ত নিরাপত্তা না পেলে কাজ বন্ধ করে দিতে বাধ্য হবেন বলে হুমকিও দিয়েছেন তাঁরা। শ্রমিক ছাঁটাইয়ের পরে গত সোমবার থেকে ওই কারখানার গেটে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন সিটুর কর্মী-সমর্থকেরা। কারখানা কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, বুধবার রাতে তাঁদের তিন কর্মীকে মারধর করে জনা পনেরো অপরিচিত লোক। কাজ চালিয়ে গেলে প্রাণে মারার হুমকিও দেয়। কারখানার জেনারেল ম্যানেজার সুদীপ্ত ভট্টাচার্যের দাবি, "কর্মীরা আতঙ্কিত। এ রকম চললে সাসপেনশন অফ ওয়ার্ক নোটিস ঝোলাতে বাধ্য হব।"
২৯ অগস্ট, ২০১৪
কলকাতা
হিসেবে গরমিল, চিঠি
প্রেসিডেন্সির ডিনকে
প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের দু'টি হস্টেলে হিসেবে গরমিল ধরা পড়েছে। সেই জন্য আর্থিক অনিয়মের প্রশ্ন তুলে যথাযথ উত্তর চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অব স্টুডেন্টস দেবশ্রুতি রায়চৌধুরীকে। ২২ অগস্ট ওই চিঠি ডিনকে দেওয়া হয়েছে।
২৯ অগস্ট, ২০১৪
হাওড়া ও হুগলি
গুড়িয়া কাণ্ডে অভিযুক্ত
শ্যামল অন্য ধর্ষণে দোষী
দু'টি ক্ষেত্রেই হোমের আবাসিককে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল। একটি মামলা এখনও বিচারাধীন। অন্যটিতে আদালত দোষী সাব্যস্ত করল গুড়াপের হোমে গুড়িয়া হত্যা মামলার প্রধান অভিযুক্ত শ্যামল ঘোষকে। বৃহস্পতিবার ওই রায় দেন চুঁচুড়া আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক (থার্ড কোর্ট) মানস বসু। ২০১২ সালের জুলাই মাসে গুড়াপের দুলাল স্মৃতি সংসদ হোমে মাটি খুঁড়ে মানসিক ভারসাম্যহীন আবাসিক গুড়িয়ার পচাগলা দেহ মেলে।
২৯ অগস্ট, ২০১৪