Niltu Ghosh shared সুপ্তি কাঞ্জিলাল's photo.
হারানো ৮,০০০ গ্রাম-ঘাঁটিতে আবার
ঢুকে পড়ছে সি পি এম
সারদা নিয়ে চোর-পুলিস খেলা আর
মাখড়া নিয়ে বি জে পি-তৃণমূল গ্রামদখলের বখড়ার
মাঝে আগামী ২৬ নভেম্বর গ্রামে কৃষকদের 'কাম বন্ধ'
কর্মসূচির সাহায্যে ৮,০০০ ফেলে-আসা গ্রাম-
ঘাঁটিতে আবার ঢুকে পড়ছে সি পি এম৷ বাম আমলে এই
গ্রামগুলিই ছিল পার্টি তথা কৃষকসভার ঘাঁটি৷ আবার
সরকার বদল হতেই তৃণমূলের পাল্টা ঘাঁটির
তোড়ে এগুলিতে সি পি এম বিরল হয়ে দাঁড়িয়েছিল৷
তখন বেশ কয়েকজন সি পি এম কর্মী খুন হন৷
পুরনো ঘটনার মামলা পুনরুজ্জীবিত করে তরুণ রায়ের
মতো রাজ্য কৃষকসভার নেতাও গ্রেপ্তার হন৷ এই
'গ্রামে ফেরা'কর্মসূচির অঙ্গ গত জাঠা অভিযানেও
বেশ কয়েক জায়গায় জাঠা আক্রাম্ত হয়ে রক্ত
ঝরেছে৷ তবে ফাঁক বেশ কিছুটা ভরাট হয়েছে৷ জাঠায়
গিয়ে 'রাতের অতিথি'
হিসেবে গ্রামে ঢুকে টিঁকে থাকা গেছে৷ কিন্তু
অতি উপদ্রুত গ্রামগুলিতে সে-যাত্রায় ঢোকা যায়নি৷
তাই কৃষকসভার এই কর্মসূচিকে গত জাঠা অভিযানের
বকেয়া বলে ধরা হচ্ছে৷ রাজ্য কৃষকসভার
চেয়ারপার্সন, দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মদন
ঘোষ জানান, পশ্চিমবঙ্গে ৪০ হাজারের কিছু
বেশি গ্রাম, তার মধ্যে জাঠায় ৩১,৬০০
গ্রামে জাঠা গেছে৷ সব গ্রামে সন্ত্রাসের
কারণে ঢোকা যায়নি৷ এবার ঢোকা হবে৷ সন্ত্রাস-
কবলিত গ্রামে ঢুকতে গেলে বাধা পাওয়ার আশঙ্কার
বিষয়ে মদনবাবু জানান, 'এ নিয়ে আগাম কিছু
বলছি না, লক্ষ্য রাখুন৷'রাজ্য সি পি এমের
অভিযোগমতো সব থেকে সন্ত্রাস-কবলিত জেলাগুলির
অন্যতম বর্ধমান ও পূর্ব মেদিনীপুরের
জেলা সম্পাদকেরা কর্মসূচির সাফল্য নিয়ে খুবই
আশাবাদী৷ বর্ধমান জেলা সম্পাদক অমল হালদার
জানান, 'পুরনো কর্মীরা ঢুকে পড়েছেন বলে শুনেছি৷
ফ্ল্যাগ, ফেস্টুন অক্ষত আছে৷ কেউ ছেঁড়েনি৷'পূর্ব
মেদিনীপুরের ভারপ্রাপ্ত জেলা সম্পাদক প্রশাম্ত
প্রধান জানান, 'অবস্হা দ্রুত বদলাচ্ছে৷
এমনকি নন্দীগ্রামেও৷'অবশ্য গত পঞ্চায়েত
নির্বাচনেও তৃণমূলের জঙ্গিদের যে দাপুটে ভাব ছিল,
এখন বি জে পি-র ছাতার তলায় সর্বদলীয় জোট
জঙ্গিদের পাল্টা মারে তা অনেকটাই টাল
খেয়ে গেছে৷ তার ওপর পুলিস বা স্হানীয় নেতাদের
ওপর তৃণমূল জঙ্গিরা আর ভরসাও রাখতে পারছে না৷
কারণ, মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির মনোভাব লড়াই
চালিয়ে যাওয়া না যুদ্ধবিরতি, তা বিশেষ
বোঝা যাচ্ছে না৷ যেমন, মাখড়ার প্রথম সঙঘর্ষে মোট
২০ জন তৃণমূল এবং বি জে পি-র মদতপুষ্ট
সমাজবিরোধী ধরা পড়েছে৷ এর মধ্যে ১৭ জনই তৃণমূলের৷
এতেই তাদের মনে প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে,
ন্যাড়া বেলতলায় ক'বার যায়৷ সি পি এম পার্টি ও
কৃষকসভার নেতারা জানিয়েছেন, ২৬ নভেম্বর 'গ্রাম
হরতাল'বা 'গ্রাম বন্ধ'নয়৷ ওই দিন রোজকার চাষের
কাজ ফেলে জোট বেধে অবরোধ-আন্দোলনের মধ্য
দিয়ে ভয়ভীতি কাটিয়ে গ্রামে পুরনো দিন ফেরত
আনার প্রয়াস চালানো হবে৷ সারা ভারত কৃষকসভার
নেতা হান্নান মোল্লা জানান, পার্টির কৃষকদের
জন্য ১০০ দিনের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে৷
প্রকল্পটি যেহেতু ভারতজোড়া, তাই তার
বিরুদ্ধে আন্দোলনও ভারতজোড়া৷ তবে, পরিস্হিতির
বিবেচনায় পশ্চিমবঙ্গেই 'কাম বন্ধ'-এর ডাক
দেওয়া হয়েছে৷ অন্যত্র স্হান ও
পরিস্হিতি অনুযায়ী আন্দোলনের ধরন ঠিক
করা হয়েছে৷ সি পি এমের বর্ধমান জেলা সম্পাদক
অমল হালদার জানান, বন্ধের ডাক দেওয়া হয়নি এ
কথা ঠিকই৷ তবে জাতীয় ও রাজ্য সড়কগুলি সকাল
থেকেই অবরুদ্ধ হয়ে যাবে৷ তাই, কার্যত বন্ধের
চেহারা নিতে পারে৷ ২৬ নভেম্বরের কৃষক
আন্দোলনের অন্যতম দাবি হল, খেতমজুরি বৃদ্ধি৷
একে কেন্দ্র করে গ্রামে মধ্য কৃষক-খেতমজুর দ্বন্দ্ব
দেখা দেবে কি না এ প্রশ্নে অমলবাবু জানান, মধ্য
কৃষকদের জন্য ধানের ন্যূনতম দাম
বাড়ানো এবং সেচের জল দাবির মধ্যে থাকায়,
দুইয়ের মধ্যে বিরোধের আশঙ্কা নেই৷