কথিত বাবা দিবস, মা দিবস, পালন যে খুব সূক্ষ্ম কিন্তু অনেক বড় ফাঁদ
কথিত বাবা দিবস, মা দিবস, পালন যে খুব সূক্ষ্ম কিন্তু অনেক বড় ফাঁদ
"বলুন! হে কাফিরেরা, আমি তার ইবাদত করি না, তোমরা যার ইবাদত করো এবং তোমরাও উনার ইবাদতকারী নও, যাঁর ইবাদত আমি করি। এবং আমি তার ইবাদতকারী নই, যার ইবাদত তোমরা করো, তোমরা উনার ইবাদতকারী নও, যাঁর ইবাদত আমি করি। তোমাদের ধর্ম, কর্ম ও কর্মফল তোমাদের জন্য এবং আমার ধর্ম, কর্ম ও কর্মফল আমার জন্য।" (পবিত্র সূরা কাফিরূন শরীফ)
'পবিত্র সূরা কাফিরূন শরীফ'উনার মধ্যে উল্লিখিত একই বাক্য পুনঃপুনঃ উল্লেখের পেছনে বিশেষ কারণ হলো- মুসলমানদের ধর্ম ও কর্ম এবং কর্মফল যে কাফিরদের থেকে আলাদা ও স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যম-িত সেটারই অনবদ্য গুরুত্ব জোরদারভাবে ফুটিয়ে তোলা। তার পাশাপাশি আরো অনুভব করা যে, কোনো ক্ষেত্রেই, কোনো বিষয়েই কাফিরের চিন্তা ও কর্মের সাথে মুসলমান সংহতি বা একাত্মতা প্রকাশ করতে পারে না।
এমনকি যদিও বলা হয়- সত্য কথা বলা, পরোপকার করা, দান করা ইত্যাদি বিষয়ে সব ধর্মেরই আদেশ, উৎসাহ বাণী রয়ে গেছে। সেক্ষেত্রে মুসলমান মাত্রেই সত্য কথা বলতে হয়, দান-সদকা করতে হয়, পরোপকারের মানসিকতা বহন করতে হয়। কিন্তু তা ভিন্ন ধর্মের বাণীর আলোকে বা ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের দ্বারা উদ্ভূত চেতনার প্রবাহে নয়।
এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে রয়েছে, "খলীফাতুল মুসলিমীন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ'যম আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! ইহুদী-নাছারাদের কাছ থেকে আমরা অনেক চমকপ্রদ কথা শুনি, যা ভালো লাগার মতো; সেসব কথা কি আমরা লিখে রাখবো? একথা শুনে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার চেহারা মুবারকে রক্তিমাভাব দেখা গেল। তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, ইহুদী-নাছারারা যেরূপ দ্বিধা, দন্দ্ব ও সংশয়ের মধ্যে রয়েছে আপনারাও কি সেরূপ দ্বিধা, দন্দ্ব ও সংশয়ের মধ্যে রয়েছেন? অথচ আমি আপনাদের জন্য স্পষ্ট শরীয়ত নিয়ে এসেছি। স্বয়ং সাইয়্যিদুনা হযরত মুসা কালীমিল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনিও যদি আজকে যমীনে অবস্থান করতেন, তাহলে উনার জন্যও আমার শরীয়ত গ্রহণ ব্যতীত কোনো গত্যন্তর থাকতো না।" (মিশকাত শরীফ, মিরকাত শরীফ)
উপরোক্ত বক্তব্যের আলোকে নিম্নোক্ত আহবান লক্ষণীয়-
(১) জুন মাসের তৃতীয় রোববার হিসেবে ২১ জুন-২০১৫ 'বিশ্ব বাবা দিবস'। এদিনে বাবার হাতে তুলে দিন লাল ফুল অথবা যেকোনো উপহার। আর যদি মা বেঁেচ না থাকে, তাহলে তার সমাধিটি সাদা ফুলে ফুলে ভরিয়ে দিন, তার আত্মার শান্তি কামনা করুন।"
উল্লেখ্য, কথিত এ আহবানের প্রতিক্রিয়া কি বা তা কতটুকু সাড়া জাগিয়েছে তা উপলব্ধি করা যায় গত ২১ জুন ২০১৫ ঈসায়ী, রোববার পত্রিকান্তরে প্রকাশিত মন্তব্য থেকে:
"আজ বছর ঘুরে সেই রোববার, বিশ্ব বাবা দিবস। বিভিন্ন দেশে জুন মাসের তৃতীয় রোববারকে বাবা দিবস হিসেবে পালন করা হয়ে থাকে। সন্তানের কাছে বাবা বন্ধুর মতো। কারও বাবা পথপ্রদর্শক। অনেকেই বাবাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানায়। অনেক দেশে কার্ডও উপহার দেয়া হয়। যাদের বাবা বেঁচে নেই, তারা হয়তো আকাশে তাকিয়ে অলক্ষ্যে বাবার স্মৃতি হাতড়ায়।"
প্রসঙ্গত, 'পবিত্র সূরা কাফিরূন শরীফ'তথা সম্মানিত ইসলামী নীতিমালার আলোকে মুসলমান হিসেবে যা সহজাতভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করে তা হলো-
* মায়ের প্রতি ভালোবাসা, বাবার প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করতে আহবানকৃত তথাকথিত এই বিশ্ববিবেকের পরিচয় কি?
* মে মাসের দ্বিতীয় রোববার 'মা দিবস'এবং জুনের তৃতীয় রোববার 'বাবা দিবস'উদযাপন দ্বারা কোন্ ধর্মাবলম্বীকে অনুসরণ করা হয়?
* মুসলমান হিসেবে পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের মধ্যে বিবৃত যে পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের কর্তব্যবোধ ও অনুভূতি তার তুলনায় তথাকথিত মা দিবস ও বাবা দিবসের চেতনা কি সমুদ্রের তুলনায় ফেনা পরিমাণ চেতনা দাবি করতে পারে?
* এই 'বাবা দিবস'ও 'মা দিবসের'সেন্টিমেন্ট মুসলিম চেতনাম-িত এই দেশে আমদানির উদ্দেশ্য কি?
* এটা কি তথাকথিত সংস্কৃতিবাদী তথা সুশীল সমাজের এক নতুন চমক তৈরি তথা চটকদার প্রবক্তা বা একটা ফ্যাশনবাদের নায়ক সাজার আপ্ত অভিলাষ নয়?
* ইতোমধ্যে এ ধারার যে চেতনা আমদানি হয়েছে যথা 'থার্টি ফার্স্ট নাইট'কালচার ভ্যালেন্টাইনস ডে, কনসার্ট ইত্যাদি এদেশের ধর্ম-সংস্কৃতিকে কি উজ্জ¦ল করছে, নাকি ক্ষতবিক্ষত করছে?
* এর দ্বারা কি বাবা-মার প্রতি আবহমানকালের বাঙালি অনুভূতি তথা ঐতিহ্যবাহী পারিবারিক বন্ধনের টান, যা বর্তমানে হতচ্ছাড়া পশ্চিমা দেশের ঈর্ষার ও লোভনীয় বস্তু- যা মূলত সম্মানিত ইসলামী মূল্যবোধের সুফল বা ইসলামী চেতনা উজ্জীবনের প্রেক্ষাপট তাকে ধ্বংস করার সুদূর প্রসারী ষড়যন্ত্র নয়?
এর দ্বারা কি ইউরোপীয় কালচারের মতো বাবা-মাকে বৎসরের নির্দিষ্ট দিনে কার্ড, কিছু ফল বা বই পাঠিয়ে বাঙালি চেতনাকেও সংকুচিত করে নির্দিষ্ট একদিনেই সীমাবদ্ধ করে তৃপ্ত থাকার বা রাখার মানসিকতা গড়ে তোলার অপপ্রয়াস নয়?
১৯০৯ সালে পূর্ব ওয়াশিংটনের এক কৃষক কন্যা সোনোরা ডড মা দিবসের একটি আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তৃতা শোনে। বাড়িতে ফিরে আসার পরপরই তার খেয়াল হলো তার বাবার কথা; মা-বিহীন যে বাবা ছয় ভাই-বোনকে যতেœ লালন করেছে, করেছে প্রতিষ্ঠিত। তার বাবা ছিল আমেরিকার স্বাধীনতা সংগ্রামের এক লড়াকু সৈনিক উইলিয়াম জ্যাকসন স্মার্ট। তার স্ত্রী আমেরিকার মুক্তির জন্য লড়াই করে মৃত্যুবরণ করেছিল, এরপর জ্যাকসন আবারও নতুনভাবে জীবনযুদ্ধে নেমে পড়ে ছয়টি বাচ্চাকে নিয়ে। পূর্ব-ওয়াশিংটনে গ্রাম্য পরিবেশে সে ছয় সন্তান লালন-পালনের ব্রত গ্রহণ করে। ডড সিদ্ধান্ত নিলো, তার বাবাকে বিশেষ সম্মানে সম্মানিত করবে। আর সেই চিন্তা থেকেই বাবা দিবসের সূত্রপাত। সেবার একান্ত ব্যক্তিগতভাবে বাবা দিবস পালন করে ডড। কিন্তু পরের বছরের জন্য প্রস্তুতি শুরু করে দেয় সে। ওয়াশিংটনে ১৯১০ সালের জুন মাসে পালিত হয় প্রথম বাবা দিবস। দিনটিকে সমর্থন জানায় রাজ্যের গভর্নর এবং শহরের মেয়র। এ প্রসঙ্গে স্বীকৃতি জ্ঞাপন করে- সনোরা ডডের চেষ্টায় ১৯১০ সালের ১৯শে জুন স্পোকেনে (আমেরিকার একটি স্থান) সর্বপ্রথম কথিত 'বাবা দিবস'উদযাপিত হয়। স্পোকেন মিনিস্টেরিয়াল এসোসিয়েশন এবং স্থানীয় খ্রিস্টান যুব সংঘ (ওয়াই, এম, সি, এ) তাতে সমর্থন যোগায়। পরবর্তীতে ক্রমান্বয়ে অন্যান্য দেশেও কথিত 'বাবা দিবস'পালিত হয়ে থাকে।
১৯২৪ সালে প্রেসিডেন্ট কেলভিন কুলিজ জনসমাবেশে জাতীয় বাবা দিবসের পরিকল্পনাকে স্বাগত জানায়। ১৯২৬ সালে জাতীয় বাবা দিবস কমিটির সদস্যরা প্রথমবারের মতো নিউইয়র্ক সিটিতে সমবেত হয়। ১৯৫৬ সালে কথিত বাবা দিবস মার্কিন কংগ্রেসের প্রস্তাবনায় পাস হয়। ১৯৬৬ সালে প্রেসিডেন্ট লিন্ডসন জনসন'বাবা দিবসকে জাতীয় ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা করে। ১৯৭২ সালে প্রেসিডেন্ট লিন্ড রিচার্ড নিক্সন একটি আইনে স্বাক্ষর করে, যেখানে বলা হয়- বাবা দিবস একটি সরকারি ছুটির দিন, যা জুন মাসের তৃতীয় রোববারে পালিত হবে। ১৯৯৯ সালে কথিত বাবা দিবস পঞ্চম জনপ্রিয় কার্ড আদান-প্রদান দিবস হিসেবে স্থান করে নেয়। প্রায় ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের কার্ড এই দিন আদান-প্রদান হয়ে থাকে।
উল্লেখ্য, বিশ্বের সব দেশেই একই তারিখে বাবা দিবস পালিত হয় না। জুনের তৃতীয় রোববারে বাবা দিবস হিসেবে পালিত হয় বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, মালয়েশিয়া, চীনসহ এশিয়ার অন্যান্য দেশ এবং যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ লাতিন ও মধ্য আমেরিকার কয়েকটি দেশ বাদে পুরো আমেরিকা মহাদেশ এবং দক্ষিণ আফ্রিকা ও জিম্বাবুয়ে। তবে যুক্তরাজ্য, গ্রীস, এবং নেদারল্যান্ডস বাদে ইউরোপের অন্যান্য দেশে ভিন্ন তারিখে বাবা দিবস পালিত হয়। নিউজিল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়ায় পালিত হয় পহেলা সেপ্টেম্বর, ব্রাজিলে আগস্টের দ্বিতীয় রোববার, নভেম্বরের দ্বিতীয় রোববার নরওয়ে, ফিনল্যান্ড, সুইডেনে এবং ১৯ মার্চ স্পেন, ইটালি, সুইজারল্যান্ড এবং পর্তুগালে কথিত বাবা দিবস পালিত হয়। তবে জার্মানিতে ইস্টারের চল্লিশ দিন পর যে মঙ্গলবার সেই দিনকেই কথিত বাবা দিবস হিসেবে ধরা হয়। আবার তাইওয়ানে কথিত বাবা দিবস কিছুটা ভিন্নভাবে পালিত হয়। সরকারি ঘোষণা না থাকলেও ওই দিন দেশটির সর্বত্র ছুটির আমেজ বিরাজ করে। এটি বছরের আটতম মাসের আটতম দিন। ম্যান্ডারিন ভাষায় আট মানে 'বা'যার মানে বাবা।
প্রসঙ্গত, পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে বলতে হয়- বিধর্মীদের থেকে উদ্ভব হওয়ায় তথাকথিত বাবা দিবস স্বতঃস্ফূর্তভাবে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার দ্বারা পরিত্যাজ্য। দ্বিতীয়ত, সম্মানিত ইসলামী মূল্যবোধের আঙ্গিকে বাবা দিবসের ঘনঘটা নিতান্তই অর্থহীন ও অপ্রাসঙ্গিক। পাশাপাশি ইহুদী-খ্রিস্টানদের চেতনাবোধে উজ্জীবিত হওয়া ও তাদের অনুসরণ করার প্রেক্ষিতে তা পালন নাজায়িয ও হারামও বটে।
উল্লেখ্য, ইহুদী-খ্রিস্টানরা তাদের আসমানী কিতাব বিকৃত করে ফেলেছে। তারা গুমরাহ ও পথভ্রষ্ট। ওহীক বা খোদায়ী চেতনা তাদের ধর্মীয় কিতাবে নেই। ফলতঃ তার প্রভাব ও প্রতিফলনও তাদের মন-মানসিকতা এমনকি পারিবারিক জীবনেও নেই। মায়ের প্রতি সন্তানের হক্ব বা সন্তানের প্রতি মায়ের হক্ব সম্পর্কে ছহীহ বুঝ বা খোদায়ী চেতনা ও ইলম তাদের নেই।
ফলতঃ তাদের সন্তানের সম্পর্ক ভারসাম্যহীন, বোধহীন ও শূন্যতায় ভরা।
এটা শুধু আজকেই নয়; আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জীবদ্দশায়ও তার উদাহরণ ছিলো। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এক শিশুকে উনার স্বভাবসূলভ ভঙ্গিতে আদর করতে দেখলে এক বেদুঈন বলে উঠেছিল, "ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! 'আপনারা শিশুদের এত স্নেহ করেন। আমরা তো করি না।'জবাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, যদি তোমাদের অন্তর হতে মহান আল্লাহ পাক রহমত উঠিয়ে নেন; তবে আমি কি করবো?"
মূলত, ইহুদী-খ্রিস্টান তথা বিধর্মীদের অন্তরে খোদায়ী রহমত নেই। ওরা যেমন অপত্য স্নেহে ওদের শিশুদের দেখে না, তেমনি ওদের সন্তানরাও বৃদ্ধ বয়সে তাদের বাবা-মাকে দেখে না। অথচ মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, "তোমাদের বাবা-মা যে কাউকে তোমরা বৃদ্ধ বা বৃদ্ধাবস্থায় পাও, তাদের জন্য তোমাদের দয়ার হাত বিস্তার করে দাও। তারা যেন উহ্্ শব্দ বলতে না পারে।"সুবহানাল্লাহ!
উল্লেখ্য, পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের এ আদেশ সর্বক্ষণের, সবসময়ের। কিন্তু আধুনিক ভোগবাদী জীবনে মত্ত হয়ে ইহুদী-খ্রিস্টান তাদের বাবা-মাকে আদৌ সময় দিতে চায় না। বৃদ্ধ বয়সে তাদের সবাইকে ওল্ড হোমে যেতে হয়। সেখানে সন্তান যদি বৎসরে একবার তাদেরকে কার্ড পাঠায়, সেটাই তাদের কাছে অনেক কিছু। কিন্তু অনেকে তাও করে না। আর এহেন শেকড়হীন শূন্য সম্পর্কের প্রেক্ষিতেই বৎসরে একদিনও যাতে তারা তাদের মা-বাবাকে কার্ড পাঠিয়ে স্মরণ করে সেজন্যই কথিত মা দিবস, বাবা দিবসের প্রেরণা-চেতনা।
সঙ্গতকারণেই পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে এসব পুরোই অর্থহীন। বাবা-মায়ের সঙ্গকে চরম উৎসাহ ও ফযীলতের কথা ব্যক্ত করে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, "পিতা-মাতার প্রতি মুহব্বত ও শ্রদ্ধার সাথে প্রতি দৃষ্টিতে একটি মকবুল হজ্জের ছওয়াব।"সুবহানাল্লাহ!
উল্লেখ্য, বাবা দিবস, মা দিবস প্রচলনের দ্বারা প্রকারান্তরে বাকি দিনগুলোতে গাফিল থাকার প্রবণতাকেই জায়িয করে নেয়া হয়। অর্থ এই দাঁড়ায়, সারা বছর বাবা-মায়ের খোঁজ-খবর নেয়া হলো না, বর্তমান যান্ত্রিক জীবনে এটাই স্বাভাবিক- কিন্তু তাতে যেন সন্তানের কোনো অনুশোচনা বোধ তৈরি না হয়, সন্তান যাতে তওবার দিকে যেতে না পারে; সেজন্য কথিত বাবা দিবস, মা দিবস পালনের দ্বারা তার ভেতরের সে সুপ্ত অপরাধ প্রবণতার বিপরীতে তাকে আশ্বস্ত করিয়ে দেয়া হয়। এতটুকুতেই সে তৃপ্ত থাকে। নাউযুবিল্লাহ!
উল্লেখ্য, ইহুদী-নাছারাদের পারিবারিক জীবন বন্ধনহীন বলেই তারা বল্গাহারা, বোহেমিয়ান জীবনে প্রবাহিত। কথিত বাবা দিবস, মা দিবস পালনের দ্বারা সেরকম বন্ধনহীন জীবনেই তারা এদেশের মুসলমানকে করছে প্ররোচিত। কাজেই কথিত বাবা দিবস, মা দিবস, পালন যে খুব সূক্ষ্ম কিন্তু অনেক বড় ফাঁদ- একথা মুসলমানকে, এদেশবাসীকে তাদের অস্তিত্ব রক্ষার তাগিদেই অতি শীঘ্রই বুঝতে হবে। উপলব্ধি করতে হবে। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, "মহান আল্লাহ পাক তিনি যার ভালাই চান তাকে দ্বীনী সমঝ দেন।"