Quantcast
Channel: My story Troubled Galaxy Destroyed dreams
Viewing all articles
Browse latest Browse all 6050

তীব্র জলকষ্টে ভুগতে থাকা গ্রামের পর গ্রাম দেখেছি । এক একটা খাদান ১৫০ ফিট, ঝাড়খণ্ড লাগোয়া খাদান গুলো ২০০ ফিট আর পাতকুয়া ৭০ ফিট, ফলে রাতে সব জল খাদানে নেমে যায় । সেখানের জলে এতো কেলিক্যাল যে খাওয়া যায় না । নির্জলা উপবাসি একটা জেলা নাম বীরভূম ।

Next: ২৮ মে বহুদিন আগে পেড়িয়ে গেছে। চারদিকের তাবড় বিপ্লবীরাও এদিক ওদিক সুখে শান্তিতে "গাঁও ছোড়াব নেহি"গানটি গেয়ে বিপ্লবের পথ পরিস্কার করতে "স্বচ্ছ বিপ্লব"অভিযানে নেমেছেন। কিন্তু ভগবান, ছত্রধর, পাহাড়, জংগলের লড়াকু কমরেডরা, যারা আমাদের লড়াই করতে শিখিয়েছেন, তারা যখন "সংশোধনাগারে"সংশোধিত হচ্ছেন তখন সবাই চুপ। চলুন আমরা "সংশোধিত"বিপ্লব আনি। দেশে এখনো প্রচুর বাতানুকূল সভাগৃহ খালি পড়ে আছে, প্রচুর লোককে পার্টি লাইন বোঝান বাকি আছে যে।
$
0
0

২০০৭ এ আমি এক ধুলোভরা বীরভূম দেখেছি । বাইকে করে যেতে যেতে কালো আকাশ দেখেছি । তা আমার প্রেমিকার কোঁচানো চুলের কালো নয়, সে বনলতার ডাগর চোখের কালো নয় । একটা অঞ্চলে ২৫০ টা ক্রাসার চলছে সারাদিনরাতি । পাথর ভাঙছে । আর হুহু ধুলোয় ভরে যাচ্ছে মাঠ ঘাট প্রান্তর । রাত বারোটায় যখন চাটাইতে বসে ঘুমে দুলছি, দূর গ্রাম থেকে ভেসে আসা ঢিক চ্যাক গান শুনেছি । জিজ্ঞাসা করায় জানতে পেরেছি তাঁবু খাটিয়ে গ্রামের মাঝে চলছে পর্ণগ্রাফি । হাটে ফিয়ে দেখেছি মেয়ে কেনা বেচা পর্যন্ত হয় । শুনলে অবাক হবেন একটা ব্লাউল কিনে দিলে, অথবা একটা সাবান কিনে দিলে ক্রাসার মালিকের সাথে হোটেলে গিয়ে রাত কাটাতে রাজি হয়ে যান আদিবাসী মহিলারা । এমন কি বাইক চড়ালেও রাতবিরেতে অঘোর ঘুমন্ত মরদের পাশ থেকে টেনে ক্ষেতের মাঝে নিয়ে গিয়ে যা খুশী করা যায় ।

তীব্র জলকষ্টে ভুগতে থাকা গ্রামের পর গ্রাম দেখেছি । এক একটা খাদান ১৫০ ফিট, ঝাড়খণ্ড লাগোয়া খাদান গুলো ২০০ ফিট আর পাতকুয়া ৭০ ফিট, ফলে রাতে সব জল খাদানে নেমে যায় । সেখানের জলে এতো কেলিক্যাল যে খাওয়া যায় না । নির্জলা উপবাসি একটা জেলা নাম বীরভূম ।

দেখেছি বোল্ডারম্যান দের গ্রাম । বড় বড় পাথর যেগুলো মেশিনে ভাঙা যায় না, সেগুলো হাতুড়ি দিয়ে ভাঙতে হয় । সেই গ্রাম গুলোয় বহু লোকের চোখ নেই, চোখ যদিবা আছে আমাদের চোখের সাদা অংশটা সেটা তাদের টকটকে লাল । তাদের চোখের বিনিময়ে আমরা দুধ সাদা মজেকের মেঝে করেছি । আকরিয়ামে পুষেছি গোল্ডফিস । লাল নীল সবুজ হলুদ পাথর কুঁচির মাঝে হা হয়ে মুখ লুকিয়েছে নিকষ কালো চোখ ।

যে আদিবাসীরা জঙ্গল থেকে জ্বালানি, মধু, বিভিন্ন ছোট পশু পাখি, শাল পাতা, মহুয়া পেত । সেই সব জঙ্গল কেটে সাফ করে লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে আকাশমণি, সোনাঝুরি, ইউক্যালিপ্টাস । যে গাছের কেবল জ্বালানি কাঠ ছাড়া অন্য কিছু দেওয়ার মুরোদ নেই । বনদপ্তর লাগিয়েছেও ইচ্ছা করে, যাতে ভুমিপুত্র কন্যারা শহরের উপর নির্ভরশীল হয়ে পরে । নিজেদের কোন স্বতন্ত্র অর্থনীতি না থাকে । কিন্তু মনে রাখবেন বন্ধুরা দুর্ভিক্ষের সময় শহর উজার হয়ে গেলেও এই আদিবাসী গ্রাম গুলির কিছু হয়নি তাদের নিজেরদের যাপনের জন্য । সেটাই তাদের থেকে কেড়ে নেওয়া হচ্ছে ।

বীরভূম থেকে আসছেন রবিন সরেন । আমার দাদার মতোই হয় বটে । ২০০৯ থেকে অবৈধ খাদান ক্রাসার বন্ধ করে দিয়েছে ওরা । বহুবার খাদান মালিকরা সুপারি দিয়েছে রবিন দা কে মারতে । বাইকে করে ফেরবার পথে পাথর বোঝাই লরি এগিয়ে এসেছে মুখোমুখি সংঘর্ষে । আঁধার নামার পর গ্রামে ঢুকে রবিন দা কে চিনতে না পেরে বন্দুক উঁচিয়েছে খাদান মালিকের দালালরা । তবু আজও জঙ্গলের এই আদিবাসী নেতা লড়াই ছাড়েননি । তুমি ২০০ বছর বাঁচো । শুনবো বীর-ভুমের গল্প ।

২৭শে জুন, বিকাল ৩।৩০, মহাবোধি হল



Viewing all articles
Browse latest Browse all 6050

Trending Articles