NIRBHAYA Gangraped again in ORISSA!
Dalit 15 year old girl raped, tortured,mutilated, used Acid and then murdered with brutal apartheid in Bolangir Orissa!
Special HASTAKSHEP report from Bhuvneshwar
ওড়িশার বলাঙ্গীর জেলার খাপ্রাখোল ব্লকের সর্গিপালি গ্রামের দলিত ছাত্রী ১৫ বছরের নাবালিকাকে গণ ধর্ষণ ও বিভৎস হত্যা বহু চর্চিত নির্ভয়া হত্যাকাণ্ডকেও হার মানায়।
বিশিষ্ট সংবাদদাতা,ভুবনেশ্বর হস্তক্ষেপ
ভারতের মাটিতে কত জঘন্য ঘটনা ঘটতে পারে তার হিসাব স্বয়ং ভগবানও (যদিও নেই শুধু সর্বশক্তিমান উদ্দেশ্যে বলা) দিতে পারবেন না । ধীক এই সভ্য সমাজকে, ধীক এই গণতন্ত্রকে, ধীক এই সমাজ ব্যবস্থাকে, ধীক এই প্রশাসননে, ধীক এই গণ প্রচার মাধ্যমকে ।
বেটি বাচাঁও বেটি বাঢ়াও এর শ্লোগান দেন আমাদের দেশের প্রধান মন্ত্রী সে সব কি শুধু বড়লোক বা উচ্চবর্ণীয়দের মেয়েদের জন্যই প্রযোজ্য ?
সাধারণ শ্রেণীর মেয়েদের বা দলিত শ্রেণীর মেয়েদের জন্য তা নিশ্চই নয় । গত ২২ মে ২০১৫ তারিখের ঘটনা সুন্দর ফুট ফুটে ১৫ বছর বয়সের স্নেহলতা সকাল বেলায় নিত্য কর্ম সারতে গ্রামের পাশের ছোট নালায় গেছিল কিন্তু সে আর বাড়ি ফেরে নাই ।
ঘন্টা দুয়েক পরে খোঁজ করতে বেরিয়েছিল বাবা আর্ত ছত্রিয়া অনেক খোঁজার পর মেয়েকে না পেয়ে খাপ্রখোল থানায় লিখিত অভিযোগ করেছিল ।
পুলিসের কাছে কি আর আশা করা যায় সেই উদাসীন ভাব । তার পরের দিন ২৩এ মে সেই নালায় স্নানের জায়গা থেকে প্রায় ২০ মিটার দূরে পাওয়া গেল নিষ্পাপ স্নেহলতার ক্ষত বিক্ষত শরীর ।
ঘৃণ্য জাত ব্যবস্থার দ্বারা প্রভাবিত এই গ্রামের অন্ত্যেজরা প্রায়ই নির্যাতিত হয়ে চলেছে তথাকথিত সবর্ণদের কাছ থেকে । কখনও তাদের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া কখনও তাদের মার-ধোর করা এ রকম হামেশাই চলছে এখানে ।
ইদানীং মূলনিবাসী সমতা পরিষদের প্রভাবে সেই গ্রামের দলিতরা একটু সজাগ হয়েছ এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে স্বর উত্তোলন করতে শুরু করেছে ।
বিশেষ করে দলিত মহিলাদের দ্বারা গঠিত একটি স্বয়ং সহায়িকা গোষ্ঠী এই সব অন্যায়ের বিরুদ্ধে এবং গ্রামে প্রচলিত বেআইনী চোরা মদের কারবারে বিরুদ্ধে স্বর উত্তোলন করা শুরু করে এই গোষ্ঠী ।
এই গোষ্ঠীর নেত্রী হলেন ডালিম্ব ছত্রিয়া আর এই ডালিম্বের মেয়ে হল স্নেহলতা । প্রতিহিংসা পরায়ন এই সমাজ কতটা নৃশংস হতে পারে সেটা তিলে তিলে বুঝিয়ে দিয়ে গেল সদ্য ম্যাট্রিক পাশ করা ১৫ বছরের মেয়ের বিভৎস, জঘন্য হত্যা কাণ্ড ঘটিয়ে ।
দুষ্কৃতকারীরা প্রতিশোধের জ্বালায় এতটা পাশবিক হয়েছিল যে গণ ধর্ষনের পরে তাকে নির্মম ভাবে হত্যা করে । যে হত্যা নির্ভয়া কাণ্ডকেও লজ্জিত করে ।
ধর্ষনের পর ধারালো অস্ত্র দিয়ে মেয়েটির স্তন দুটি কাটে ফেলা হয়, তার যৌনাঙ্গ ছুরি দিয়ে ক্ষত বিক্ষত করা হয় । এতেও ক্ষান্ত হয়নি ক্ষুনীরা তার শরীরে বিভিন্ন জায়গায় ছুরিকাঘাত করা হয় এবং শেষে সারা শরীরে এসিডও ঢালা হয় ।
বেচারা মেয়েটি কোনমতেই নিজেকে বাচাঁতে পারেনি হত্যাকারীদের হাত থেকে যেটা অন্ততঃ নির্ভয়া পেরেছিল এবং সরকারী সহায়তায় তাকে বেশ কিছু দিন বাঁচিয়ে রাখা হয়েছিল ।
নির্ভয়ার ব্যাপারটা শুধু রাষ্ট্রীয় নয় অন্তরাষ্ট্রীয় ইস্যু হয়েছিল কিন্তু স্নেহলতা অনামধ্যেয় বলাঙ্গির জেলাতেই সীমাবদ্ধ রয়ে গেল । এই ঘটনা রাজ্য স্তরীয় মান্যতা লাভ করতে পারল না । হায়রে আমাদের গণ মাধ্যম !
উচ্চবর্ণীয়দের দ্বারা পরিচালিত প্রশাসন ব্যবস্থা, পুলিসি ব্যবস্থা নিরব থাকলেও রাজ্যের অগ্রিণী দলিত সংগঠনগুলো চুপ থাকেনাই এই ঘটনার পরে । ঘটনার দুই দিন পরেই রাজ্য স্তরীয় সংগঠন মূলনিবাসী যূব ও ছাত্র সাম্মুখ্য এবং স্থানীয় কয়েকটি দলিত সংগঠন দ্বারা আয়োজিত হয়েছিল র্যালী এবং খাপ্রাখোল ব্লক ও থানা ঘেরাও এবং মুখ্য মন্ত্রীর উদ্দেশ্যে জ্ঞাপন প্রদান । গত ২৭ই মে মাসে রাজ্য স্তরীয় একটি তথ্য অনুসন্ধানকারী দল অকুস্থল পরিদর্শন করতে গেছিল । এই অনুসন্ধানকারী দলটিতে ছিলেন পূর্বতন এক জন এম পি মোহন জেনা, মূলনিবাসী সমতা পরিষদের সংযোজক অভিরাম মল্লিক, ওড়িশার উচ্চ ন্যায়ালয়ের উকিল শ্রী রাউত ও অন্যান্যরা । এই অনুসন্ধানকারী দল ঘটনাস্থল দেখার পর আর্ত, ডালিম্ব ও কিছু গ্রামবাসীর সাথে কথা বলেন । শোকবিহ্বল ডালিম্ব এই দলের সামনে নিজের আবেগ সামলাতে না পেরে উত্তপ্ত মাটির উপর গড়া-গড়ি দিয়ে আর্তনাদ করতে করতে মেয়ের হত্যার বয়ান দিচ্ছিল । স্নেহলতার বাবা আর্ত ছত্রিয়া প্রায় উন্মাদের মত হয়ে কিছু কথা রেখেছিল মোহন বাবু ও অভিরাম বাবুদের দলের সামনে – "২৩ তারিখ দিন হরিশংকর নালাতে স্নানঘাট থেকে ২০ মটার দূরে ঝোপ-ঝাড়ের ভেতরে মেয়ের ক্ষতাক্ত মৃত শরীর দেখি তাকে বিভৎস ভাবে হত্যা করে তার শরীরে এসিড ঢেলে দিয়েছিল বদমাশরা । পুলিসের সাইন্টিফিক দল এসে নালার থেকে বালটি ও কাপড় চোপড় উদ্ধার করেছিল । পুলিস সাথে করে কুকুর এনেছিল কিন্তু কুকুরকে দিয়ে মেয়ের শব শুঁকতে দেয় নাই বলেছিল যে এই শব শুঁকলে কুকুরের ক্ষতি হবে"। এর পর আর্ত আর কিছু বলতে পারলেন না ।
লোচন সুনার ছেলে বাসুদেব সুনার মতে "আমরা ২৩ তারিখ রাত আটটায় খাপ্রাখোল ডাক্তারখানায় স্নেহলতার শব নিয়ে পৌঁছাই । রাত্রি হয়ে যাওয়ার কারণ ডাক্তারবাবুরা ময়নাতদন্ত করলেন না । তারপর দিন সকাল ৯ টার সময় একজন ডাক্তারবাবু এসে বললেন শবের উপর থেকে কাপড় সরাও । আমরা শবের উপর থেকে কাপড় সরিয়ে দেওয়ার পর সে শুধু এক নজর দেখেই বললেন যে যা বোঝার আমি বুঝে নিয়েছ তোরা এবার শব নিয়ে চলে যা"। নির্ভয়া কাণ্ডের পর সুপ্রীম কোর্টের আদেশ রয়েছে এ ধরণের ঘটনার ময়নাতদন্তের সময় ভিডিও রেকর্ডিং করতে হবে । কোথায় সুপ্রীম কোর্ট আর কোথায় সর্গিপালি গ্রাম ? খাপ্রখোলের ডাক্তারবাবুরা এ সব আদেশে কথা জানেন কিনা সন্দেহ । তাই ময়নাতদন্তের জন্য ভীডিও ক্যামেরা তো দূর ছুরি কাচিঁও দরকার হল না স্নেহলতার জন্য । শুধু শোসিয়াল মিডিয়ার দ্বারা এত বড় ইস্যুকে হাইলাইট করা সম্ভব নয় গণ মাধ্যমের দরকার তাই সকলকে অনুরোধ স্নেহলতা কাণ্ডের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে এটাকে একটা গণ ইস্যূ করার পণ নিন যার দ্বারাই স্নেহলতাকে আমরা যথোপোযুক্ত সম্মান জানাতে পারব ।