খালেদার বহরে আবারও হামলা
চতুর্থ দিনের মতো হামলার শিকার হলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। প্রচারণার পাঁচ দিনের চারদিনই ইট-পাটকেল হামলা হলো তার ওপর।
এবার ঘটনাস্থল রাজধানীর বাংলামোটর। নির্বাচনি প্রচারণার জন্য বুধবার বিকেল সোয়া ৫টার দিকে ঢাকা দক্ষিণ এলাকার দিকে খালেদার গাড়িবহর যাওয়ার সময় এ ঘটনা ঘটে। এসময় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বেধড়ক পিটুনিতে মাথা ফেটে গেছে খালেদা জিয়ার দুই নিরাপত্তারক্ষীরও।
এ হামলার নেতৃত্বে ছিলেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মশিউর রহমান রুবেল ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মামুন অাহমেদ-এই অভিযোগ বহরে থাকা বিএনপি ও ছাত্রদল নেতাদের। তবে এ ব্যাপারে মশিউর রহমান রুবেল দাবি করেন, তাদের একজন কর্মী অাহত হওয়ার পরেই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও চড়াও হয় গাড়ি বহরের দিকে।
বুধবার সন্ধ্যায় ৬.১৮ মিনিট থেকে তিন দফায় কথা হয় এই নেতার সঙ্গে। বলেন হামলার বিস্তারিত।
হামলার বিষয়ে বিএনপির দাবি, ছাত্রলীগ নেতা মশিউর রহমান রুবেল ও মামুন অাহমেদের নেতৃত্বে শতাধিক ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ইট-পাটকেল ও লাঠিসোটা নিয়ে আকস্মিক হামলা করে। হামলার এক পর্যায়ে গুলিও করা হয় বলে দাবি বহরে থাকা কয়েকজনের।
যদিও ছাত্রলীগ নেতা রুবেল বললেন, তারা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সাঈদ খোকনের প্রচারণায় ব্যস্ত ছিলেন। এসময় তার সঙ্গে ৩০ থেকে ৪০ জন নেতাকর্মী ছিল।
তার দাবি, গুলি ছাত্রলীগ করেনি। খালেদা জিয়ার নিরাপত্তারক্ষীদের একজনই শটগান বের করে গুলি করেছে।
সর্বশেষ তথ্যমতে, বাংলামোটরে ঘটনায় দুই সিএসএফ সদস্য আহত হন। তাদের মধ্যে লে. কর্নেল (অব.) শামিউলের অবস্থা গুরুতর। অপরজনের নাম জানা যায়নি। তারা এখন পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন বলে জানা গেছে।
তবে মশিউর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, 'খালেদা জিয়ার গাড়ি বহরে থাকা সিএসএফের একটি গাড়ির ধাক্কায় ৫৬ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক লিটন রাস্তায় পড়ে গেলেই গাড়ি বহরকে প্রতিরোধ করা হয়। এরপর লিটনকে গুরুতর অাহত অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এছাড়া শাহবাগ থানা ওয়ার্ডের নেতা জাকির নামের একজন অাহত হয়, তাকেও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং চিকিৎসকরা জানিয়েছেন তার মেরুদণ্ডে অাঘাত রয়েছে।'
মশিউর রহমান রুবেল বলেন, 'অামরা সিটি নির্বাচনে সাঈদ খোকনের পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছিলাম। হঠাৎ দেখি যানজট ছাড়তেই অামাদের এক কর্মী গাড়ি ধাক্কা খেয়েছে। এরপর কর্মীরা ক্ষোভের প্রকাশ ঘটিয়েছে। কিন্তু অামরা জানতাম না যে, এটি খালেদা জিয়ার গাড়ি বহর বা এতে তিনি অাছেন।'
এক্ষেত্রে খালেদার বহরে থাকা এক ছাত্রদল নেতার বক্তব্য, 'ম্যাডামের গাড়ি যানজটে থাকা অবস্থাতেই ছাত্রলীগের কর্মীরা লাঠিসোটা ও ইট-পাটকেল নিয়ে হামলা করে। এরপর ম্যাডামের গাড়ি দ্রুত টান দিলে দুজন ছিটকে পড়ে যায়। তারা বেধড়ক মারধর করে সিএসএফ-এর দুই সদস্যকে।'
এর অাগে গতকাল মঙ্গলবার ফকিরাপুল, সোমবার কাওরানবাজার, রবিবার উত্তরায় প্রচারণাকালে একাধিকবার খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলা হয়। এর মধ্যে সোমবার কাওরানবাজারের হামলায় ছাত্রলীগের সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ উঠেছে। ওই হামলায় স্থানীয় অাওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সরাসরি ভূমিকা ছিল বলেও জানা যায়।
বুধবার খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে থাকা ছাত্রদলের এক নেতা জানান, গাড়ি বাংলামোটর সিগনাল অতিক্রম করার সময় ইট-পাটকেল অাসে। এতে খালেদা জিয়ার গাড়ির কাঁচ ভেঙে যায়। এসময় খালেদা জিয়ার দুই সিএসএফ সদস্যকে মারধর করে আটকে রাখে সরকার সমর্থকরা। তাদের একজনের মাথা ফেটে গেছে বলেও দাবি করেন ওই নেতা।
এ রিপোর্ট লেখার সময় খালেদা জিয়ার গাড়িবহর হেয়ার রোড হয়ে বিএনপি কার্যালয়ের দিকে গেছে। বর্তমানে খালেদা জিয়া নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।