আচ্ছা, পয়লা বৈশাখে সোহরওয়ার্দি উদ্যানের গেটের কাছে ৩০-৩৫টা ছেলে কয়েকটা মেয়েকে বীভৎসভাবে আক্রমণ করার সময়, ওই মেয়েদের যখন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁচাচ্ছিল লিটন নন্দী, সুমন সেনগুপ্ত, আর অমিত দে, তখন পয়লা বৈশাখ উৎযাপন করার অপরাধে দেশের কোথাও হিন্দুদের কোনও মন্দির কি ভাঙা হচ্ছিল, কোনও হিন্দু বাড়িতে আগুন ধরানো হচ্ছিল, কোনও হিন্দু মেয়েকে ধর্ষণ করা হচ্ছিল? জাস্ট জানার জন্য।
- Bhattacharyya Tutul while lulling, Mummy used to sing 'Dhana dhanye pushpe bhora, Amader ei basundhara' ---- I wake up to see my Mummy nowhere, That earth too disappear and Only an angry vlocano I'm lying on. (ঘুম পাড়াতে পাড়াতে মা গাইতেন, ধনধান্যে পুষ্পেভরা আমাদের এই বসুন্ধরা -- ঘুম ভাঙতেই দেখি মা নেই, সে পৃথিবীটা ও উধাও, কেবল এক উন্মুক্ত আগ্নেগিরির বিছানায় একা শুয়ে আছি. ) তবে আমি আশাবান সব পাল্টাবে, সব কিছু , পাল্টাতে হবেই।
- Dibakar Chakraborty ছবি, ফুটেজ ইত্যাদি থেকে কুকুর গুলোকে শনাক্ত করে পেদিয়ে লম্বা করার আওয়াজ ওঠানো দরকার। বাংলাদেশের মিডিয়া সম্বন্ধে আমার ধারনা নেই। মিডিয়া এইসব ব্যাপারে এগিয়ে এসে জনমত সৃষ্টি করে সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। এমন প্রকাশ্য দিবালোকে সবার সামনে এত সাহস কিভাবে পায়, সমাজকে ভাবতে হবে। এটা একটা অশনি সঙ্কেত বাঙ্গালীর জন্য। খুব দুশ্চিন্তার বিষয়।
- Ranabir Bhattacharyya Taslima Nasreen যা বলেছেন! মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী বাংলাদেশ এতো ধর্মীয় অসহিস্নু হয়ে গেছে ভাবা যায় না। নারী এবং মুসলিম ব্যতীত সমস্তও মানুষের প্রাণ নিলামে উঠেছে। অবাক লাগে, এই নিয়ে হাসিনা বা খালেদা সবাই চুপ! সবাই ভোটের বাজারে মুনাফা নেবার অপেক্ষায়। কয়েক বছরের মধ্যে বাংলাদেশ হিন্দু- শূন্য হবে। পরের প্রজন্ম হয়তো আর বিশ্বাসই করবেনা যে বাঙ্গালদেশে হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষরাও থাকতেন এক সময়। এটা কি কোন কোনভাবেই হিটলারের ethnic cleansing এর মতো নয়??
অভিজিৎটা নেই। বুকের ভেতরটা হু হু করে।
- Ranabir Bhattacharyya অভিজিতের মৃত্যুর বিচার হবে না। কে করবে বলুন Taslima Nasreen? প্রহসন চলছে সমগ্র বাংলাদেশ জুড়ে! মানুষ মারার খেলাটা বেশ জমে উঠেছে আর তার সাথ গণ-শ্লীলতাহানি!
- Tanima Tasnin মানুষ কত কষ্ট হলে বলে বুকের ভেতরটা হু হু করে আর গুণের মত কিছু তথাকথিত সুশীল আসে পরোক্ষ ভাবে এসব হত্যাকে জায়েজ করতে!! আজিব মনে হয় যেন মুক্তমনা হয়ে আমি অপরাধী হয়ে গেছি আমারি সব দায়, আমাকেই লুকিয়ে লুকিয়ে চলতে হবে। তো এই দেশে যদি মুক্তমনের মানুষদের খালি লুকিয়ে বাঁচার পরামর্শ দেন তাহলে নিজের দায় অস্বীকার করতে পারবেন এরকম একটা জঙ্গী রাষ্ট্র গঠন করার জন্য? গুণ, ধর্ষনের জন্য যেরকম নারীর পোশাককে দায়ী করা হয় আপনার কমেন্টিও সেরকম হয়েছে।বাহ আপনাদের মত হজমি লেখকদের কারণেই এই দেশে মুক্তমত এখনো এত ট্যাবু!!
- Nripendra N Sarker নির্মলেন্দু গুণ - অভিজিৎকে ধর্মান্ধরা খুন করল। আওয়ামী লীগ সরকার চুপ মেরে গেল। নেত্রী হাসিনা অভিজিতের বাবার ছাত্রের স্ত্রী হিসেবে রাতের আঁধারে চুপিসারে অভিজিতের বাবাকে ফোন করলেন। এসবের মধ্যে একটা অন্যায় বা ভুলও তিনি খুঁজে পেলেন না। ভুল পেলেন অভিজিতের - স্ত্রীর হাত ধরে ঘুরাঘুরি করা ঠিক হয়নি। আওয়ামী সরকারকে কিছু বলতে না পারলে এসব সাধারণ কথা বলতে আইসেন না।
ওয়াও। ফেসবুক ভেরিফাইড। দু'দিন আগে আমাকে এই আইডিতে লগইন করতে দিত না ফেসবুক। বলতো তোমার অ্যাকাউন্ট ডিসেবেল্ড। আর আজ কিনা ভেরিফাইড! না চাইতেই ভেরিফাইড। দু'দিন আগে ঝাঁটা মেরে বের করেছে ফেসবুক থেকে, আর আজ সাদরে আমন্ত্রণ জানিয়ে মণ্ডা মিঠাই খেতে দিচ্ছে। সবই মিডিয়ার কল্যাণে। মিডিয়াকে ফোর্থ এস্টেট বলা হয়, আমি তো ফার্ষ্ট এস্টেট বলি। ফেসবুকের বন্ধুরাও অবশ্য যথেষ্ট প্রতিবাদ করেছে। তারা মার্ক জুকারবার্গকে পর্যন্ত জানিয়েছে, আমার আইডি ফেরত চেয়েছে.
প্রথম প্রতিবাদটা আমিই করেছিলাম টুইটারে। বলেছিলাম, 'স্টুপিড ইসলামিস্টরা রিপোর্ট করেছে বলে স্টুপিড ফেসবুক আমার আইডি ডিসেবল করে দিয়েছে'। ব্যস, মিডিয়ার চোখে পড়লো টুইট। অমনি ফোনের পর ফোন। ইন্টারভিউএর জন্য ছেঁকে ধরলো। চিরকাল আমি মিডিয়াকে তাড়িয়েছি। কিন্তু ইদানীং খুব ক্রাইসিসের সময় মিডিয়াকে আগের মতো তাড়াই না। কারণ আমার বা গুটিকয় আমাদের কোনও ক্ষমতা নেই লক্ষ জনের কাছে পৌঁছোনো। কিন্তু আমাদের ওপর যে নির্যাতন হয়, তা মানুষকে জানানো দরকার। এসব তো ইতিহাস। ইতিহাস আমরা একা একা্ জানলেই চলবে?
ফেসবুক ফিরে পেয়েছি। প্রতিবাদ কাজে লেগেছে।
আমার প্রতিবাদটা পড়ুন।
'গত পরশু আমার ফেসবুক আইডি ভ্যানিশ করে দিয়েছে ফেসবুক কর্তারা। এই জঘন্য ব্যবহার নতুন নয়, এর আগেও একই কাণ্ড করেছে ফেসবুক। আইডি আর ফেরত দেয়নি। আইডি ভ্যানিশ করা মানে পেজ টেজ সহ পারসোনাল একাউন্ট গায়েব করে দেওয়া। আর একাউন্টের সঙ্গে যে সব ইমেইল বা মোবাইল ফোন জড়িত থাকে, সেগুলোকেও কালো তালিকাভুক্ত করে দেওয়া। ওই ইমেইল বা মোবাইল নতুন করে ফেসবুক একাউন্ট খুলতে আর ব্যবহার করা যায় না। যত ইমেইল আছে আমার, যত মোবাইল আছে, সবই ফেসবুক দ্বারা কালো তালিকাভুক্ত।
আমাকে আমার নামে একাউন্ট খুলতে দেয়না ফেসবুক। তাই গতবার নামটা উল্টে, তসলিমা নাসরিনের জায়গায় নাসরিন তসলিমা লিখে আমাকে একাউন্ট খুলতে হয়েছিল। আমার নামটি কিন্তু অন্যদের ব্যবহার করতে দিচ্ছে ফেসবিক। এই নামে অন্যদের একাউন্ট খুলতে সুবিধে করে দিচ্ছে। একবার গুনে দেখেছিলাম তসলিমা নাসরিন নামে অন্তত একহাজার ফেক একাউন্ট আছে ফেসবুকে।
যতবারই আমি ফেসবুকে একাউন্ট খুলেছি বা পেইজ শুরু করেছি, জনপ্রিয় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেসবের বিরুদ্ধে ধর্মান্ধ নারীবিরোধী সন্ত্রাসী জল্লাদরা ফেসবুকে রিপোর্ট করেছে। ফেসবুক পলিসি অত্যন্ত খারাপ একটা পলিসি। আমার শত্রুরা অনেকে মিলে রিপোর্ট করলেই আমি বাতিল হয়ে যাবো, ফেসবুক কর্তারা বিচার করবে না কে ভালো কে মন্দ। ফেসবুক কর্তারা আমার বাংলা স্ট্যাটাসগুলো অনুবাদ করে দেখবে না কী লিখি আমি? যারা আমার বিরুদ্ধে রিপোর্ট করে, তারা ফেসবুক কী কারণে ব্যবহার করে? ফেসবুককে তারা ধর্মীয় সন্ত্রাস ছড়ানোর উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছে, ফেসবুককে তারা নারীবিদ্বেষ ছড়ানোর কাজে ব্যবহার করছে। ফেসবুক কোন পক্ষ নেবে, সমাজকে ধ্বংস করার কাজে যারা ফেসবুক ব্যবহার করে? নাকি সমাজকে নির্মাণ করার কাজে যারা ফেসবুক ব্যবহার করে?
পূতিগন্ধময় বৈষম্যের সমাজকে যারা বদলাতে চায়, মানুষকে যারা সমতা, সমানাধিকার, মানবাধিকার ইত্যাদি বিষয়ে কথা বলে, যারা মানুষকে ভালো কাজের জন্য প্রেরণা দেয়, পুরুষতান্ত্রিক রক্ষণশীল গণ্ডমূর্খরা যাদের বিপক্ষে লাফায়, তাদের কোনও অধিকার নেই ফেসবুকে থাকার?
ফেসবুক তবে কি শুধু অজাতশত্রুকেই চায়!যার বিরুদ্ধে রিপোর্ট করার কেউ নেই, যার লেখা সবারই সক্কলেরই পছন্দ হবে? ছিঃ ফেসবুক ছিঃ। আজ সারা পৃথিবীর মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করছে।এটি কোনও ছোটখাটো প্রতিষ্ঠান নয়। আজ এই প্রতিষ্ঠানের আচার ব্যবহার সস্তা রোবোটের মতো।
ফেসবুকে যত একাউন্ট আছে তসলিমা নাসরিন নামে, সব ফেক, সব নকল। এইসব ফেক একাউন্ট যারা বানিয়েছে, তারা মানুষকে ধোঁকা দেওয়ার জন্যই বানিয়েছে। মানুষ মনে করছে ওই একাউন্টগুলো বোধহয় আমার। আর তারা আমার কথা বলে তাদের নিজের কথা গেলাচ্ছে নিরীহ পাঠকদের। ফেসবুক কর্তাদের আমি অনেক বলেছি ওই ফেক একাউন্টগুলো বন্ধ করার জন্য। ফেসবুক বন্ধ করেনি। আমার রিপোর্টের কোনও মূল্য নেই। শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের রিপোর্টে কোনও ফল পাওয়া যায় না। আরগানাইজড মৌলবাদী শক্তিই জিতে যায় ফেসবুকের এই অদ্ভুত পলিসিতে। ফেসবুক আমার নামে তৈরা করা ফেক একাউন্ট বন্ধ করতে নয়, বরং আমার আসল একাউন্ট বন্ধ করার জন্য উদগ্রীব। এর কারণ একটিই, আমার বিরুদ্ধে মৌলবাদীদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগার কমপ্লেইন যায়।
দুই বাংলায় সরকার আমার উপস্থিতি নিষিদ্ধ করেছে, আমার বই নিষিদ্ধ করেছে, পত্র পত্রিকা আমার লেখা নিষিদ্ধ করেছে, প্রকাশকরা আমার বই প্রকাশ বন্ধ করেছে, সেকারণে ফেসবুকই ছিল ভরসা। ফেসবুকেই নিষেধাজ্ঞা আর সেন্সরশীপের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলেছি। ফেসবুকেই আমার সমস্ত মত আমি প্রকাশ করছিলাম। আমার ফেসবুকের বন্ধু এবং অনুসারীদের প্রায় সবাই ছিল বাঙালি। বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গের বাঙালি। তারা অত্যন্ত আগ্রহের সঙ্গে পড়ছিল আমার লেখা। দ্রুত অনুসারীর সংখ্যা বাড়ছিল। দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল আমার ফেসবুকের লেখাগুলো। যারা আমার লেখা পড়ার সুযোগ পায় না, ফেসবুকের মাধ্যমে তারা সেই সুযোগটা পেয়েছিল। পৃথিবীতে আর কোনও লেখক এত ব্যানিং আর এত সেন্সরশিপের শিকার নয়। এক আমিই। আমারই প্রবেশ নিষেধ সবখানে। এখন, শেষ আশ্রয়, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকেও কি আমার প্রবেশ নিষেধ?চিরকালের জন্য?
মৌলবাদী অপশক্তি সমাজটাকে দখল করে নিচ্ছে, কে দেশের ভেতর থাকবে, কে বেরিয়ে যাবে, কে বেঁচে থাকবে, কাকে মরতে হবে এই সিদ্ধান্ত তো এরা নিচ্ছেই। এই মৌলবাদী সন্ত্রাসীরা ফেসবুকেও খুব অ্যাকটিভ। অরগানাইজড। মনে হচ্ছে এরা ধীরে ধীরে দখল করে নিচ্ছে ফেসবুক। এরা সিদ্ধান্ত নিচ্ছে কে ফেসবুকে থাকবে, কে থাকবে না। ফেসবুক কর্তাদের বুদ্ধিসুদ্ধি বলে কিছু নেই। এটুকু বোঝার ক্ষমতা নেই যে তারা সন্ত্রাসীদের অঙ্গুলি হেলনে চলছে'।