বাংলাদেশি হিন্দুদের ভারতে ঠাঁই দিতে বিল
রঞ্জন বসু, দিল্লি॥
বাংলাদেশ বা পাকিস্তান থেকে যে হিন্দু শরণার্থীরা ভারতে আশ্রয় নিতে আসবেন, তাদের পুনর্বাসনের জন্য একটি বিল পেশ করার কথা বিবেচনা করছে ভারতের বিজেপি সরকার। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের বাসভবনে বিজেপির শীর্ষস্থানীয় নেতামন্ত্রীদের নিয়ে এ ব্যাপারে ইতোমধ্যেই এক দফা বৈঠক হয়েছে।
হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপির বরাবরের নীতি হল, প্রতিবেশী দেশ থেকে যে হিন্দুরা ভারতে আশ্রয় নিতে আসবেন তারা তাদের চোখে শরণার্থী। কিন্তু মুসলিমরা ভারতে ঢুকলে তারা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী বলে চিহ্নিত হবেন। এই নীতিকে তারা মোটেই 'পলিটিক্যালি ইনকারেক্ট'বলে মনে করে না, বরং কোনও রাখঢাক না করেই বিজেপি নেতারা তাদের এই হিন্দুপ্রীতির বড়াই করে থাকেন। যার ফলশ্রুতি এই প্রস্তাবিত হিন্দু পুনর্বাসন বিল।
বস্তুত প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে নরেন্দ্র মোদিও একাধিক জনসভায় বলেছেন, 'পৃথিবীর যে কোনও দেশ থেকে হিন্দুদের যদি বিতাড়িত হতে হয় তাহলে তাদের যাওয়ার জায়গা আছে একটাই, সেটা হল ভারত। ফলে হিন্দুরা এলে ভারতকে তাদের আশ্রয় দিতেই হবে। ভারতের কোনও রাজ্যই তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকতে পারবে না!'
আসামে ওই একই জনসভায় তিনি আবার এমন কথাও বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে আসা অনুপ্রবেশকারীদের ঠেলায় কাজিরাঙা অরণ্যের গন্ডারও নাকি ঘরছাড়া হচ্ছে! এই অনুপ্রবেশকারী বলতে যে মুসলিমদেরই বোঝানো হচ্ছে, সেটা অবশ্যই বলার অপেক্ষা রাখে না।
তো এখন এই হিন্দু শরণার্থীদের ভারতে আশ্রয় দেওয়ার বিষয়টিকে পাকাপাকি একটা চেহারা দিতেই কেন্দ্রের বিজেপি সরকার তাদের পুনর্বাসনের জন্য নতুন একটি বিল পাস করাতে চাইছে। এই বিল যদি ভারতের পার্লামেন্টে অনুমোদিত হয়, তাহলে বিদেশ থেকে ভারতে আসা হিন্দুরা এদেশে বসবাসের আইনি অধিকার পাবেন। বিজেপি দেশের ক্ষমতায় থাকুক বা না থাকুক তাতেও কিছু আসবে যাবে না। 'বিদেশি'হিন্দুদের অধিকার ভারতে সুরক্ষিতই থাকবে।
বিলটি আনার জন্য বিজেপির ওপর তাদের অভিভাবক আরএসএস বা রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘেরও অবশ্য বেশ চাপ আছে। সঙ্ঘের একটি উচ্চপদস্থ সূত্র বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন, 'বিলটি দ্রুত পার্লামেন্টে আনা দরকার, কারণ পাকিস্তান থেকে স্বল্পমেয়াদি ভিসা নিয়ে আসা বেশ কয়েক হাজার হিন্দু এখন ভারতে এসে আর ফিরতে চাইছেন না। রাজস্থান বা দিল্লির বিভিন্ন শিবিরে তাদের মানবেতর জীবন কাটাতে হচ্ছে!'
বস্তুত পাকিস্তানি হিন্দুদের (ও শিখ) কথা ভেবেই বিলটি এত তড়িঘড়ি আনার জন্য উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। তবে বিলটি পাস হলে অবশ্যই বাংলাদেশ থেকে আসা হিন্দু পরিবারগুলোও এর সুবিধা পাবেন।
গত সপ্তাহে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের বাসভবনে এই বিল নিয়ে আলোচনা করতে যে বৈঠক ডাকা হয়েছিল সেখানে অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ ছাড়াও নীতিন গডকড়ি, ভেঙ্কাইয়া নাইডু, রবিশঙ্কর প্রসাদসহ বিজেপির প্রথম সারির সব ক্যাবিনেট মন্ত্রীই হাজির ছিলেন। ছিলেন দলের প্রবল শক্তিশালী প্রেসিডেন্ট অমিত শাহও। আরএসএসের দিক থেকে বৈঠকে প্রতিনিধিত্ব করেন সঙ্ঘের নেতা কৃষ্ণগোপাল ও রামলাল (যিনি এখন বিজেপিতে ডেপুটেশনে)।
বৈঠকে বিলটি আনার প্রয়োজন নিয়ে একমত হয়েছেন সকলেই। তবে পুনর্বাসনে কী কী বিধান রাখা হবে, হিন্দু শরণার্থীদের কীভাবে ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে তা নিয়ে এখনও বেশ কিছু আলোচনার অবকাশ আছে বলে জানা গেছে।
প্রস্তাবিত এই বিলের চেহারা কীরকম হতে পারে, সেটা নিয়ে বাংলা ট্রিবিউন যা জানতে পেরেছে তা এরকম:
(১) পাকিস্তান বা বাংলাদেশ থেকে আসা হিন্দুরাই এই পুনর্বাসনের জন্য আবেদন করতে পারবেন। আবেদনপত্রে তাদের জানাতে হবে, কেন তারা নিজের দেশ ছেড়ে চলে আসতে বাধ্য হয়েছেন।
(২) এই হিন্দুদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য ভারত তাদের জন্য নাগরিকত্ব আইনও কিছুটা শিথিল করবে। যেমন, কোনও হিন্দু শরণার্থীর সন্তান যদি বাবা-মার পাসপোর্টে ভারতে ঢুকে থাকে, তাহলে নিজের (বাংলাদেশি/পাকিস্তানি) পাসপোর্ট না থাকা সত্ত্বেও সে ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবে।
(৩) সবচেয়ে বড় কথা, এই পুনর্বাসনের দায়িত্ব ভাগ করে নিতে হবে দেশের প্রতিটি রাজ্যকেই। অর্থাৎ, বাংলাদেশ থেকে হিন্দুরা এলে শুধু সীমান্তবর্তী পশ্চিমবঙ্গ-আসাম-ত্রিপুরাতেই তাদের থাকতে হবে, কিংবা পকিস্তান থেকে হিন্দুরা সীমান্ত পেরোলে রাজস্থানের জয়সলমীর-যোধপুরেই তাতের ঠাঁই হবে ব্যাপারটা মোটেই সেরকম হবে না।
সোজা কথায়, বিলে এমন বিধান থাকবে যাতে মধ্যপ্রদেশ-কর্নাটক-তেলেঙ্গানা-অন্ধ্র বা হিমাচলের মতো সীমান্ত লাগোয়া নয়, এমন রাজ্যগুলোতেও হিন্দু শরণার্থীদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা যায়। ফলে দেশের সব রাজ্যই এই হিন্দুদের জমিজায়গা দেওয়ার বা রুটিরুজির ব্যবস্থা করার জন্য দায়বদ্ধ থাকবে। বোঝাটা শুধু সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলোর ওপর পড়বে না।
এই বিল যখনই পাস হোক, বাংলাদেশের হিন্দু জনসংখ্যার যে অংশটা সে দেশে নানাভাবে নির্যাতিত হচ্ছে বলে বিজেপি মনে করছে, তাদের জন্য ভারতে অন্তত একটা ভরসার জায়গা তৈরি করা যাবে বলেই দলের নেতৃত্বের ধারণা।
বিজেপির এক শীর্ষস্থানীয় নেতার কথায়, 'কাগজে-কলমে আমরা হিন্দুরাষ্ট্র না হতে পারি, সারা বিশ্বের হিন্দুদের জন্য শেষ রাষ্ট্র যে একটাই সেটা তো আমরা প্রমাণ করতে পারব!'
http://www.banglatribune.com/%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%82%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B6%E0%A6%BF-%E0%A6%B9%E0%A6%BF%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A7%81%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%A4
রঞ্জন বসু, দিল্লি॥
বাংলাদেশ বা পাকিস্তান থেকে যে হিন্দু শরণার্থীরা ভারতে আশ্রয় নিতে আসবেন, তাদের পুনর্বাসনের জন্য একটি বিল পেশ করার কথা বিবেচনা করছে ভারতের বিজেপি সরকার। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের বাসভবনে বিজেপির শীর্ষস্থানীয় নেতামন্ত্রীদের নিয়ে এ ব্যাপারে ইতোমধ্যেই এক দফা বৈঠক হয়েছে।
হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপির বরাবরের নীতি হল, প্রতিবেশী দেশ থেকে যে হিন্দুরা ভারতে আশ্রয় নিতে আসবেন তারা তাদের চোখে শরণার্থী। কিন্তু মুসলিমরা ভারতে ঢুকলে তারা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী বলে চিহ্নিত হবেন। এই নীতিকে তারা মোটেই 'পলিটিক্যালি ইনকারেক্ট'বলে মনে করে না, বরং কোনও রাখঢাক না করেই বিজেপি নেতারা তাদের এই হিন্দুপ্রীতির বড়াই করে থাকেন। যার ফলশ্রুতি এই প্রস্তাবিত হিন্দু পুনর্বাসন বিল।
বস্তুত প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে নরেন্দ্র মোদিও একাধিক জনসভায় বলেছেন, 'পৃথিবীর যে কোনও দেশ থেকে হিন্দুদের যদি বিতাড়িত হতে হয় তাহলে তাদের যাওয়ার জায়গা আছে একটাই, সেটা হল ভারত। ফলে হিন্দুরা এলে ভারতকে তাদের আশ্রয় দিতেই হবে। ভারতের কোনও রাজ্যই তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকতে পারবে না!'
আসামে ওই একই জনসভায় তিনি আবার এমন কথাও বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে আসা অনুপ্রবেশকারীদের ঠেলায় কাজিরাঙা অরণ্যের গন্ডারও নাকি ঘরছাড়া হচ্ছে! এই অনুপ্রবেশকারী বলতে যে মুসলিমদেরই বোঝানো হচ্ছে, সেটা অবশ্যই বলার অপেক্ষা রাখে না।
তো এখন এই হিন্দু শরণার্থীদের ভারতে আশ্রয় দেওয়ার বিষয়টিকে পাকাপাকি একটা চেহারা দিতেই কেন্দ্রের বিজেপি সরকার তাদের পুনর্বাসনের জন্য নতুন একটি বিল পাস করাতে চাইছে। এই বিল যদি ভারতের পার্লামেন্টে অনুমোদিত হয়, তাহলে বিদেশ থেকে ভারতে আসা হিন্দুরা এদেশে বসবাসের আইনি অধিকার পাবেন। বিজেপি দেশের ক্ষমতায় থাকুক বা না থাকুক তাতেও কিছু আসবে যাবে না। 'বিদেশি'হিন্দুদের অধিকার ভারতে সুরক্ষিতই থাকবে।
বিলটি আনার জন্য বিজেপির ওপর তাদের অভিভাবক আরএসএস বা রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘেরও অবশ্য বেশ চাপ আছে। সঙ্ঘের একটি উচ্চপদস্থ সূত্র বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন, 'বিলটি দ্রুত পার্লামেন্টে আনা দরকার, কারণ পাকিস্তান থেকে স্বল্পমেয়াদি ভিসা নিয়ে আসা বেশ কয়েক হাজার হিন্দু এখন ভারতে এসে আর ফিরতে চাইছেন না। রাজস্থান বা দিল্লির বিভিন্ন শিবিরে তাদের মানবেতর জীবন কাটাতে হচ্ছে!'
বস্তুত পাকিস্তানি হিন্দুদের (ও শিখ) কথা ভেবেই বিলটি এত তড়িঘড়ি আনার জন্য উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। তবে বিলটি পাস হলে অবশ্যই বাংলাদেশ থেকে আসা হিন্দু পরিবারগুলোও এর সুবিধা পাবেন।
গত সপ্তাহে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের বাসভবনে এই বিল নিয়ে আলোচনা করতে যে বৈঠক ডাকা হয়েছিল সেখানে অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ ছাড়াও নীতিন গডকড়ি, ভেঙ্কাইয়া নাইডু, রবিশঙ্কর প্রসাদসহ বিজেপির প্রথম সারির সব ক্যাবিনেট মন্ত্রীই হাজির ছিলেন। ছিলেন দলের প্রবল শক্তিশালী প্রেসিডেন্ট অমিত শাহও। আরএসএসের দিক থেকে বৈঠকে প্রতিনিধিত্ব করেন সঙ্ঘের নেতা কৃষ্ণগোপাল ও রামলাল (যিনি এখন বিজেপিতে ডেপুটেশনে)।
বৈঠকে বিলটি আনার প্রয়োজন নিয়ে একমত হয়েছেন সকলেই। তবে পুনর্বাসনে কী কী বিধান রাখা হবে, হিন্দু শরণার্থীদের কীভাবে ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে তা নিয়ে এখনও বেশ কিছু আলোচনার অবকাশ আছে বলে জানা গেছে।
প্রস্তাবিত এই বিলের চেহারা কীরকম হতে পারে, সেটা নিয়ে বাংলা ট্রিবিউন যা জানতে পেরেছে তা এরকম:
(১) পাকিস্তান বা বাংলাদেশ থেকে আসা হিন্দুরাই এই পুনর্বাসনের জন্য আবেদন করতে পারবেন। আবেদনপত্রে তাদের জানাতে হবে, কেন তারা নিজের দেশ ছেড়ে চলে আসতে বাধ্য হয়েছেন।
(২) এই হিন্দুদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য ভারত তাদের জন্য নাগরিকত্ব আইনও কিছুটা শিথিল করবে। যেমন, কোনও হিন্দু শরণার্থীর সন্তান যদি বাবা-মার পাসপোর্টে ভারতে ঢুকে থাকে, তাহলে নিজের (বাংলাদেশি/পাকিস্তানি) পাসপোর্ট না থাকা সত্ত্বেও সে ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবে।
(৩) সবচেয়ে বড় কথা, এই পুনর্বাসনের দায়িত্ব ভাগ করে নিতে হবে দেশের প্রতিটি রাজ্যকেই। অর্থাৎ, বাংলাদেশ থেকে হিন্দুরা এলে শুধু সীমান্তবর্তী পশ্চিমবঙ্গ-আসাম-ত্রিপুরাতেই তাদের থাকতে হবে, কিংবা পকিস্তান থেকে হিন্দুরা সীমান্ত পেরোলে রাজস্থানের জয়সলমীর-যোধপুরেই তাতের ঠাঁই হবে ব্যাপারটা মোটেই সেরকম হবে না।
সোজা কথায়, বিলে এমন বিধান থাকবে যাতে মধ্যপ্রদেশ-কর্নাটক-তেলেঙ্গানা-অন্ধ্র বা হিমাচলের মতো সীমান্ত লাগোয়া নয়, এমন রাজ্যগুলোতেও হিন্দু শরণার্থীদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা যায়। ফলে দেশের সব রাজ্যই এই হিন্দুদের জমিজায়গা দেওয়ার বা রুটিরুজির ব্যবস্থা করার জন্য দায়বদ্ধ থাকবে। বোঝাটা শুধু সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলোর ওপর পড়বে না।
এই বিল যখনই পাস হোক, বাংলাদেশের হিন্দু জনসংখ্যার যে অংশটা সে দেশে নানাভাবে নির্যাতিত হচ্ছে বলে বিজেপি মনে করছে, তাদের জন্য ভারতে অন্তত একটা ভরসার জায়গা তৈরি করা যাবে বলেই দলের নেতৃত্বের ধারণা।
বিজেপির এক শীর্ষস্থানীয় নেতার কথায়, 'কাগজে-কলমে আমরা হিন্দুরাষ্ট্র না হতে পারি, সারা বিশ্বের হিন্দুদের জন্য শেষ রাষ্ট্র যে একটাই সেটা তো আমরা প্রমাণ করতে পারব!'
http://www.banglatribune.com/%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%82%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B6%E0%A6%BF-%E0%A6%B9%E0%A6%BF%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A7%81%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%A4
__._,_.___