চাইনা,এই এঁটো করুণা,ঘৃণ্য পুনর্বাসন,
চাই শুধু নাগরিকত্ব!
শুধু বিশুদ্ধ নাগরিকত্ব,না কম,না বেশি!
চাই,মনুষত্বের অভ্যুত্থান!
চাই সেই বিপ্লব,যেদিন এই পৃথীবীতে শযতানের রাজত্ব নিপাত যাবে,মানুষ বাস্তুহারা বেনাগরিক উদ্বাস্তু হবে না ছিন্নমূল!
জলজ্যান্ত মানুষের স্মৃতি পূর্বজন্ম হয়ে যায়,এমনই উদ্বাস্তু জীবন।স্মৃতি হারা মাতৃভাষা মাতৃদুগ্ধ বন্চিত আইলান বেঁচে থাকলেও কি আর- নিস্পাপ শিশুরা যেমন দরিয়ায় ভেসে যাওয়ার জন্যেই,মরিচঝাঁপি হয়ে অগ্নিদগ্ধ হওয়ার জন্য জন্মায়,সেই আইলানের মরে যাওয়াও কি!
উদ্বাস্তু জীবনে সতীর দেহ ছড়িয়ে ছিটিয়ে সারা পৃথীবী আজ উদ্বাস্তু উপনিবেশ!
ধর্মের নামে যারা দেশকে খন্ডিত করে,মানুষকে উদ্বাস্তু করে,মনুষত্ব ও সভ্যতাকে কেয়ামতে তব্দীল করে সেই নরপিশাচদের আমি সব চেয়ে ঘৃণা করি!
আমি ধর্ম রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে!
উদ্বাস্তু : অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত
পলাশ বিশ্বাস
প্রসঙ্গ1ঃ
সিরিয়ার তিন বছরের শিশু আয়লান কুর্দির কার্টুন ছেপে সমালোচনার মুখে ফ্রান্সের জনপ্রিয় ফ্রেঞ্চ ম্যাগাজিন শার্লি এবেদো। দ্য হাফিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে শার্লি এবদোর ওই কার্টুন প্রকাশ নিয়ে তুমুল সমালোচনা করা হয়েছে।
প্রসঙ্গ 2ঃ
হিন্দু রাষ্ট্র নয়, নেপাল ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রই থাকছে
পার্লামেন্টে ভোটাভুটির পর হিন্দু রাষ্ট্র নয়, নেপাল ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবেই থেকে যাচ্ছে। ৬০১ সদস্যের গণপরিষদের সদস্যদের মধ্যে দুই তৃতীয়াংশরও ভোট পড়ল ধর্মনিরেপক্ষ রাষ্ট্রের দিকে। সেই সঙ্গে প্রস্তাবিত নতুন সংবিধানে হিন্দু রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার প্রস্তাব বাতিল হয়ে গেল।
নেই আর ধারণ ক্ষমতা, শরণার্থীদের জন্য দরজা বন্ধ করল মিউনিখও
শরণার্থীদের জন্য দরজা বন্ধ করল মিউনিখও। বিপুল মানুষের ঢলকে জায়গা দিতে তাঁরা অক্ষম বলে জানিয়ে দিয়েছে জার্মান প্রশাসন। শরণার্থীদের জায়গা দেওয়া নিয়ে দ্বিধা এখনও কাটেনি ইউরোপীয় দেশগুলোর। তবে ভিটেমাটি হারানো মানুষগুলোর পাঁশে দাঁড়ানোর দাবি নিয়ে পথে নেমেছে সাধারণ মানুষ। শরণার্থী আশ্রয় দেওয়ার বিরোধিতা করেও চলছে পাল্টা মিছিল।
কে চায় পুনর্বাসন?
কেন চাই করুণা?
কেন চাই সহানুভূতি?
কাদের সমর্থন চাই?
ভিক্ষা কেন চাই?
আমাদের,আমরা যারা উদ্বাস্তু,আমরা যারা বাস্তুহারা,আমরা যারা জল জমি জঙ্গল আসমান কুদরত থেকে বেদখল,আমরা যারা রহমত নিয়ামত বরকত থেকে বেদখল,আমরা যারা দোয়া,ইবাদত,প্রর্থনা থেকে বেদখল,আমারা যারা ইতিহাস ভূগোল থেকে বেদখল,আমরা যারা মনুষত্ব থেকে বেদখল,আমরা যারা সভ্যতা থেকে বেদখল,বাবার হাত ছাড়িযে আমরা যারা সাত দরিয়া তেরো নদীতে বিশ্ব জুড়ে আইলানের ছবি শুধু,আমাদের নাগরিকত্বের কোনো অধিকার নেই!
চাইনা,এই এঁটো করুণা,ঘৃণ্য পুনর্বাসন,চাই শুধু নাগরিকত্ব!
শুধু বিশুদ্ধ নাগরিকত্ব,না কম,না বেশি!
চাই,মনুষত্বের অভ্যুত্থান!
চাই সেই বিপ্লব,যেদিন এই পৃথীবীতে শযতানের রাজত্ব নিপাত যাবে,মানুষ বাস্তুহারা বেনাগরিক উদ্বাস্তু হবে না ছিন্নমূল!
আমি জন্ম জন্মান্তরে বিশ্বাস করি না।
আমি কর্মফলে বিশ্বাস করি না।
আমি ধর্মে বিশ্বাস করি না।
তবু আমাদের,আমাদের বাপ দাদা ঠাকুরদার ভিটে,আমাদের মানে উদ্বাস্তুদের বাপ দাদা ঠাকুরদার ভিটে আগের জন্মের গপ্পো হয়ে গেছে,তাঁরা যখন বেঁচে ছিলেন না বাঁচার জীবন যন্ত্রণায়,তখনো সেই জন্ম ভিটেয় তাঁদের কোনো অধিকার ছিল না।ঠিক যেমন বাপ দাদা ঠাকুরদার ভিটেয় আমাদের কোনো অধিকার নেই।
জলজ্যান্ত মানুষের স্মৃতি পূর্বজন্ম হয়ে যায়,এমনই উদ্বাস্তু জীবন।স্মৃতি হারা মাতৃভাষা মাতৃদুগ্ধ বন্চিত আইলান বেঁচে থাকলেও কি আর- নিস্পাপ শিশুরা যেমন দরিয়ায় ভেসে যাওয়ার জন্যেই,মরিচঝাঁপি হয়ে অগ্নিদগ্ধ হওয়ার জন্য জন্মায়,সেই আইলানের মরে যাওয়াও কি!
তবু বাবার হাত ছাড়িয়েও,ভেসে গিয়েও আমরা সবসময় মরতে পারিনা!
কাঁটাতারে সীমান্তরেখায় মনুষত্য ও সভ্যতাকে যারা ফ্যালানি করে রেখেছে,তাঁদের ধর্ম,তাঁদের রাজনীতি,তাঁদের অর্থব্যবস্থা,তাঁদের প্রভুত্ব,তাঁদের একচিটিয়া আধিপাত্য আমােদর শিঙি মাগুর মাছের মত জিইয়ে রাখে!
উদ্বাস্তুদের থেকে অনেক ভালো হারানো পদ্মা নদীর ঈলিশ মাছ!তাঁদের জিইয়ে রেখে ভোটব্যান্কের রাজনীতি হয় না!
মরে গেলেও তাঁদের সীমান্ত পেরোতে পাসপোর্ট ভিসা লাগে না!
আমি আমার বাবাকে সেই মরা ঈলিশ মাছের মত ঝাঁপিয়ে ঝাঁপিয়ে সীমান্ত পেরিয়ে যেতে দেখেছি সেই বাপ ঠাকুর্দার ভিটে মাটি স্পর্শ করার স্মৃতি দংশনে,দহনে!
আমি আমার বাবাকে সেই মরা ঈলিশ মাছের মত ঝাঁপিয়ে ঝাঁপিয়ে সীমান্ত পেরিয়ে যেতে দেখেছি সেই বাপ ঠাকুর্দার ভিটে মাটি স্পর্শ করার স্মৃতি দংশনে,দহনে!জন্ম তেকে জন্মান্তরে!
জন্ম থেকে জন্মান্তরের ঔ কাঁটাতাঁর বিদ্ধ রক্তাক্ত জীবনের ফোঁটা ফোঁটা রক্ত আমার হৃদয়ে অসংখ্য নদী হয়ে বয়ে চলে লমহা লমহাঃঔ খাংটাতারের ধর্মে,রাজনীতিতে,ঔ বহিস্কার ও অস্পৃশ্যতার অর্থব্যবস্থায়,ঔ একচিটিয়া শাসনক্ষমতার নাগপাশে স্মৃতিহীন আমরা উদ্বাস্তুরা তবু কেন বেঁচে থাকি বেনাগরিক,অবান্ছিত,ঘৃণা ও করুণার পাত্র হয়ে,ইহাই আমার জীবনযন্ত্রণা আর সেই স্মৃতি দহনে,সেই সমাজ বাস্তবের নির্মম ঘাতে প্রতিঘাতে জমীন থেকে আসমানে আমি কোনো ঈশ্বরের দেখা পাইনা!আমি স্বর্গে ওঠার কোনো সিঁড়ি দেখতে পাই না!
আমি উত্সবের অঙ্গ হতে পারিনা কোনো দিন!
আমি মধুচক্রের দিগন্ত বলয়ে,ঈন্দ্রধনুষের সব রঙ্গের মাঝখানেও সেই ধূসর পান্ডুলিপি হয়ে আছি.যার সব লেখা আমি জন্মানোর আগেই মুছে গেছে!
আহা কি আনন্দ আমার আনন্দ হতে পারে না কোনোদিন!
আমি পূবের নই!
আমি পশ্চিমের নই!
উদ্বাস্তু জীবনে সতীর দেহ ছড়িয়ে ছিটিয়ে সারা পৃথীবী আজ উদ্বাস্তু উপনিবেশ!
সেই অসতী সতীর দেহখন্ড যেখানে পড়েছিল,সেি উত্তরের মানুষ আমি!
পূবে আমার শিকড় নেই!
পশ্চিমে আমার শিকড় নেই!
হিমালয়ে আমি আমার শিকড় গেঁথে রেখেচি!
আমি সবচেয়ে বেশি ঘৃণা করি সেই ধর্মের রাজনীতিক যার পরিণামে আমরা উদ্বাস্তুরা আগের জন্মের কথার মত বেমালুম ভুলে গিয়েছি সেই ছয় ঋতু.যা পৃথীবীতে আর কোথাও নেই!
আমি সবচেয়ে বেশি ঘৃণা করি সেই ক্ষমতা বদলে,সেই জনসংখ্যা স্থানান্তরণের রক্তপাতে যারা ক্ষমত দখল করেছিল রক্তাক্ত খন্ডিত দেশের কাঁটাতারের,তাঁদের যারা আজও একচিটিয়া ক্ষমতায়,একচিটিয়া আধিপাত্যে আমাদের কাঁটাতারে ঝুলিয়ে বেনাগরিক লাওয়ারিশ করে রেখেছে!
ধর্মে যারা বিশ্বাস করেন,আমি বেশ জানি ইহা তাহাদের বেঁচে থাকার শেষ সম্বল!ইবাদত,দোয়ার,পুজো পার্বনের অধিকারকে আমি মনুষত্বের অধিকার মনে করি!
ধর্মের নামে যারা দেশকে খন্ডিত করে,মানুষকে উদ্বাস্তু করে,মনুষত্ব ও সভ্যতাকে কেয়ামতে তব্দীল করে সেই নরপিশাচদের আমি সব চেয়ে ঘৃণা করি!
আমি ধর্ম রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে!
তথ্যসূত্রঃhttp://dw.com/p/1GAB2
উদ্বাস্তু : অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত
উদ্বাস্তু
চল, তাড়াতাড়ি কর,
আর দেরি নয়, বেরিয়ে পড় বেরিয়ে পড় এখুনি।
ভোররাতের স্বপ্নভরা আদুরে ঘুমটুকু নিয়ে
আর পাশে ফিরতে হবে না।
উঠে পড় গা ঝাড়া দিয়ে,
সময় নেই-
এমন সুযোগ আর আসবে না কোন দিন।
বাছবাছাই না ক'রে হাতের কাছে যা পাস
তাই দিয়ে পোঁটলাপুঁটলি বেঁধে নে হুট ক'রে।
বেড়িয়ে পড়,
দেরী করলেই পস্তাতে হবে
বেরিয়ে পড়-
ভূষণ পাল গোটা পরিবারটাকে ঝড়ের মতো নাড়া দিলে।
কত দূর দিগন্তের পথ-
এখান থেকে নৌকা ক'রে ষ্টিমার ঘাট
সেখান থেকে রেলষ্টেশন-
কী মজা, আজ প্রথম ট্রেনে চাপাবি,
ট্রেন ক'রে চেকপোষ্ট,
সেখান থেকে পায়ে হেঁটে-পায়ে হেঁটে-পায়ে হেঁটে-
ছোট ছোলেটা ঘুমমোছা চোখে জিঞ্জেস করলে,
সেখান থেকে কোথায় বাবা?
কোথায় আবার! আমাদের নিজের দেশে।
ছায়াঢাকা ডোবার ধারে হিজল গাছে
ঘুমভাঙা পাখিরা চেনা গলায় কিচিরমিচির করে উঠল।
জানালা দিয়ে বাইরে একবার তাকাল সেই ছোট ছেলে,
দেখলে তার কাটা ঘুড়িটা এখনো গাছের মগডালে
লটকে আছে,
হাওয়ায় ঠোক্কর খাচ্ছে তবুও কিছুতেই ছিঁড়ে পড়ছে না।
ঘাটের শান চ'টে গিয়ে যেখানে শ্যাওলা জমেছে
সেও করুণ চোখে চেয়ে জিজ্ঞেস করছে, কোথায় যাবে?
হিজল গাছের ফুল টুপ টুপ ক'রে এখনো পড়ছে জলের উপর,
বলছে, যাবে কোথায়?
তারপর একটু দূরেই মাঠে কালো মেঘের মত ধান হয়েছে-
লক্ষীবিলাস ধান-
সোনা রঙ ধরবে ব'লে। তারও এক প্রশ্ন- যাবে কোথায়?
আরো দূরে ছলছলাৎ পাগলী নদীর ঢেউ
তার উপর চলেছে ভেসে পালতোলা ডিঙি ময়ূরপঙ্খি
বলছে, আমাদের ফেলে কোথায় যাবে?
আমারা কি তোমার গত জন্মের বন্ধু?
এ জন্মের কেউ নই? স্বজন নই?
তাড়াতাড়ি কর- তাড়াতাড়ি কর-
ঝিকিমিকি রোদ উঠে পড়ল যে।
আঙিনায় গোবরছড়া দিতে হবে না,
লেপতে হবে না পৈঁঠে-পিঁড়ে,
গরু দুইতে হবে না, খেতে দিতে হবে না,
মাঠে গিয়ে বেঁধে রাখতে হবে না।
দরজা খুলে দাও, যেখানে খুশি চলে যা'ক আমাদের মত।
আমাদের মত! কিন্তু আমরা যাচ্ছি কোথায়?
তা জানিনা। যেখানে যাচ্ছি সেখানে আছে কী?
সব আছে। অনেক আছে, অঢেল আছে-
কত আশা কত বাসা কত হাসি কত গান
কত জন কত জায়গা কত জেল্লা কত জমক।
সেখানকার নদী কি এমনি মধুমতী?
মাটি কি এমনি মমতামাখানো?
ধান কি এমনি বৈকুন্ঠবিলাস?
সোনার মত ধান আর রুপোর মতো চাল?
বাতাস কি এমনি হিজলফুলের গন্ধভরা
বুনো-বুনো মৃদু মৃদু?
মানুষ কি সেখানে কম নিষ্ঠুর কম ফন্দিবাজ কম সুবিধাখোর?
তাড়াতাড়ি করো, তাড়াতাড়ি করো-
ভূষণ এবার স্ত্রী সুবালার উপর ধমকে উঠল:
কী কত বাছাবাছি বাঁধাবাঁধি করছ,
সব ফেলে ছড়িয়ে টুকরো-টুকরো ক'রে এপাশে-ওপাশে বিলিয়ে দিয়ে
জোর কদমে এগিয়ে চলো,
শেষ পর্যন্ত চলুক থামুক ট্রেনে গিয়ে সোয়ার হও,
সোয়ার হতে পারলেই নিশ্চিন্তি।
চারধারে কী দেখছিস? ছেলেকে ঠেলা দিল ভূষণ-
জলা-জংলার দেশ, দেখবার আছে কী!
একটা কানা পুকুর
একটা ছেঁচা বাঁশের ভাঙা ঘর
একটা একফসলী মাঠ
একটা ঘাসী নৌকো-
আসল জিনিস দেখবি তো চল ওপারে,
আমাদের নিজের দেশে, নতুন দেশে,
নতুন দেশের নতুন জিনিষ-মানুষ নয়, জিনিস-
সে জিনিসের নাম কী?
নতুন জিনিসের নতুন নাম-উদ্বাস্তু।
ওরা কারা চলেছে আমাদের আগে-আগে-ওরা কারা?
ওরাও উদ্বাস্তু।
কত ওরা জেল খেটেছে তকলি কেটেছে
হত্যে দিয়েছে সত্যের দুয়ারে,
কত ওরা মারের পাহাড় ডিঙিয়ে গিয়েছে
পেরিয়ে গিয়েছে কত কষ্টক্লেশের সমুদ্র,
তারপর পথে-পথে কত ওরা মিছিল করেছে
সকলের সমান হয়ে, কাঁধে কাঁধে মিলিয়ে,
পায়ে-পায়ে রক্ত ঝরিয়ে-
কিন্তু ক্লান্ত যাত্রার শেষ পরিচ্ছেদে এসে
ছেঁড়াখোঁড়া খুবলে-নেওয়া মানচিত্রে
যেন হঠাৎ দেখতে পেল আলো-ঝলমল ইন্দ্রপুরীর ইশারা,
ছুটল দিশেহারা হয়ে
এত দিনের পরিশ্রমের বেতন নিতে
মসনদে গদীয়ান হয়ে বসতে
ঠেস দিতে বিস্ফারিত উপশমের তাকিয়ায়।
পথের কুশকন্টককে যারা একদিন গ্রাহ্যের মধ্যেও আনেনি
আজ দেখছে সে-পথে লাল শালু পাতা হয়েছে কিনা,
ড্রয়িংরুমে পা রাখবার জন্যে আছে কিনা
বিঘৎ-পুরু ভেলভেটের কার্পেট।
ত্যাগব্রতের যাবজ্জীবন উদাহরণ হয়ে থাকবে ব'লে
যারা এত দিন ট্রেনের থার্ড ক্লাসে চড়েছে
সাধারণ মানুষের দুঃখদৈন্যের শরিক হয়ে
তারাই চলেছে এখন রকমারি তাকমার চোপদার সাজানো
দশঘোড়ার গাড়ি হাঁকিয়ে
পথচারীদের হটিয়ে দিয়ে, তফাৎ ক'রে দিয়ে
সমস্ত সামনেওয়ালাকে পিছনে ফেলে
পর-ঘর বিদেশী বানিয়ে।
হ্যাঁ, ওরাও উদ্বাস্তু।
কেউ উৎখাত ভিটেমাটি থেকে
কেউ উৎখাত আদর্শ থেকে।
আরো আগে, ইতিহাসেরও আগে, ওরা কারা?
ঐ ইন্দ্রপুরী-ইন্দ্রপ্রস্থ থেকেই বেরিয়ে যাচ্ছে
হিমালয়ের দিকে-
মহাভারতের মহাপ্রস্থানের পঞ্চনায়ক ও তাদের সঙ্গিনী
স্ব- স্বরূপ- অনুরূপা-
যুদ্ধ জয় ক'রেও যারা সিংহাসনে গিয়ে বসল না
কর্ম উদযাপন ক'রেও যারা লোলুপ হাতে
কর্মফল বন্টন করল না নিজেদের মধ্যে,
ফলত্যাগ করে কর্মের আদর্শকে রেখে গেল উঁচু ক'রে,
দেখিয়ে গেল প্রথমেই পতন হল দ্রৌপদীর-
পক্ষপাতিতার।
তারপর একে একে পড়ল আর সব অহঙ্কার
রূপের বিদ্যার বলের লোভের-আগ্রাসের-
আরো দেখাল। দেখাল-
শুধু যুধিষ্ঠিরই পৌছয়
যে হেতু সে ঘৃণ্য বলে পশু বলে
পথের সহচর কুকুরকেও ছাড়ে না।
শরণার্থী
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
২০০৬ সালে দক্ষিণ লেবাননে অবস্থানকারী লেবাননীয় শরণার্থী
শরণার্থী বা উদ্বাস্তু (ইংরেজি: Refugee) একজন ব্যক্তি যিনি নিজ ভূমিছেড়ে অথবা আশ্রয়েরসন্ধানে অন্য দেশেঅস্থায়ীভাবে অবস্থান করেন। জাতিগতসহিংসতা, ধর্মীয়উগ্রতা, জাতীয়তাবোধ,রাজনৈতিকআদর্শগত কারণে সমাজবদ্ধ জনগোষ্ঠীরনিরাপত্তাহীনতায়আক্রান্তই এর প্রধান কারণ। যিনি শরণার্থী বা উদ্বাস্তুরূপে স্থানান্তরিত হন, তিনি আশ্রয়প্রার্থী হিসেবে পরিচিত হন। আশ্রয়প্রার্থীব্যক্তির স্বপক্ষে তার দাবীগুলোকে রাষ্ট্র কর্তৃক স্বীকৃত হতে হবে।[১]
৩১ ডিসেম্বর, ২০০৫ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তান, ইরাক, সিয়েরালিওন, মায়ানমার, সোমালিয়া, দক্ষিণ সুদান এবং ফিলিস্তিন থেকে বিশ্বের প্রধান শরণার্থী উৎসস্থল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।[২]আইডিপিঅনুযায়ী বিশ্বের সবচেয়ে বেশী শরণার্থী ব্যক্তিএসেছে দক্ষিণ সুদানথেকে প্রায় ৫ মিলিয়ন। জনসংখ্যাঅনুপাতেসবচেয়ে বেশী আইডিপি রয়েছে আজারবাইজানে। সেখানে ২০০৬ সালের তথ্য মোতাবেক প্রায় আট লক্ষ শরণার্থী অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে।[৩]
পরিচ্ছেদসমূহ
[আড়ালে রাখো]
সংজ্ঞার্থ নিরূপণ[সম্পাদনা]
১৯৫১ সালে জাতিসংঘ কর্তৃক শরণার্থীদের মর্যাদাবিষয়ক সম্মেলনেঅনুচ্ছেদ ১এ-তে সংক্ষিপ্ত আকারে শরণার্থীর সংজ্ঞাতুলে ধরে। একজন ব্যক্তি যদি গভীরভাবে উপলদ্ধি করেন ও দেখতে পান যে, তিনি জাতিগতসহিংসতা, ধর্মীয়উন্মাদনা, জাতীয়তাবোধ, রাজনৈতিকআদর্শ, সমাজবদ্ধ জনগোষ্ঠীরসদস্য হওয়ায় ঐ দেশের নাগরিকেরঅধিকারথেকে দূরে সরানো হচ্ছে, ব্যাপক ভয়-ভীতিকর পরিবেশ বিদ্যমান, রাষ্ট্র কর্তৃক পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে; তখনই তিনি শরণার্থী হিসেবে বিবেচিত হন।[৪]১৯৬৭ সালের সম্মেলনের খসড়া দলিলেউদ্বাস্তুর সংজ্ঞাকে বিস্তৃত করা হয়। আফ্রিকাও ল্যাটিন আমেরিকায়অনুষ্ঠিত আঞ্চলিক সম্মেলনে যুদ্ধএবং অন্যান্য সহিংসতায়আক্রান্ত ব্যক্তি কর্তৃক নিজ দেশত্যাগকরাকেও অন্তর্ভূক্ত করা হয়।
এ সংজ্ঞায় শরণার্থীকে প্রায়শঃই ভাসমান ব্যক্তিরূপেঅন্তর্ভূক্ত করা হয়। সম্মেলনে গৃহীত সংজ্ঞার বাইরে থেকে যদি যুদ্ধের কারণে নির্যাতন-নিপীড়নে আক্রান্ত না হয়েও মাতৃভূমি পরিত্যাগ করেন অথবা, জোরপূর্বক নিজ ভূমি থেকে বিতাড়িত হন - তাহলে তারা শরণার্থী হিসেবে বিবেচিত হবেন।[৫]
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ[সম্পাদনা]
১৯৪২ সালে স্ট্যালিনগ্রাদের যুদ্ধেরুশ শরণার্থীদের অন্যত্র গমনের দৃশ্য।
সংঘর্ষএবং রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতারপ্রেক্ষাপটে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন সময়ে অগণিতসংখ্যক লোক শরণার্থী হয়েছিলেন। যুদ্ধ শেষে একমাত্র ইউরোপেই৪০ মিলিয়নেরওঅধিক লোক শরণার্থী ছিল।[৬]১৯৪৩ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মিত্রশক্তিজাতিসংঘ ত্রাণ ও পুণর্বাসন প্রশাসন (ইউএনআরআরএ) গঠন করে। যার প্রধান কাজ ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অক্ষশক্তিরনিয়ন্ত্রণাধীন দেশসহ ইউরোপ ও চীনথেকে আগত শরণার্থীদেরকে সহায়তা করা। তাদের নিয়ন্ত্রণে ও প্রত্যক্ষ সহায়তায় ৭ মিলিয়ন লোক নিজ বাসভূমিতে ফিরে যায়। কিন্তু উদ্বাস্তু এক মিলিয়ন লোক মাতৃভূমিতে ফিরে যেতে অস্বীকৃতি জানায়।
বিশ্বযুদ্ধের শেষ মাসে প্রায় পাঁচ মিলিয়ন জার্মান বেসামরিক নাগরিক পূর্ব প্রুশিয়া, পোমারানিয়াএবংসিলেসিয়ারাজ্য থেকে রেড আর্মিরপ্রচণ্ড আক্রমণের হাত থেকে রক্ষার লক্ষ্যে ম্যাকলেনবার্গ,ব্রান্ডেনবার্গএবং স্যাক্সনিতেউদ্বাস্তুহিসেবে আশ্রয়নেয়।
পটসড্যাম সম্মেলনেরসিদ্ধান্ত মিত্রশক্তি অনুমোদন না করায় যুগোস্লাভিয়াএবং রোমানিয়ায়অবস্থানরত হাজার হাজার জাতিগত জার্মানদেরকে সোভিয়েত ইউনিয়নেদাস শ্রমের জন্য ফেরত পাঠানো হয়। বিশ্বের ইতিহাসে এটিই ছিল সবচেয়ে বেশী শরণার্থী স্থানান্তর প্রক্রিয়া। ১৫ মিলিয়ন জার্মানদের সবাই এতে অন্তর্ভূক্ত ছিলেন। এছাড়াও, দুই মিলিয়নেরও অধিক জার্মান বিশ্বযুদ্ধকালীন সময়ে বিতাড়িত হয়ে প্রাণ হারান।[৭][৮][৯][১০][১১]
পূর্ব ইউরোপথেকে ব্যাপক সংখ্যায় দলে দলে লোক দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধেরপরবর্তী সময়ে অন্যত্র চলে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে শরণার্থীরূপে বিবেচিত হয়। প্রধানতঃ ইউরোপীয় শরণার্থী হিসেবে ইহুদীএবং স্লাভগণজোসেফ স্টালিন, নাজিএবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রতিক্রিয়ার প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রেআশ্রয়গ্রহণকে নিরুৎসাহিত করা হয়।[১২]
রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী[সম্পাদনা]
১৯৯১-৯২ সালে আড়াই লক্ষাধিক মুসলিম রোহিঙ্গাশরণার্থী বার্মার (বর্তমান: মায়ানমার) সামরিক জান্তার নির্যাতন-নিপীড়ন থেকে মুক্তি পেতে বাংলাদেশেআশ্রয় নেয়। তাদের অনেকেই বিশ বছর যাবৎ বাংলাদেশে অবস্থান করছে। বাংলাদেশ সরকার তাদেরকে দু'টি ভাগে ভাগ করেছে। শরণার্থী ক্যাম্পেঅবস্থানকারী স্বীকৃত রোহিঙ্গা এবং বাংলাদেশী সম্প্রদায়ের সাথে মিশে যাওয়া অস্বীকৃত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী রয়েছে। কক্সবাজারেরনয়াপাড়া এবং কুতুপালং এলাকার দু'টি ক্যাম্পে ত্রিশ হাজার রোহিঙ্গা বাস করছে।
আরাকান রাজ্য থেকে গত কয়েক মাসে রোহিঙ্গাদের উপর ব্যাপক নির্যাতনের ফলে তাদের বাংলাদেশে অবৈধ অনুপ্রবেশঅব্যাহত রয়েছে। কঠোর নিবন্ধিকরণ আইনে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব, চলাফেরায় বিধিনিষেধ আরোপ, ভূমিবাজেয়াপ্তকরণ, বার্মার বৌদ্ধদেরঅবস্থানের জন্য জোরপূর্বক উচ্ছেদকরণ, ২০০৬ সালের শেষ পর্যায়ে পশ্চিমাঞ্চলীয় আরাকানের ৯টি মসজিদেরআশেপাশে অবকাঠামোগতপ্রকল্পগ্রহণ এর জন্য দায়ী বলে ধারনা করা হয়।[১৩][১৪]
Refugee protection: A Guide to International Refugee Law UN HCR, Inter-Parliamentary Union, 2001
Alexander Betts Protection by Persuasion: International Cooperation in the Refugee Regime, Ithaca: Cornell University Press, 2009
Guy S. Goodwin-Gill and Jane McAdam The refugee in international law, Oxford: Oxford University Press, 2007
Matthew J. Gibney, "The Ethics and Politics of Asylum: Liberal Democracy and the Response to Refugees," Cambridge University Press 2004
Alexander Betts Forced Migration and Global Politics, London: Wiley-Blackwell, 2009
James Milner The Politics of Asylum in Africa, London: Palgrave MacMillan, 2009
James C. Hathaway The rights of refugees under international law, Cambridge: Cambridge University Press, 2005
Christina Boswell The ethics of refugee policy, Aldershot: Ashgate, 2005
Jane McAdam Complementary Protection, Oxford: Oxford University Press, 2007
Sarah Kenyon Lischer, Dangerous Sanctuaries, Ithaca: Cornell University Press, 2008
Susan F. Martin The uprooted - improving humanitarian responses to forced migration, Lanham, MD: Lexington Books, 2005
Stephen John Stedman & Fred Tanner (ed.) Refugee manipulation - war, politics, and the abuse of human suffering, Washington, D.C.: Brookings Institution Press, 2003
Arthur C. Helton The price of indifference - refugees and humanitarian action in the new century. Oxford: Oxford University Press, 2002
Gil Loescher, Alexander Betts and James Milner UNHCR: The Politics and Practice of Refugee Protection into the Twenty-First Century. London: Routledge, 2008
Frances Nicholson & Patrick Twomey (ed/) Refugee rights and realities - evolving international concepts and regimes, Cambridge: Cambridge University Press, 1999
James C. Hathaway (ed.) Reconceiving international refugee law, The Hague: Nijhoff, 1997
Gil Loescher Beyond charity - international cooperation and the Global Refugee Crisis, New York: Oxford University Press, 1993
Aristide R. Zolberg, Astri Suhrke & Sergio Aguayo Escape from violence - conflict and the refugee crisis in the developing world, New York: Oxford University Press, 1989
| উইকিমিডিয়া কমন্সে শরণার্থীসংক্রান্ত মিডিয়া রয়েছে। |
ইউরোপ
উদ্বাস্তু সংকট ইউরোপীয় আকার ধারণ করছে
ইউরোপীয় কমিশন ফ্রান্স এবং ব্রিটেনকে চ্যানেল টানেলে উদ্বাস্তু সংকটের মোকাবিলায় সাহায্যের প্রস্তাব দিয়েছে৷ ফ্রান্সকে বিশ মিলিয়ন ইউরো দেওয়া হচ্ছে৷ ব্রিটেনকে পেয়েছে ২৭ মিলিয়ন৷
পুলিশ জানাচ্ছে, মঙ্গলবার রাত্রেও ক্যালের কাছে চ্যানেল টানেল সাইটে ৫০০ উদ্বাস্তুকে ঘোরাফেরা করতে দেখা গেছে৷ ইতিপূর্বে প্রায় ৬০০ উদ্বাস্তু সাইটে ঢোকার চেষ্টা করে৷ তাদের মধ্যে চারশ'কে রোখা সম্ভব হয়৷ বাকি দুশো'র মধ্যে ১৮০ জনকে সাইটের ভিতরে ধরে বহিষ্কার করা হয়৷ ২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়৷
ইউরোপীয় কমিশনের অভিবাসন ও স্বরাষ্ট্র কমিশনার দিমিত্রিস আভ্রামোপুলোস জানিয়েছেন, ফ্রান্স ও ব্রিটেনের জন্য অভিবাসন সংক্রান্ত খাতে ২০১৪ থেকে ২০২০ সাল অবধি যে ২৬৬ মিলিয়ন, যথাক্রমে ৩৭০ মিলিয়ন ইউরো বরাদ্দ করা আছে, এই আর্থিক সাহায্য তা থেকেই আসছে৷
উদ্বাস্তুদের রাজনৈতিক আশ্রয়প্রাপ্তির আবেদন পরীক্ষা করার কাজে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সীমান্ত সুরক্ষা সংস্থা ফ্রন্টেক্স সাহায্য করতে পারে, বলে ইউরোপীয় কমিশন প্রস্তাব দিয়েছে৷ উদ্বাস্তুদের রেজিস্ট্রি করা, তারা যে সব দেশ থেকে আসছে এবং যে সব দেশ দিয়ে গেছে, সেই সব দেশের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে তাদের পাসপোর্ট অথবা বিদেশযাত্রার অন্য কাগজপত্রের ব্যবস্থা করা, উদ্বাস্তুদের ফেরত পাঠানো, এ সব ক্ষেত্রে কমিশন আর্থিকভাবেও সাহায্য করতে প্রস্তুত, বলে ঘোষণা করেছেন আভ্রামোপুলোস৷
কাঁটাতারের বেড়া
ফ্রান্স টানেলের কাছে পুলিশ বাড়িয়েছে
ইউরোপীয় ইউনিয়নের অপর প্রান্তে চলতি উদ্বাস্তু সংকটের ইউরোপীয় মাত্রা আরো স্পষ্ট৷ প্রতিদিন প্রায় দেড় হাজার প্রধানত আফগান বা সিরীয় উদ্বাস্তু জঙ্গলের পথে সার্বিয়া থেকে হাঙ্গেরিতে প্রবেশ করছে৷ পুলিশ তাদের নথিবদ্ধ করে আবার ছেড়ে দিচ্ছে, যাতে তারা কোনো অ্যাসাইলাম সেন্টারে গিয়ে নাম লেখাতে পারে৷ কিন্তু অধিকাংশ উদ্বাস্তুই একবার শেঙেন চুক্তি এলাকায় ঢুকে পড়ার পরে পশ্চিমের সমৃদ্ধ দেশগুলির দিকে যাত্রা করছে৷
উদ্বাস্তুদের কাছে হাঙ্গেরি একটা ট্রানজিট রুট ছাড়া কিছু নয়৷ তা সত্ত্বেও হাঙ্গেরি এ সপ্তাহে সার্বিয়ার সঙ্গে তার ১৭৫ কিলোমিটার সীমান্ত বরাবর কাঁটাতারের বেড়া তৈরির কাজ শুরু করেছে৷ এছাড়া রাজনৈতিক আশ্রয়প্রাপ্তির নিয়মকানুন আরো কড়া করা হয়েছে, যাতে শীঘ্র বহিষ্কার করা সম্ভব হয়৷ অপরদিকে হাঙ্গেরি অপরাপর ইইউ দেশ থেকে উদ্বাস্তুদের ফেরৎ নিতেও অস্বীকার করছে, যদিও তা ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিয়মাবলীর অঙ্গ৷
যদি হয় সুজন, তেঁতুলপাতায় ন'জন
1234567
জার্মানিতে ইতিমধ্যেই আগত উদ্বাস্তুদের জন্য আবাসের স্থান একটা সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে, বিশেষ করে পৌর প্রশাসনগুলির জন্য৷ কাজেই যে সব উদ্বাস্তুর রাজনৈতিক আশ্রয়প্রাপ্তির সম্ভাবনা কম – যেমন বলকান দেশগুলি থেকে আগত মানুষজন – তাদের আলাদা করে রেখে দু'সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্ট অ্যাসাইলাম অ্যাপ্লিকেশনগুলির নিষ্পত্তি করার প্রস্তাব উঠেছে, যেমন স্যাক্সনি ও বাভারিয়া রাজ্যে৷
বিভিন্ন ছোট-বড় জার্মান শহরের পৌর কর্তৃপক্ষ উদ্বাস্তু ও রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী সংক্রান্ত বিভিন্ন শিবির তথা কার্যালয়ের জন্য কর্মী নিয়োগ করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন৷ প্রশাসন থেকে শুরু করে সমাজকর্মী, এমনকি চিকিৎসক, স্বল্প সময়ের মধ্যে যোগ্যতাসম্পন্ন কর্মী খুঁজে পাওয়া অথবা তাদের নিয়োগ দেওয়া খুব সহজ কাজ নয়৷ সেই সঙ্গে থাকছে অর্থসংস্থানের প্রশ্ন৷
অপরদিকে ফেডারাল গুপ্তচর বিভাগ উদ্বাস্তু শিবির ও আবাসনগুলির উপর আক্রমণের ঘটনা ক্রমাগত বেড়ে চলায় চিন্তিত৷ ২০১৪ সালে এই ধরনের আগুন লাগানো থেকে শুরু করে ভাঙচুর বা পাথর ছোঁড়ার ঘটনা ২০১৩'র তুলনায় তিনগুণ বাড়ে৷ ২০১৫ সালে নাকি তাও ছাড়িয়ে যাবে৷
এসি/এসবি (রয়টার্স, এএফপি)
নির্বাচিত প্রতিবেদন
রাজনৈতিক শরণার্থী, নাকি অর্থনৈতিক অভিবাসী? ইউরোপে এই মুহূর্তে আশ্রয়প্রার্থীদের যে ঢল নেমেছে, তা নিয়ে উত্তাল সোশ্যাল মিডিয়াও৷ তর্ক-বিতর্কের মধ্যে নানা জটিল বিষয় উঠে আসছে৷ (29.07.2015)
জার্মানিতে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে৷ কিন্তু এ দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় পাবার বা প্রদানের প্রক্রিয়াটি কী? আসার পর, কী ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায় জার্মানিতে? (28.06.2015)
ইউরোপীয় ইউনিয়ন উত্তর আফ্রিকার মানুষ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নিতে চায়৷ শেযমেষ তাদের উদ্বাস্তুদের ওপর গুলি চালাতে হবে, বলে ক্রিস্টফ হাসেলবাখ-এর আশঙ্কা৷ (28.06.2015)